নওগাঁয় তিন চাকার যানে বাড়ছে ভোগান্তি
কয়েক বছরে নওগাঁয় রিকশা-অটোরিকশাসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন বেড়েছে কয়েকগুণ। এতে দুর্ঘটনাসহ প্রতিনিয়ত নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। এসব যানবাহন নিয়ন্ত্রণে এখনই কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে জানিয়েছেন এখানকার বাসিন্দারা।
নওগাঁ পৌরসভার যানবাহন শাখা জানায়, রিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার লাইসেন্স রয়েছে দুই হাজার ৩০০টি। লাইসেন্সের অপেক্ষায় রয়েছে আরও এক হাজার। শহরে যানবাহনের ধারণক্ষমতা চার হাজার হলেও প্রতিদিন চলাচল করে প্রায় তিনগুণ। লাইসেন্স থেকে গত বছর প্রায় ১১ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে। এসব যানবাহন ছাড়াও জেলা শহর থেকে বিভিন্ন উপজেলায় প্রতিদিন দেড় হাজার অটোরিকশা ছেড়ে যায়।
স্থানীয়রা জানায়, দুই লেনের সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শহরে প্রবেশ করে হাজার হাজার মানুষ। সড়কটি খুবই সরু। জীবিকার তাগিদে গ্রামের মানুষ এখন শহরমুখী। সকালে সিএনজি অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও রিকশা পাশের বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে শহরে আসে। আবার দিন শেষে ফিরে যায়।
আরও পড়ুন: ট্রাফিক পুলিশের টোকেন নিয়ে মহাসড়কে তিন চাকার যান
এসব অবৈধ যান শহরে প্রবেশে কোনো বিধিনিষেধ না থাকায় পৌরসভা লাইসেন্স ছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদ থেকে লাইসেন্স নিয়ে শহরের প্রবেশ করে। শহরের ধারণক্ষমতার প্রায় তিনগুণ যানবাহন প্রতিদিন চলাচল করে। ফলে যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাড়ছে ভোগান্তি। যানবাহন চলাচলে সুবিধার পরিবর্তে এখন দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে।
শহরের বরুনকান্দি মহল্লার অটোরিকশাচালক আতোয়ার রহমান বলেন, শহরের রাস্তা সরু। সে তুলনায় অতিরিক্ত গাড়ি চলাচল করে। যানজট শুরু হলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা শেষ। যানজটমুক্ত করতে হলে শহরের রাস্তা প্রশস্ত করতে হবে।
সুনাম রহমান নামের এক যাত্রী বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি যানবাহন বেড়েছে। কিন্তু রাস্তাগুলো আগের মতো রয়েছে। এ কারণে শহরে প্রতিদিন ব্যাপকহারে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। রাস্তায় মানুষ চলাচল করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে তিন চাকার যানের দৌরাত্ম্য
সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) নওগাঁর সমন্বয়ক জয়নাল আবেদীন মুকুল বলেন, একটি শহরের ২৫ শতাংশ রাস্তা থাকা দরকার। যা নওগাঁ শহরের সে পরিমাণ রাস্তা নেই। অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র হচ্ছে শহর। গ্রামের বেকার যুবকরা কর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন যানবাহন চালিয়ে অর্থ রোজগারের চেষ্টা করছে।
নওগাঁ পৌরসভার মেয়র মো. নজমুল হক সনি বলেন, শহরের আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়ন রয়েছে। এসব ইউনিয়ন থেকে প্রতিদিন সকালে অটোরিকশা ও ভ্যান শহরে আসে আবার সন্ধ্যায় ফিরে যায়। পৌরসভার জন্য এসব যানবাহন অবৈধ। শহরের প্রবেশমুখে এসব যানবাহন ঢুকতে দেওয়া না হয় তাহলে যানজট হবে না।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাশিদুল হক বলেন, জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সম্মিলিত একটা কমিটি গঠন করা হয়েছে। অটোরিকশার সংখ্যা কতো এবং কিভাবে যানজট নিরসন করা যায় সে বিষয়ে একটা রির্পোট চাওয়া হয়েছে। সে অনুপাতে ট্রাফিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হবে। আশা করছি যানজটও নিরসন হবে।
আব্বাস আলী/আরএইচ/জিকেএস