কাঁদতে কাঁদতে ভিডিও দিলেন নায়িকা
ইমরান হাশমির বিপরীতে ‘আশিক বানায়া আপনে’ সিনেমায় অভিনয় করে ঝড় তুলেছিলেন তিনি। ছবিতে খোলামেলা চরিত্রে অভিনয় করে তরুণ হৃদয়ে দাগ কেটেছিলেন। হয়ে উঠেছিলেন ক্রেজ। একসময় যার রূপ ও অভিনয়ে মুগ্ধ হয়েছিল তরুণ প্রজন্ম সেই তনুশ্রী দত্ত আজ অনেকটাই আড়ালে।
বলিউড থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে এখন তিনি মন দিয়েছেন আধ্যাত্মিকতায়। ব্যক্তি জীবনে এখনও তিনি অবিবাহিত। বিষয়টি ঘিরে কৌতূহল অনেকের।
এদিকে অভিনেত্রী বুধবার (২৩ জুলাই) রাতে হঠাৎ সামাজিকমাধ্যমে কাঁদতে কাঁদতে ভেজা চোখে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন। ভিডিও প্রকাশ করে তিনি পোস্টে লিখেছেন, ‘আমি এই হয়রানিতে একেবারে ক্লান্ত ও বিরক্ত! এটা আমার সঙ্গে ২০১৮ সাল থেকে চলছে। আজ আমি বিরক্ত হয়ে পুলিশকে ফোন করেছি। দয়া করে কেউ আমাকে সাহায্য করুন! কিছু করুন, কিছু করার আগেই দেরি হয়ে যাবে।’
তনুশ্রী কাঁদছেন আর বলছেন, ‘আমি নিজের বাড়িতেই হেনস্থার শিকার হচ্ছি। আমাকে নিজের বাড়িতেই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এ কারণেই পুলিশকে ডাকতে বাধ্য হয়েছি। আজকে তাঁরা এসেছিলেন। কাল আমাকে গিয়ে থানাতে ঠিকভাবে অভিযোগ জমা দিতে বলা হয়েছে। আমি সেটাই করব। গত চার-পাঁচ বছর ধরে আমি এমনভাবে নিজের বাড়িতে হেনস্তার শিকার হচ্ছি যে, আমার কাজকর্ম বন্ধ হয়ে গেছে। আমার বাড়ি একবারেই অগোছালো হয়ে পড়ে রয়েছে। সব কাজ নিজেকেই করতে হচ্ছে। বাড়িতে যাঁরা কাজ করতে এসেছেন, এমনভাবে সব জিনিস চুরি করেছেন যে, আমি আতঙ্কে আছি।’
অভিনেত্রীর ভিডিওটি দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনুরাগীরা। অনেকে মনে করছেন ২০১৮ সালে ‘মি-টু’ মুভমেন্ট নিয়ে মুখ খোলার পর থেকেই সমস্যায় পড়েছেন তনুশ্রী। হারিয়েছেন কাজও। তবে ঠিক কী কারণে তিনি কান্না করতে করতে ভিডিও প্রকাশ করেছেন সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।

প্রসঙ্গত, তনুশ্রী দত্তের জন্ম ঝাড়খণ্ডের জমশেদপুরে একটি বাঙালি হিন্দু পরিবারে। তিনি পড়াশোনা করেন ডি.বি.এম.এস ইংলিশ স্কুলে এবং পরে ভর্তি হন সাবিত্রীবাই ফুলে পুনে বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখান থেকে মডেলিংয়ের প্রতি আগ্রহ জন্মায় তার।
২০০৪ সালে তিনি ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া খেতাব জেতেন। এরপর মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় অংশ নেন এবং একাদশতম স্থানে পৌঁছান। সেই থেকেই শুরু হয় তার তারকাজীবন। মডেলিং পেরিয়ে তনুশ্রী পা রাখেন বলিউডে। ২০০৫ সালে ইমরান হাশমির সঙ্গে ‘আশিক বানায়া আপনে’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে তার। এই ছবির কিছু সাহসী দৃশ্য তৎকালীন সময়ে ব্যাপক আলোড়ন তোলে এবং তাকে রাতারাতি জনপ্রিয় করে তোলে।
পরে তিনি অভিনয় করেন ভাগম ভাগ (অক্ষয় কুমারের বিপরীতে), ঢোল (তুষার কাপুরের সঙ্গে) প্রভৃতি সিনেমায়। এরপর পা রাখেন দক্ষিণী সিনেমায়। ২০১০ সালে তামিল ছবি ‘থীরাধা বিলাইআট্টু পিল্লাই’-এ তিনি অভিনয় করেন। সেখানে তার সহ-অভিনেতা ছিলেন বিশাল, সারাহ জেন ডায়াস ও নীতু চন্দ্রা।
সর্বশেষ তাকে দেখা যায় ২০১৩ সালে টেলিভিশন সিরিজ সুপারকপস ভার্সেস সুপার ভিলেনসে। তারপর যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান এবং বলিউড থেকে দীর্ঘ বিরতি নেন।
তনুশ্রীর ব্যক্তিগত জীবনেও রয়েছে আলোচিত অধ্যায়। জানা যায়, একসময় তিনি তার প্রথম চলচ্চিত্র ‘আশিক বানায়া আপনে’-এর পরিচালক আদিত্য দত্তের সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন। যদিও এই সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। এরপর আর বিয়েও করেননি তিনি।
এলআইএ/জিকেএস