গাইবান্ধা
ব্রিজের সংযোগ সড়কের বেহাল দশা, ভোগান্তিতে ২০ গ্রামের মানুষ
গাইবান্ধার সাঘাটার জুমারবাড়ি ইউনিয়নের পূর্ব আমদিরপাড়ার ওপর নির্মিত ব্রিজের সংযোগ সড়কের দুই অংশ ভেঙে গেছে। বিকল্প রাস্তা না থাকায় অন্তত বিশ গ্রামের মানুষ ঝুঁকি নিয়ে ব্রিজটি পারাপার হচ্ছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ১৯৯৮ সালে এলজিইডির উদ্যোগে ১৯ মিটার দৈর্ঘ্যের ব্রিজটি নির্মিত হয়। কিন্তু নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কারণে মাত্র পাঁচ বছরে ব্রিজটি নড়বড়ে হয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় এবং গত বছরের বন্যায় প্রবল স্রোতে ব্রিজটি ধসে পড়ে। দুই পাশের মাটি ভেঙে গিয়ে গভীর খাদে পরিণত হয়েছে। বিকল্প কোনো রাস্তা না থাকায় স্থানীয়রা মুষ্টির চাল ও চাঁদা তুলে বাঁশ-কাঠের ব্রিজ নির্মাণ করেছেন। তবে ব্রিজ দিয়ে কেবল হেঁটে চলাচল সম্ভব। বাইক, সাইকেল কিংবা অটোরিকশা হালকা ভারি যানবাহন পারাপারের সময় যাত্রীদের নামিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ১৯ মিটার দৈর্ঘ্যের ব্রিজটির দুই পাশে ধসে গেছে। ধসে যাওয়া ব্রিজটি ওপর দিয়ে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে পাটাতন তৈরি করে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ পাটাতনের ওপর দিয়ে চলছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ভ্যান ও হালকা ভারী যানবাহন। তবে বেশিরভাগ লোকজন হেঁটে পার হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, এ ব্রিজ দিয়ে ২০ গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে। প্রতিদিন শিশুরা ভয় পায়। রোগী নিয়ে যেতে কষ্ট হয়। কখন যে কাঠের ব্রিজ ভেঙে পড়ে প্রাণহানি ঘটবে সেটি কেউ জানে না।
রহিম উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, ১৯৯৮ সালে নিম্নমানের কাজের কারণে ব্রিজটি টেকেনি। সময়মতো সংস্কার হলে আজ এ অবস্থা হতো না। আমরা দ্রুত নতুন ব্রিজ নির্মাণ চাই।
ব্যবসায়ী আসমত আলী বলেন, গত বছরের বন্যায় ভেঙে পড়া একটি ব্রিজ এখন হলদিয়া ও জুমারবাড়ি ইউনিয়নের মানুষের জন্য মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। এলজিইডির অর্থায়নে নির্মিত এ ব্রিজটির অবস্থা এতটাই করুণ যে স্থানীয়রা চাল ও চাঁদা তুলে তৈরি করেছেন একটি অস্থায়ী বাঁশ-কাঠের ব্রিজ। প্রতিদিন শত শত মানুষ এ কাঠের ব্রিজ দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছেন।
আফসার মিয়া বলেন, ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় পণ্য পরিবহনে খরচ বেড়ে গেছে। গাড়ি চলাচল করতে না পারায় ব্যবসার ক্ষতিও হচ্ছে। ব্রিজটি সাঘাটা উপজেলার শহরের হলদিয়া ও জুমারবাড়ি ইউনিয়নের অন্তত ২০টি গ্রামের মানুষের একমাত্র যোগাযোগের পথ। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, কৃষক, রোগীসহ প্রতিদিন হাজারো মানুষ এ সড়ক ব্যবহার করেন।
এ বিষয়ে সাঘাটা উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) নয়ন রায় বলেন, বর্তমানে নতুন ব্রিজ নির্মাণের বাজেট নেই। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বাজেট পাওয়া গেলে দ্রুত কাজ শুরু আশ্বাস দেন তিনি।
আনোয়ার আল শামীম/আরএইচ/জেআইএম