পাকিস্তানে আটক ভারতীয় সেনাকে ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট দিল্লি
চান্দু বাবুলাল চওহান নামের এক ভারতীয় সেনা ভুলবশত পাক-ভারত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাকিস্তানের ভেতর ঢুকে পড়ায় তাকে আটক করেছে পাক সেনাবাহিনী। ওই সেনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সামরিক পর্যায়ে তৎপরতা শুরু করেছে দিল্লি। খবর বিবিসির।
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এই উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন। তবে তিনি এও জানিয়েছেন যে, ওই সেনাকে ফিরিয়ে আনতে কিছুটা সময় লাগবে।
এদিকে, পাকিস্তান তাদের হাতে এক ভারতীয় সেরা ধরা পড়েছে বলে জানালেও সরকারিভাবে এ ব্যাপারে আর কোনও প্রতিক্রিয়া জানায় নি।
পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, অন্য সময়ে এই ঘটনা ঘটলে ওই সেনাকে হয়তো সহজেই ফিরিয়ে আনা যেত। কিন্তু দুই দেশের মধ্যে এমন যুদ্ধের আবহে চান্দু বাবুলালকে ভারতে ফিরিয়ে আনা বেশ জটিল হবে।
উরির সেনাঘাঁটিতে হামলায় ১৮ ভারতীয় সেনা নিহত হওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের পর কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ চালানোর কথা জানায় ভারতীয় সেনাবাহিনী। ওই ভোরের দিকেই মানকোটের কাছে পাকিস্তানি সেনার হাতে ধরা পড়েন চান্দু বাবুলাল চওহান।
তবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ৩৭ রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের এই জওয়ান ওই হামলার অংশ নেননি। সীমান্তে রুটিন টহল দিতে গিয়ে অনিচ্ছাকৃতভাবে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকর জানিয়েছেন, ওই সেনা জওয়ানকে ফেরানোর জন্য আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
তিনি জানান, ‘এমন পরিস্থিতিতে একটা স্ট্যান্ডার্ড পদ্ধতি আছে। যারা ভুল করে সীমান্ত পেরিয়ে যায় আমরা তদন্ত শেষে তাদের একে অন্যের হাতে তুলে দেই। আর এটা দু’দেশের ডিরেক্টর জেনারেল মিলিটারি অপারেশনস বা ডিজিএমও পর্যায়েই বিষয়টি তদাকরি করা হয়। আর সেই প্রক্রিয়া আমরা ইতোমধ্যেই শুরু করে দিয়েছি।’
তবে ভারতের ওই জওয়ান যে নেহাত ভুল করে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়েছিলেন পাকিস্তান সে কথা বিশ্বাস করছে না। বরং জাতিসংঘে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত মালিহা লোধির শনিবার আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘বৃহস্পতিবার ভোররাতে আমরা দেখলাম সীমান্ত পেরিয়ে শেলিং ও মর্টার ফায়ার শুরু করেছে ভারত। আমরা একজন ভারতীয় সেনাকে আটক করেছি যে সীমান্ত পেরোনোর চেষ্টা করছিল। আমাদের দুজন সৈনিক ওই ঘটনায় শহীদ হয়েছে।’
এর আগে ১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধের সময় পাকিস্তানে ধরা পড়া ভারতীয় সেনা ক্যাপ্টেন সৌরভ কালিয়ার দেহ সম্পূর্ণ ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় ফেরত এসেছিল। এখন চান্দু বাবুলাল চওহানের পরিণতি সৌরভ কালিয়ার মতই হয় কিনা তা নিয়ে আতঙ্ক প্রকাশ করেছে তার পরিবার।
টিটিএন/এমএস