কক্সবাজারে কৃষকের ফোন পেয়ে ধান কেটে দিল উপজেলা ছাত্রলীগ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কক্সবাজার
প্রকাশিত: ০১:১৩ এএম, ২৩ এপ্রিল ২০২০

করোনা প্রাদুর্ভাবে লকডাউনে পাকা ধান নিয়ে বিপাকে পড়া এক কৃষকের ফোন পেয়ে ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন কক্সবাজার সদর উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। অপটু হাতে সারাদিনের চেষ্টায় কৃষকের প্রায় এক একর জমির ধান কেটে বাড়ি পৌঁছাতে সক্ষম হন তারা।

কৃষকদের সমস্যা নিরসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য ছাত্রলীগের প্রতিটি ইউনিটকে কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই নির্দেশনার আলোকে কৃষকের ফোন পেয়ে ধান কেটে দিল কক্সবাজার সদর উপজেলা ছাত্রলীগ।

করোনায় দেশে এক নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে। ক্রমেই ভয়াবহ হয়ে উঠছে করোনা পরিস্থিতি। সংক্রমণরোধ ও ঝুঁকি এড়াতে দেশের বিভিন্ন এলাকার মতো কক্সবাজার জেলাও লকডাউনে রয়েছে। এদিকে ধানে পাক ধরা শুরু করেছে পুরো জেলায়। কক্সবাজার সদরের পিএমখালি ইউনিয়নের ছনখোলা গ্রামের কৃষক আব্দুল হাইয়ের চাষ করা এক একর জমিতে বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু লকডাউনে শ্রমিক সংকটে ধান কেটে ঘরে তুলতে না পেরে বিলেই ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। কৃষক আব্দুল হাই বিষয়টি উল্লেখ করে ছাত্রলীগের এক কর্মীকে ফোন দেন।

jagonews24

কক্সবাজার সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কাইছারুল আলম মুন্না চৌধুরী বলেন, খবরটি পেয়ে বুধবার (২২ এপ্রিল) ২০-২৫ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে নিয়ে আব্দুল হাইয়ের ক্ষেতে গিয়ে ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছি।

মুন্না চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও ছাত্রলীগের সাংগঠনিক নেত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগকে দেশের ক্রান্তিকালে মাঠে নামার নির্দেশনা দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় সভাপতি-সম্পাদকের মাধ্যমে সেই নির্দেশনা পেয়ে আমরা কৃষক আব্দুল হাইয়ের ধান কেটে ঘরে তুলে দিয়ে এসেছি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মাঠের পাকা ধান কাটা ও কৃষকের বাড়িতে পৌঁছানো হয়। শুধু আব্দুল হাই নয়, যে কৃষক সংকটের কথা বলে তাদের সহযোগিতা চাইবেন, তাদের মাঠে হাজির হবে উপজেলা ছাত্রলীগ- এ ওয়াদা আমি দিলাম।

দরিদ্র কৃষক আব্দুল হাই বলেন, এবার বোরো মৌসুমে অন্য ক্ষেতের মতো আমার জমিতেও ফলন ভালো হয়েছে। এ সংকটকালে কোনো উপায় না দেখে রাজনীতি করা এক ছেলেকে বিষয়টি শেয়ার করেছিলাম। কিন্তু ছাত্ররা এসে এভাবে ধান কেটে দেবে ভাবতেও পারিনি। ধান কাটতে আসা অনেককে চিনি। তারা জমিদার ঘরের ছেলে, চেয়ারম্যান-মেম্বারের ভাই, আত্মীয়-স্বজন। তারা কেন এসেছে জানতে চাইলে বলেছে, শেখ হাসিনার নির্দেশে নাকি ছাত্রলীগের কর্মীরা ধান কাটছে। নৌকার সরকার আমাদের উন্নয়ন দিচ্ছে, এখন আমাদের মতো দরিদ্রদের খবর রাখছে। দুঃসময়ে তরুণকর্মীদের দিয়ে সহযোগিতা করাচ্ছে। আমি নামাজ পড়ে দোয়া করব শেখ হাসিনার নৌকা যেন আরও যুগ যুগ ধরে ক্ষমতায় থাকে। আজকের ধান কাটার সহযোগিতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ছাত্রলীগকে এ গরিব কৃষক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

jagonews24

পিএমখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুর রহিম বলেন, এটি আশা জাগানিয়া ঘটনা। আগেরকার দিনে এলাকার বেকার বা সৌখিন মানুষগুলো ঝাঁকবেঁধে গিয়ে আমন চাষ করে দিয়ে আবার কেটেও দিয়ে আসত। তাদের জন্য নানা স্বাদের রান্নার আয়োজন করা হতো। সেটি এখন বিলুপ্তপ্রায়। আজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মফস্বলে এসে যেভাবে অসহায় কৃষককে সহযোগিতা দিয়েছে শুনলাম তা অব্যাহত থাকলে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন পূরণের পথ সুগম করবে বলে আমার বিশ্বাস।

সায়ীদ আলমগীর/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।