বিধ্বস্ত হওয়ার আগে জ্বালানি সুইচ বন্ধ হয় এয়ার ইন্ডিয়ার প্লেনের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:১৯ এএম, ১২ জুলাই ২০২৫
ফাইল ছবি: এয়ার ইন্ডিয়ার ফেসবুক

ভারতের আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার প্লেন দুর্ঘটনার একটি প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে, এটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগমুহূর্তে এর জ্বালানি নিয়ন্ত্রণ সুইচ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অর্থাৎ জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে বিমানটির দুই ইঞ্জিনই বন্ধ হয়ে যায়। খবর বিবিসির।

প্লেনের ককপিটে পাইলটদের কথোপকথনের যে রেকর্ড পাওয়া গেছে তাতে একজনকে বলতে শোনা গেছে তুমি বন্ধ করে দিলে কেন?। আরেকজন জবাব দিয়েছেন তিনি কিছু করেননি।

এয়ার ইন্ডিয়ার একজন মুখপাত্র বলেছেন, তারা বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষকে ‘পরিপূর্ণ সহযোগিতা’ করছেন। বিমান দুর্ঘটনার তদন্তকারী সংস্থা এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি) তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।

গত ১২ জুন লন্ডনগামী বিমানটি উড্ডয়নের পরপরই একটি আবাসিক এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। এতে ২৪২ জন আরোহীর মধ্যে একজন ব্রিটিশ নাগরিক ছাড়া বাকি সবাই নিহত হন।

আরোহীদের মধ্যে যাত্রী ছিলেন ২৩০ জন এবং ১২ জন ছিলেন প্লেনের ক্রু। সব মিলিয়ে ওই দুর্ঘটনায় ২৬০ জন নিহত হয়। পরদিন থেকেই ভারতের বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় তদন্ত শুরু করে। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র থেকেও তদন্তকারীরা ঘটনাস্থলে আসে। সেইদিন প্লেনের প্রথম ব্ল্যাকবক্স উদ্ধার করা হয়।

দ্বিতীয় ব্ল্যাকবক্সটি পাওয়া যায় গত ১৬ জুন যেখানে প্লেনটি বিধ্বস্ত হয়েছিল সেখানকার ধ্বংসস্তূপের মধ্যে। যদিও ঠিক কোন জায়গায় পাওয়া গেছে তা প্রকাশ করা হয়নি।

শেষ পর্যন্ত ব্ল্যাকবক্স থেকে পাওয়া ডেটা বিশ্লেষণ করে দুর্ঘটনার ইন্টারন্যাশনাল এভিয়েশন রুলসের আওতায় প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ করা হলো।

বিধ্বস্ত হওয়ার আগে ককপিটে যা হয়েছিল
এএআইবি প্লেনটির দুর্ঘটনা বা বিধ্বস্ত হওয়ার বিষয়ে ১৫ পাতার প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এতে প্লেনটি উড্ডয়নের কয়েক সেকেন্ড পর বিধ্বস্ত হওয়ার আগে যা যা ঘটেছিল তার বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।

প্লেনটি উড্ডয়নের পর ১৮০ নটস গতিতে পৌঁছে গিয়েছিল এবং এরপরপরই এক সেকেন্ডের ব্যবধানে দুটি ইঞ্জিনেরই ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ ‘রান থেকে কাট অফ’ পজিশনে চলে যায় বলে ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে।

ককপিটে পাইলটদের কথোপকথনের ভয়েস রেকর্ডিংয়ে একজন পাইলটকে জিজ্ঞেস করতে শোনা যায় যে তিনি কেন সুইচ বন্ধ করলেন। অন্য পাইলট বলেছেন, তিনি এমন কিছু করেননি।

আন্তর্জাতিক সময়ানুযায়ী ৮টা ৮ মিনিট ৫২ সেকেন্ডের সময় ‘১ নম্বর ইঞ্জিন এর ফুয়েল কাট অফ সুইচ আবার ‘রান’ (চালু) অবস্থায় ফিরে আসে এবং এর ৪ সেকেন্ড পর দুই নম্বর ইঞ্জিনের ফুয়েল কাট অফ সুইচও ‘কাট অফ থেকে রান’ অবস্থায় ফিরে আসে’।

কিন্তু ৮টা ৯ মিনিট ৫ সেকেন্ডে, অর্থাৎ নয় সেকেন্ডের ব্যবধানে, একজন পাইলট গ্রাউন্ডে থাকা এয়ার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তাদের ‘মে ডে’, ‘মে ডে’, ‘মে ডে’ বলে বার্তা দেন।

প্রসঙ্গত, ‘মে ডে’ একটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃত বিপদ সংকেত। সাধারণ পাইলটরা সংকটের মুখে পড়লে এয়ার ট্রাফিক কর্মকর্তাদের তিন বার এই বার্তা দিয়ে বোঝান যে বিমানটি মারাত্মক সংকটে পড়েছে ও তাদের দ্রুত সহায়তার প্রয়োজন

টিটিএন

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।