‘ছাত্রলীগ নিয়ে কোনো নিউজ হবে না’, বলেই সাংবাদিককে মারধর

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৩:০৩ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

‘আর নিউজ করিস, তারপর দেখব তোরে কে বাঁচায়’ বলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক সাংবাদিককে মারধর করেছেন শাখা ছাত্রলীগের চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার (সিএফসি) গ্রুপের কর্মীরা।

রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ক্যাম্পাসের দ্বিতীয় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সামনে তাকে মারধর করা হয়।

ভুক্তভোগী মোশাররফ শাহ প্রথম আলোর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ও চবি সাংবাদিক সমিতির সদস্য। আহত অবস্থায় মোশাররফকে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে বুক ও হাতে আঘাত থাকার কারণে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মোশাররফ শাহ জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি ছাত্রলীগের সংঘর্ষ, ভাঙচুর, প্রধান প্রকৌশলীকে মারধরের ঘটনায় বক্তব্য নেওয়ার জন্য উপাচার্য কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন। এসময় দ্বিতীয় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সামনে ১৫ থেকে ২০ জন ছাত্রলীগ কর্মী তাকে প্রথমে পেছন থেকে ধাক্কা দেন। এরপর ছাত্রলীগ নিয়ে কেন প্রতিবেদন করেছেন, তা জানতে চান। এসময় কয়েকজন তার কপালে, মুখে কিল-ঘুসি দেন। তার বুকে লাথি দেন। হাতেও আঘাত করেন।

মারধরের সময় নেতাকর্মীরা তাকে পরবর্তীতে আর ছাত্রলীগ নিয়ে প্রতিবেদন না করার হুমকি দেন। তারা বলেন, ‘আর নিউজ করিস, তারপর দেখব তোরে কে বাঁচাতে আসে। ছাত্রলীগ নিয়ে কোনো নিউজ হবে না।’

বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. আবু তৈয়ব বলেন, মোশাররফের কপালে চার সেলাই দিতে হয়েছে। তার হাতেও আঘাত আছে। এক্সরে করাতে হবে। এছাড়া উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেকে পাঠানো হয়েছে।

‘ছাত্রলীগ নিয়ে কোনো নিউজ হবে না’, বলেই সাংবাদিককে মারধর

সিএফসি গ্রুপের নেতৃত্বে আছেন চবি ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল। তিনি বলেন, এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি খোঁজ নিচ্ছি।

এদিকে, ঘটনার নিন্দা জানিয়ে চবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মাহবুব এ রহমান বলেন, এর আগেও বারবার সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু প্রশাসন কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়নি। যার ফলে আবারও এমন ঘটনা ঘটানোর দুঃসাহস দেখিয়েছে ছাত্রলীগ। এ ঘটনায় জড়িতদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার ও দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

এর আগে গত ১৯ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশন চত্বরের একটি চায়ের দোকানের চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে চবি সাংবাদিক সমিতির সদস্য দোস্ত মোহাম্মদের মুখে গরম চা ঢেলে দেন শাখা ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক খালেদ মাসুদ। এসময় সাংবাদিক পরিচয় দিলে উপর্যপুরি লাথি মারতে থাকেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত অন্য ছাত্রলীগ কর্মীরা। এ ঘটনায় দুইজনকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করলেও ক্যাম্পাস দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা। এসব ঘটনার জন্য প্রশাসনের কঠোর বিচারহীনতা সংস্কৃতিকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আহমেদ জুনাইদ/এমআরআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।