ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক

পূজার ছুটিতে মিরসরাই-সীতাকুণ্ডে ১৫ স্পটে যানজটের শঙ্কা

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি মিরসরাই (চট্টগ্রাম)
প্রকাশিত: ১১:২৫ এএম, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজটের চিত্র /ফাইল ছবি

দুর্গাপূজার লম্বা ছুটিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাই-সীতাকুণ্ড এলাকার ৬০ কিলোমিটারে ১৫টি স্পটে যানজটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। সড়কের এই অংশে খুব বেশি খানাখন্দ না থাকলেও বিভিন্ন কারণে প্রতিনিয়ত যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। ছুটিতে সড়কে গাড়ির চাপ বেড়ে যাওয়ায় যানজটে মানুষ আটকে ভোগান্তির শঙ্কা রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহাসড়কের মিরসরাইয়ের ধুমঘাট থেকে সীতাকুণ্ডের সিটি গেইট পর্যন্ত ৬০ কিলোমিটারের মধ্যে সীতাকুণ্ডে প্রতিদিনই যানজট লেগে থাকে। কনটেইনার টার্মিনাল ও ডিপোগুলোর কারণে, যানবাহনের অস্বাভাবিক পার্কিং, রাস্তা সংস্কার বা মেরামতের কাজ, বাজার বসা, এবং মাঝে মাঝে পণ্যবাহী ট্রাক উল্টে যাওয়া বা অন্য কোনো দুর্ঘটনার ঘটনা, অবৈধভাবে যানবাহন পার্কিং করাও যানজটের জন্য দায়ী।

সড়কের মিরসরাই উপজেলার বারইয়ারহাট দক্ষিণ ইউটার্ন, মিরসরাই পৌর সদর, মিঠাছড়া বাজার, নিজামপুর বাজার, বড়তাকিয়া বাজার, সীতাকুণ্ড উপজেলার বড়দারোগাহাট স্কেল, টোবাকো গেইট, বিএমএ গেইট, ভাটিয়ারি, বিএম কনটেইনার ডিপো, কেডিএস লজিস্টিক, বাঁশবাড়িয়া, শুকলালহাট, বাড়বকুন্ড, সীতাকুণ্ড সদরে প্রায় সময় যানজট দেখা দেয়।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক: মিরসরাই-সীতাকুণ্ডে ১৫ স্পটে যানজটের শঙ্কা

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সীতাকুণ্ডে অনেক কনটেইনার ডিপো রয়েছে। এসব ডিপোর কারণে মহাসড়কের পাশে বা ওপর অবৈধভাবে যানবাহন পার্কিং করা হয়, যা যানজটের একটি বড় কারণ। আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সড়ক দখল করে কেডিএস লজিস্টিকের বিভিন্ন গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে। যার কারণে গাড়ি ঠিকমতো চলাচল করতে না পেরে যানজট দেখা দিয়েছে। একই অবস্থা ফোজদারহাট পোর্ট কানেকটিং রোড় এলাকায়। বন্দর থেকে বিভিন্ন গাড়ি বের হওয়ার কারণে যানজট তৈরি হচ্ছে। ট্রাফিক পুলিশ দায়িত্বে পালন করলেও যানজট নিরসন করতে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। এছাড়া বড়দারোগাহাট এলাকায় গাড়ির ওজন নিয়ন্ত্রণ করার কারণে যানজট দেখা দেয়। এছাড়া সীতাকুণ্ড সদর, বাড়বকুণ্ড, বাঁশবাড়িয়া, শুকলালহাট বাজারের কারণে যানজট সৃষ্টি হয়।

আরও পড়ুন:
১৪৪ ধারা-অবরোধে স্থবির খাগড়াছড়ি, থমথমে গুইমারা
ট্রলিও দিলো না হাসপাতাল, চাদরে জড়িয়ে মরদেহ নিলেন স্বজনরা

চয়েস বাসের চালক জসীম উদ্দিন বলেন, অবৈধ স্ট্যান্ড, ফুটপাত দখল করে দোকান নির্মাণ ও সীতাকুণ্ডে রাস্তায় বিভিন্ন ডিপোর গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখার কারণে যানজটের কবলে পড়েন তারা। দুর্গাপূজার ছুটিতে গাড়ির চাপ আরও বাড়লে যানজট পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে।

এই সড়ক দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করা মো. ওমর শরীফ বলেন, বিগত কয়েক বছর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চারলেন প্রকল্পের সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। সড়কে কোথাও না কোথাও যানজট লেগেই আছে। বিশেষ করে সীতাকুণ্ড উপজেলার বিভিন্ন অংশে যানজট যেন নিত্য ব্যাপার।

আরেক যাত্রী আকতার হোসেন বলেন, রাতের বেলায় যানজটে আটকে পড়া অনেক যাত্রী ছিনতাই-ডাকাতির কবলে পড়েন। আমি ভয়ে এই সড়ক দিয়ে রাতে চলাচল বন্ধ করে দিয়েছি।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক: মিরসরাই-সীতাকুণ্ডে ১৫ স্পটে যানজটের শঙ্কা

জানা গেছে, এ সড়কে দুর্ঘটনায় শিকার গাড়ি সরাতে দেরি হলে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকে যানজট। এতে নারী-শিশুসহ বিভিন্ন পরিবহনের যাত্রী ও রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স জটে আটকা পড়ে ভোগান্তির শিকার হন। বিভিন্ন স্থানে ডাকাতের কবলে পড়ে সর্বস্ব খোয়াচ্ছেন যাত্রীরা।

কুমিরা হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ জাকির রাব্বানি জাগো নিউজকে বলেন, আমার এরিয়া বড়তাকিয়া থেকে শুকলালহাট পর্যন্ত। এই এলাকার মধ্যে পূজার ছুটিতে গাড়ির চাপ বাড়ার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সড়কের কয়েকটি স্পটে যানজট এড়াতে পুলিশ কাজ করবে। বিশেষ করে সীতাকুণ্ড সদর ও বড়দারোগাহাট স্কেলে আমাদের টিম সার্বক্ষণিক ডিউটি করবে।

চট্টগ্রাম জেলা ট্রাফিক পুলিশের টিআই রফিক আহমেদ মজুমদার জাগো নিউজকে বলেন, দুর্গাপূজার ছুটিতে মহাসড়কে যানজট নিরসনে মিরসরাই, জোরারগঞ্জ ও সীতাকুণ্ড উপজেলার বিভিন্ন স্পটে স্পেশাল টিম কাজ করবে। আশা করছি যানজট সৃষ্টি হবে না।

তিনি আরও বলেন, সীতাকুণ্ড এলাকার যেসব স্পটে যানজট দেখা দেয় তা পোর্ট কানেকটিং রোড় দিয়ে বন্দর থেকে গাড়ি বের হওয়ার কারণে এবং বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কারণে। তাও বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না বলে দাবি করেন তিনি।

এম মাঈন উদ্দিন/এমএন/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।