শ্রীপুরে দুুই নারীসহ পাঁচজনের করোনা পজিটিভ
গাজীপুরের শ্রীপুরের দুুই নারীসহ পাঁচজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে কাওরাইদ এলাকায় দুুই নারীসহ তিনজন, তেলিহাটি ইউনিয়নের আবদার গ্রামে একজন ও শ্রীপুর পৌর এলাকার উজিলাব গ্রামের একজন।
আক্রান্ত ৪ জনের বয়স ২৫ থেকে ৪০ বছর। আর একজনের বয়স ৬০ বছর। এ প্রথম এ উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া গেল। এতে উপজেলাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক এএসএম ফাতেহ্ আকরাম জানান, কাওরাইদের জাহাঙ্গীরপুর গ্রামে ঠান্ডা ও জ্বরের উপসর্গ থাকায় গত শনিবার (১১ এপ্রিল) উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নে করোনা আক্রান্ত সন্দেহে একই পরিবারের তিনজনের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকার আইইডিসিআরে পাঠানো হয়। ওই তিনজনের দেহে করোনা পজিটিভ বলে সোমবার আইইডিসিআর থেকে জানায়।
স্থানীয়রা জানান, ওই পরিবারের যে পুরুষ ব্যক্তিটি করোনায় আক্রান্ত বলে জানা গেছে তিনি পার্শ্ববর্তী ভালুকা উপজেলার একটি চায়না ব্যাটারি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন। তার স্ত্রী ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
এদিকে, উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের আবদার গ্রামের প্রভিটা ফিড মিলের ইনচার্জের দেহে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।
তার সহকর্মীরা জানান, ওই ব্যক্তির বাড়ি সিরাজগঞ্জে। ২০/২২ দিন আগে সিরাজগঞ্জ থেকে তিনি শ্রীপুরে আসেন। এর কিছুদিন পরই সর্দি, ঠান্ডা, গলা চুলকানি শুরু হলে তিনি স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীর মাধ্যমে শনিবার (১১ এপ্রিল) শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে করোনার নমুনা সংগ্রহ করান। তার দেহে করোনা পজিটিভ বলে সোমবার আইইডিসিআর থেকে জানান।
অপরদিকে, গত পরশু দিন (শনিবার) শ্রীপুর পৌর এলাকার উজিলাব গ্রামে এক ব্যক্তি (৬০) কিডনির সমস্যা নিয়ে মারা যান। মৃত্যুর সময় তার ঠান্ডা, সর্দি ও জ্বর ছিল। পরে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত ডাক্তার তার নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকার আইইডিসিআরে পাঠান। সোমবার আইইডিসিআর থেকে পাঠানো ফলাফলে তার দেহে করোনার উপস্থিতি পাওয়া যায়।
আবাসিক চিকিৎসক এএসএম ফাতেহ্ আকরাম আরও জানান, তিনজনের পরিবারের পুরুষ সদস্য বাড়ি থেকে পালিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তথ্য গোপন করে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হন। পরে ওই ব্যক্তির দেহে করোনা পজিটিভ আসায় তার বাড়িতে খোঁজ করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে সে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানা যায়। ওই ব্যক্তির করোনা পজিটিভের তথ্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে জানানো হয়েছে।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার প্রণয় ভূষণ দাস জানান, নমুনা সংগ্রহের পর তাদের হোম কোয়ারেন্টাইন বিধি মানতে বলা হয়েছিল। ভাইরাসটি যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে এখনও তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বাধ্য করা হবে। এরপরও তাদের শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হলে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হবে। এছাড়াও পরিস্থিতির উন্নতি না হলে বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে পাঠানো হবে।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ শামসুল আরিফিন জানান, আপাতত আক্রান্তদের তিনটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। এছাড়াও স্থানীয়দের সচেতন করতে এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে।
শিহাব খান/এমএএস/জেআইএম