সেরা ১০ যুদ্ধ (দেখুন ছবিতে)
জীবন ও সমাজের কথা বলে চলচ্চিত্র। তাই চিত্র নির্মাতারাও চেষ্টা করেন মানুষের কাছাকাছির কোনো বিষয় নিয়ে ছবি তৈরি করতে। তারই ধারবাহিকতায় প্রেম-বিচ্ছেদ-হাসি-কান্নাগুলো বারবার প্রাধান্য পেয়েছে চলচ্চিত্র নির্মাণে। তেমনি করে প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকেই ক্ষমতা আর আধিপত্যের মোহে মানুষে মানুষে যুদ্ধ হয়েছে। সেইসব যুদ্ধের অনেক গল্পই আজ ইতিহাসের পাতায় অমরত্ব নিয়েছে। পাশাপাশি যুদ্ধ চলছে এখনও। স্বাভাবিকভাবেই চলচ্চিত্রেও যুদ্ধ এসেছে সময়ের প্রয়োজনে, চলচ্চিত্রের বৈচিত্রতায়। তবে যুদ্ধ নিয়ে দুনিয়া কাঁপানো ছবিগুলো হলিউডেই নির্মিত হয়েছে এ কথা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। চলুন জেনে নেয়া যাক সেরা ১০ যুদ্ধের ছবির সাতকাহন-
দ্য ডেজার্ট ফক্স (১৯৫১)
দ্য ডেজার্ট ফক্স ছবির পরিচালক ছিলেন হেনরি হ্যাথওয়ে। মুলত ছবিটিতে জার্মানির ধূর্ত সেনানায়ক ফিল্ড মার্শাল রোমেলকে ঘিরেই কাহিনীর শাখা প্রশাখা বিস্তার। ছবিটিতে দেখানো হয়েছে রোমেলের চৌকস সমর লড়াই। রোমেলের চরিত্রে অভিনয় করেন অভিনেতা জেমস ম্যাসন। আজও এই ছবিটি দর্শকের পছন্দের শীর্ষে।
রোম : ওপেন সিটি (১৯৯৬)
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে বানানো ইতালির বিখ্যাত পরিচালক রবার্তো রোসেলিনের ছবি রোম : ওপেন সিটি। ছবিটি কান চলচ্চিত্র উৎসবে (১৯৯৬) শ্রেষ্ঠত্বের পুরস্কার পেয়েছিল। এই ছবির চিত্রনাট্য লিখেছিলেন আরেক বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার ফেদরিকো ফেলিনি, তাঁর সাথে সের্গিও আমিদি। 
অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট (১৯৩০)
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত এই চলচ্চিত্রটি এরিক মারিয়া রেমার্কের বিখ্যাত উপন্যাস ‘অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট’ থেকে বানানো। ছবিটির পরিচালনায় ছিলেন লেউইস মাইলষ্টোন। ১৯৩০ সালে অস্কারে ছবিটি শ্রেষ্ঠ ছবি হিসেবে নির্বাচিত হয়। এছাড়াও শ্রেষ্ঠ পরিচালক এবং শ্রেষ্ঠ সিনেম্যাটোগ্রাফি- এই তিন ক্যাটাগরিতে অস্কার পায় বিশ্ব ইতিহাসে বর্বরোচিত গল্পের এই ছবিটি।
ফ্রম হিয়ার টু ইটার্নিটি (১৯৫৩)
প্রেম আর যুদ্ধের মিশেলে নির্মিত ছবি ফ্রম হিয়ার টু ইটার্নিটি। ছবিটি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রসহ মোট আটটি অস্কার জয় করে নেয়। ফ্রেড জিনারম্যান পরিচালিত এই ছবি কেবল বিখ্যাতই নয়, তুমুল আলোচিতও বটে। গায়ক ফ্রাঙ্ক সিনাত্রার পড়ন্ত ক্যারিয়ার আবার জেগে উঠে এই ছবিটির মাধধ্যমেই।
দ্য ব্রিজ অন দ্য রিভার কওয়াই (১৯৫৭)
সাতটি ক্যাটাগরিতে অস্কার জিতেছিল এই ছবিটি। সেরা পরিচালক হিসেবে ডেভিড লিন এবং শ্রেষ্ঠ অভিনেতা অ্যালেক গিনেস পেয়েছিলেন সেরার সম্মান। পিয়েরে বুলের বিখ্যাত ক্লাসিক উপন্যাস ‘দ্য ব্রিজ অন দ্য রিভার কওয়াই’ থেকে নির্মিত এই ছবি চলচ্চিত্রের ইতিহাসে স্মরণীয় একটি সংযোজন।
অ্যাপোক্যালিপস নাউ (১৯৭৯)
ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলার অসাধারণ পরিচালনা পুরো সময় ধরে ছবিটিকে উপভোগ্য করে রেখেছে। ছবির শেষভাগে মার্লোন ব্র্যান্ডোর অন্তরাত্মা ঠাণ্ডা করে দেওয়া উপস্থিতিই বোধহয় ছবিটিকে অমর করে তুলেছে! পাঁচটি ক্যাটাগরিতে অস্কার জিতেছিলো ছবিটি।
ব্যালাড অব আ সোলজার (১৯৫৯)
যুদ্ধে বীরত্বের স্বীকৃতি স্বরূপ সম্মানসূচক মেডেল না নিয়ে মায়ের সাথে দেখা করবার জন্য যুদ্ধক্ষেত্র থেকে চারদিনের ছুটি নেয় এক যোদ্ধা। এই অসামান্য কাহিনী নিয়ে নির্মিত সোভিয়েত ইউনিয়নের (বর্তমান রাশিয়া) পরিচালক গ্রেগরি চুখরাজের ‘ব্যালাড অব আ সোলজার’। ১৯৬২ সালে শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যের জন্য অস্কার পুরস্কার পায় ছবিটি।
দাস বুট (১৯৮১)
উলফগ্যাং পিটারসেনের বিখ্যাত ছবি দাস বুট। ১৯৪১ সালের একটি কাহিনী নিয়ে নির্মিত হয় ছবিটি। প্রায় ছয়টি বিভাগে অস্কারে মনোনয়ন পায় এই ছবিটি। এছাড়াও জিতে আরো অন্যান্য চলচ্চিত্র পুরস্কার। 
গুড মর্নিং ভিয়েতনাম (১৯৮৭)
ভিয়েতনামের ঐতিহাসিক যুদ্ধ ও গণহত্যার কাহিনী নিয়ে নির্মিত এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন প্রয়াত অভিনেতা রবিন উইলিয়ামস। এ ছবির জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে অস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছিলেন।
শিন্ডলার্স লিস্ট (১৯৯৩)
চলচ্চিত্র ইতিহাসের অন্যতম যুদ্ধবিরোধী ছবি। স্টিভেন স্পিলবার্গ পরিচালিত এই ছবি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রসহ মোট সাতটি ক্যাটাগরিতে অস্কার জিতেছিল।
আরএএইচ/এলএ/বিএপিআর