থিয়েটার কিংবদন্তি রতন থিয়াম মারা গেছেন
ভারতের থিয়েটার জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, মণিপুরের প্রখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্ব রতন থিয়াম আর নেই। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর বুধবার ভোররাতে ইম্ফলের রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেসে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।
১৯৮৯ সালে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত রতন থিয়াম তার নাট্যকর্মের মধ্য দিয়ে ঐতিহ্যবাহী মণিপুরি শিল্পধারা, আধুনিক রচনাশৈলী এবং কাব্যিক উপস্থাপনার অনন্য সমন্বয় ঘটিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন কোরাস রেপার্টরি থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৮৭ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা (এনএসডি)-র পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
তার মৃত্যুতে মণিপুর সরকার এক বিবৃতিতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘গভীর শোক ও হৃদয়বিদারক বেদনার সঙ্গে আমরা পদ্মশ্রী ও সংগীত নাটক একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত রতন থিয়ামের প্রয়াণে শোক প্রকাশ করছি। তিনি ছিলেন ভারতীয় থিয়েটারের এক প্রাজ্ঞ ব্যক্তিত্ব ও মণিপুরের সাংস্কৃতিক প্রতীক। তাঁর অনবদ্য কর্মজীবন এবং সাংস্কৃতিক অবদানের স্মৃতিকে আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি। তার পরিবার, অনুসারী ও বিশ্বব্যাপী দর্শকদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা।’
মণিপুরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এন. বীরেন সিং এক শোকবার্তায় বলেন, ‘রতন থিয়ামের প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি ছিলেন মণিপুরের গর্ব, ভারতীয় থিয়েটারের এক প্রকৃত নক্ষত্র। তার নিষ্ঠা, দৃষ্টিভঙ্গি ও মণিপুরি সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা কেবল নাট্যজগতকেই সমৃদ্ধ করেনি, বরং আমাদের জাতিসত্ত্বাকেও গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। তাঁর কাজের মধ্যে দিয়ে মণিপুরের আত্মা, গল্প, সংগ্রাম ও সৌন্দর্য প্রতিফলিত হয়েছে।’
খ্যাতনামা অভিনেত্রী নবনীত নিশান তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে লিখেছেন, ‘এটা সত্যিই দুঃখের দিন যখন একজন শ্রদ্ধেয় গুরুকে হারাতে হয়... শ্রদ্ধেয় রতন থিয়াম থিয়েটার জগতের এক মহান ব্যক্তিত্ব ছিলেন এবং আমি সৌভাগ্যবান যে তাকে এনএসডিতে শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলাম। তার আত্মার শান্তি কামনা করি... বিদায়ের অশ্রু আর গভীর শ্রদ্ধা।’
রতন থিয়ামের মৃত্যু ভারতীয় নাট্যজগতে এক অপূরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি করল। তিনি শুধু একজন নাট্যকার ছিলেন না, ছিলেন একজন চিন্তাবিদ, শিল্পগুরু ও সংস্কৃতির ধারক।
এলআইএ/জিকেএস