গুচ্ছ ভর্তিতে জবি থাকবে না কেন, ব্যাখ্যা দিতে হবে: ইউজিসি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৩৬ পিএম, ১৫ মার্চ ২০২৩

গুচ্ছ ভর্তি থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) বের হয়ে গেলে তাদের জবাবদিহি করতে হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমগীর।

তিনি বলেন, গুচ্ছ ভর্তি শুরু হওয়ার পর থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবি) নেতৃত্ব দিয়েছে। এখন যদি তারা বের হয়ে যেতে চান, তার সুষ্পষ্ট কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে।

বুধবার (১৫ মার্চ) আসন্ন ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের সমন্বিত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় না থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। এ সিদ্ধান্তের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় অধ্যাপক আলমগীর জাগো নিউজকে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে জোর করে গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ায় আনা হয়নি। তারা নিজ উদ্যোগে এসেছেন। গত দুটি ভর্তি পরীক্ষায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করেছে। এখন নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়ে গুচ্ছ ভর্তি থেকে বের হয়ে যেতে চান। কেন যেতে চান, তার সুষ্পষ্ট কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে।

ইউজিসির এ সদস্য বলেন, গত মাসেও শিক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বে এ সংক্রান্ত বিষয়ে উপাচার্যদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। সেখানে বের হয়ে যাওয়ার কোনো ইঙ্গিত দেওয়া হয়নি। তবে জগন্নাথ বের হয়ে গেলেও সার্বিকভাবে কোনো প্রভাব পড়বে না। তারপরও তারা এ পদ্ধতির লিডিং পজিশনে (নেতৃত্বে) ছিল। এতে ছোট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সন্দেহ থাকবে।

আরও পড়ুন: গুচ্ছ ভর্তিতে জবি থাকবে কি না, সিদ্ধান্ত সিন্ডিকেটে

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে শিক্ষার্থীর আর্থিক সাশ্রয়, ভর্তি পরীক্ষার ভোগান্তি কমানোসহ প্রক্রিয়াকে সহজ করার জন্য রাষ্ট্রপতির নির্দেশনা ছিল। এরপর ২০২০ শিক্ষাবর্ষ থেকে ২০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা গুচ্ছ পদ্ধতিতে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের জন্য জিএসটি সিস্টেমে ভর্তি পরীক্ষা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেন। এ পদ্ধতিতে দুটি ভর্তি প্রক্রিয়ায় নানা জটিলতা তৈরি হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ভর্তিসংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ার গ্যাঁড়াকলে আগের শিক্ষাবর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়া পুরোপুরি শেষ করা যায়নি। মাইগ্রেশন (বিভাগ পরিবর্তন) চালু থাকায় এখনও আসন পূরণ হয়নি। বারবার বিজ্ঞপ্তি দিয়েও শিক্ষার্থী পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েও সব আসন পূরণ করা যায়নি। শূন্য আসন পূরণ করতে ন্যূনতম নম্বর পেয়ে কোনোরকমে পাস করা শিক্ষার্থীদেরও ডাকা হচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার দাবি তোলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। সমিতির নেতারা আগের প্রক্রিয়ায় নিজেদের মতো ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর দাবি তোলেন। এরই প্রেক্ষিতে বুধবার অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে গুচ্ছ থেকে বের হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয় সবোচ্চ পর্ষদ সিন্ডিকেট সভায় পাস না হওয়া পযন্ত চূড়ান্ত বলা যাবে না।

এর আগে বুধবার (১৫ মার্চ) গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে একমত হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যরা। আগামীতে তারা এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে আর শিক্ষার্থী ভর্তি না করানোর পক্ষে মত দেন। অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত হয়।

অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল সূত্র জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের মোট সদস্য ৬৮ জন। বুধবারের সভায় উপস্থিত ছিলেন ৫০ জন। তাদের মধ্যে ৩৫ জন গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতিতে থাকার বিপক্ষে মতামত তুলে ধরেন। ১৩ জন সদস্য এ নিয়ে কোনো মতামত দেননি। বাকি দুজন গুচ্ছ পদ্ধতিতে থাকার পক্ষে ছিলেন।

ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয় অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল। কাউন্সিলে গৃহীত এ সিদ্ধান্ত পরবর্তী সিন্ডিকেট সভার আলোচ্যসূচিতে রাখা হবে। সেখানে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।

জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আইনুল ইসলাম বলেন, ‘আজকের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আর গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতিতে থাকছে না। উপাচার্য বলেছেন, বিষয়টি সিন্ডিকেট সভায় উত্থাপন করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

এমএইচএম/এএএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।