শিক্ষক নেতা কাওছারের বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার দাবিতে মানববন্ধন
রাজধানীর সবুজ বিদ্যাপীঠ স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষক নেতা কাওছার আলী শেখকে সাময়িক বরখাস্তের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষকরা। মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) ব্যানারে এ কর্মসূচি করা হয়।
সমিতির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে মানবন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল হোসেন, অর্থ সম্পাদক মোস্তফা জামান খান, দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ।
শিক্ষকরা নেতারা বলেন, সারাদেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে কাওছার আলী শেখের নেতৃত্বে শিক্ষকরা মাঠে নেমেছিলেন। সরকারের সুনির্দিষ্ট আশ্বাসে শিক্ষকরা ক্লাসে ফিরে যান। এরপরও কাওছার শেখ দ্রুত দাবি বাস্তবায়নে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে ক্ষুব্ধ অর্থ হয়ে একটি মহল ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সাময়িক বরখাস্ত করেছে।
তারা আরও বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটি অযাচিতভাবে শিক্ষা কার্যক্রমে নগ্ন হস্তক্ষেপ করে। সবুজ বিদ্যাপীঠ স্কুল অ্যান্ড কলেজে তারই একটি উদাহরণ। কিন্তু এভাবে ষড়যন্ত্র করে শিক্ষকদের দাবি আদায়ের আন্দোলন দমিয়ে রাখা যাবে না।
আরও পড়ুন: শিক্ষক নেতা কাওছারকে বরখাস্তের প্রতিবাদে সারাদেশে মানববন্ধনের ডাক
মানববন্ধন থেকে দ্রুত কাওছার আলী শেখের সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানান শিক্ষক নেতারা।
কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বক্তব্য দেন কাওছার আলী শেখও। দীর্ঘ বক্তব্যে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানের ম্যানজিং কমিটি ভুয়া একটি বেসরকারি ফার্ম নিয়োগ করে স্কুলের আর্থিক বিষয়ে অডিট করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। ওই অডিট প্রতিবেদন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলেও দাবি করেন কাওছার আলী শেখ।
এদিকে, কাওছার আলী শেখের বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারে সারাদেশে জেলা পর্যায়ে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির স্ব স্ব জেলা শাখা। মানববন্ধন শেষে তারা জেলা প্রশাসককে প্রধানমন্ত্রী বরাবর লেখা স্মারকলিপি দিয়েছেন। তাতে কাওছার আলী শেখের বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দ্রুত জাতীয়করণের দাবি জানিয়েছেন।
গত ১১ নভেম্বর সবুজ বিদ্যাপীঠ স্কুল অ্যান্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটির বৈঠকে কাওছার আলী শেখকে দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সাময়িক বরখাস্তের চিঠিতে বলা হয়, অধ্যক্ষ কাওছার আলী শেখের বিরুদ্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আয় ও ব্যয়ের খাত থেকে ২ কোটি ৮৫ লাখের বেশি টাকা অনিয়ম-দুর্নীতি এবং প্রভিডেন্ট ফান্ডের ১ লাখ ৯৮ হাজার টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পেয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি স্কুলের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষায় এ প্রমাণ মেলে।
একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে জাল সনদের মাধ্যমে নিজ আত্মীয়কে নিয়োগ দেওয়া, এমপিওভুক্তির আশ্বাস দিয়ে চাঁদা দাবি, নারী শিক্ষকদের নিপীড়ন এবং জমির ব্যবসায়ে ব্যস্ত থাকার অভিযোগ আনা হয়।
এএএইচ/এমআরএম/জিকেএস