বৃষ্টি হলেই ঘর ভেঙে পড়ার আতঙ্কে থাকেন ফিরোজা বেগম

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: ১০:৪০ এএম, ০৪ অক্টোবর ২০২৫

জরাজীর্ণ মা‌টির ঘ‌রে কষ্টে দিন কাটে বিধবা ফি‌রোজা বেগ‌মের (৭৩)। টিউবওয়েল-টয়লেট নেই, বয়স্ক ভাতাও পান না। নেই খাবা‌রের নিশ্চয়তাও। জীব‌নের স‌ঙ্গে লড়াই করা বৃদ্ধা ফি‌রোজা বেগ‌মের বেঁচে থাকাই যে‌ন বোঝা। চলৎশ‌ক্তিহীন ফি‌রোজা বেগ‌ম টাঙ্গাই‌লের সখীপু‌র উপ‌জেলার কচুয়া পূর্বপাড়া গ্রা‌মের মৃত আবু তা‌লেব মিয়ার স্ত্রী।

ফিরোজা বেগমের জীবন যেন এক অবিরাম কষ্টের দুঃখগাথা। জরাজীর্ণ মাটির ভাঙা ঘরে কাটছে তার দুঃসহ জীবন। নেই টিউবওয়েল, নেই টয়লেট। বয়স্ক ভাতাও পান না তিনি। এমনকি তিন বেলা খাবারেরও নিশ্চয়তা নেই তার জীবনে।

ফিরোজা বেগমের ঘরটির অবস্থা একেবারেই নাজুক। চারপাশের মাটির দেওয়াল হেলে পড়েছে, যেকোনো মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে। চালে মরিচা ধরা পুরোনো টিন, যেখানে অসংখ্য ছিদ্র ও ফাটল দিয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে। রাতে একটি পুরোনো জলচৌকিতেই ঘুমাতে হয় তাকে। ঝড়-বৃষ্টি হলে ওই ঘরে থাকা আরও কষ্টকর হয়ে ওঠে।

বৃষ্টি হলেই ঘর ভেঙে পড়ার আতঙ্কে থাকেন ফিরোজা বেগম

বৃদ্ধা ফিরোজা বেগম বলেন, কোনো দয়ালু মানুষ যদি আমারে একটা ঘর আর একটা টিউবওয়েল বসাইয়া দিত, আমি সারাজীবন নামাজ পড়ে তার জন্য দোয়া করতাম। রাতে যদি একটু শান্তিতে নামাজ পড়তে আর ঘুমাতে পারতাম, তাহলেই সব দুঃখ ভুলে যাইতাম।

তি‌নি আরও ব‌লেন, ছা‌নি পড়া চোখ দু‌টো অ‌ন‌্যদের সহ‌যো‌গিতায় অপা‌রেশন করা হ‌য়ে‌ছে। এখন বেশ ভা‌লো দে‌খি। চো‌খে চশমা দি‌য়ে কোরআন পড়‌তে পা‌রি। কিন্তু প্রতিরা‌তেই আত‌ঙ্কে থা‌কি এই বু‌ঝি ঝড়-ব‌ৃষ্টি এলো।

আরও পড়ুন-
হার্টে ছিদ্র নিয়ে ধুঁকছে শিশু আব্দুল্লাহ
অভাবেই জীবন কাটলো খুকুমনির, এখন বন্ধ চিকিৎসাও
সুখ থাকলেও অর্থাভাবে বিপর্যস্ত খর্বাকৃতির ফরহাদ-আরিফার সংসার

ফিরোজা বেগমের স্বামী আবু তালেব মিয়া মারা গেছেন ২০ বছর আগে। তিন ছেলেই সংসার নিয়ে টানাপোড়নে আছেন। তাই মায়ের জন্য ঘর নির্মাণ বা সহযোগিতা করার সামর্থ্য নেই তাদের। জমিজমা না থাকায় অন্যের শৌচাগারে যেতে হয় তাকে। এরইম‌ধ্যে শরী‌রে বাসা বেঁধে‌ছে নানা রোগ।

বৃষ্টি হলেই ঘর ভেঙে পড়ার আতঙ্কে থাকেন ফিরোজা বেগম

স্থানীয়রা বলছেন, অবিলম্বে সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে ফিরোজা বেগমের একটি ঘর, টিউবওয়েল ও বয়স্ক ভাতার ব্যবস্থা করা হোক। না হলে এই অসহায় বৃদ্ধার মানবেতর জীবনযাত্রা চলতেই থাকবে।

প্রতিবেশী মিনা বেগম ও না‌র্গিস আক্তার বলেন, ফিরোজা বেগমের দুর্দশা দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। কোনো সরকারি সহায়তা তিনি এখনো পাননি।

এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি এরইমধ্যে নজরে এসেছে। শিগগিরই তার জন্য সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

আব্দুল্লাহ আল নোমান/এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।