গবেষণার তথ্য

শুকিয়ে যাচ্ছে ইউরোপ, তীব্র পানি সংকটের আশঙ্কা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:২৮ পিএম, ২৯ নভেম্বর ২০২৫
ইউরোপে মিঠা পানির সংরক্ষণশীল সম্পদ দ্রুত কমছে/ ছবি : দ্য নিউজ

ইউরোপের বিশাল অংশের মিঠা পানির সংরক্ষণশীল সম্পদ দ্রুত কমছে। বিভিন্ন দেশে দীর্ঘ শুষ্ক মৌসুমের কারণে পানি সংকট তীব্র হচ্ছে এবং ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় শুকিয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি। দক্ষিণ ও মধ্য ইউরোপে বিশেষ ভাবে স্পেন, ইতালি থেকে শুরু করে পোল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্যের কিছু অংশে পানির স্তর নেমে যাচ্ছে। দুই দশকের স্যাটেলাইট ডেটার বিশ্লেষণে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের (ইউসিএল) বিজ্ঞানীরা ওয়াটারশেড ইনভেস্টিগেশনস ও সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান-এর যৌথ প্রচেষ্ঠায় ২০০২–২০২৪ সালের স্যাটেলাইট তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। স্যাটেলাইটগুলো পৃথিবীর মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রের পরিবর্তন নিরীক্ষণ করে। পানি ভারী, ভূগর্ভস্থ জল, নদী, হ্রদ, মৃত্তিকা আর্দ্রতা ও হিমবাহের পরিবর্তন সিগন্যালের মাধ্যমে শনাক্ত হয়। এইভাবে স্যাটেলাইটগুলো ইউরোপের পানির ওজন নির্ধারণ করতে সক্ষম।

গবেষণায় দেখা গেছে, উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম ইউরোপ বিশেষ করে স্ক্যান্ডিনেভিয়া, যুক্তরাজ্যের কিছু অংশ এবং পর্তুগালে পানির স্তর কিছুটা ঠিক থাকলেও দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের বিস্তীর্ণ অংশ শুকিয়ে যাচ্ছে। এতে স্পেন, ইতালি, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, জার্মানি, রোমানিয়া, ইউক্রেন এবং যুক্তরাজ্যের কিছু অংশ অন্তর্ভুক্ত।

ইউসিএল এর প্রফেসর মোহাম্মদ শামসুদ্দুহা বলেছেন, মোট ভূ-জলের জল সংরক্ষণ ডেটা জলবায়ু ডেটাসেটের সঙ্গে তুলনা করলে এ প্রবণতা মোটামুটি মিলে যায়। তিনি এটিকে রাজনীতিবিদদের জন্য সচেতন বার্তা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

যুক্তরাজ্যে পরিস্থিতি কিছুটা মিশ্র প্রকৃতির। পশ্চিম অংশ পানি থাকলেও পূর্ব অংশ শুষ্ক হয়ে যাচ্ছে এবং শুষ্ক হবার প্রবণতা শক্তিশালী হচ্ছে। বর্ষার ধরণ পরিবর্তিত হচ্ছে-গ্রীষ্মে ভারী বর্ষা এবং পরে দীর্ঘ শুষ্ক মৌসুম দেখা যাচ্ছে।

ইউরোপীয় পরিবেশ সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০০০–২০২২ সালের মধ্যে মোট পানি গ্রহণ কমলেও ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা প্রধানত পাবলিক ও কৃষিকাজের জন্য। ইউরোপীয় কমিশনের পানি টেকসই ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে পানির ব্যবহার কমাতে অন্তত ১০ শতাংশ দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে।

রিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের হাইড্রোলজি প্রফেসর হান্না ক্লোক বলেছেন, দীর্ঘমেয়াদি এই প্রবণতা খুবই উদ্বেগজনক। যদি আগামী বসন্ত ও গ্রীষ্মে প্রয়োজনীয় বৃষ্টি না হয় তবে তীব্র পানি সংকট দেখা দেবে।

সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান

কেএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।