প্লট বরাদ্দে মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সুপারিশের বিধান বন্ধের নির্দেশ
রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে করা মামলার রায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অর্থদণ্ড ও কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সরকারি প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়কে ‘বিশেষ সুপারিশের বিধান’ অবিলম্বে বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এ রায় ঘোষণা করেন।
দুদকের করা মামলার রায়ে, শেখ হাসিনাকে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৬-এর ধারা ৫(২) এর অধীনে দোষী সাব্যস্ত করে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এই রায়ের ফলে পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পের ৯ নম্বর প্লটটির বরাদ্দ বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। প্লটটির দখল নিয়ে যোগ্য আবেদনকারীকে আইনানুসারে বরাদ্দ দিতে রাজউককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই মামলায় শেখ হাসিনাসহ মোট ১১ জন অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, সাবেক সচিব মো. শহীদুল্লাহ খন্দকার এবং সাবেক অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াসি উদ্দিনকে ৬ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লাখ করে টাকা জরিমানা করা হয়েছে। রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিসুর রহমান মিয়াহকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের ১ থেকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আদালত এই রায়ের পাশাপাশি রাজউক এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে কঠোর পর্যবেক্ষণ জারি করে বলেছে যে, তারা ধারাবাহিকভাবে নিয়ম লঙ্ঘন করে প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারসহ অন্যান্য প্রভাবশালী ব্যক্তিকে সুবিধা দিয়েছে, যা ‘এলিট ক্যাপচার’ বা অভিজাতদের দ্বারা ক্ষমতা দখলের প্রমাণ।
এই প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি বন্ধ করতে আদালত রাজউককে অবিলম্বে অনিয়মে জড়িত কর্মকর্তাদের অপসারণ এবং একটি স্বাধীন কমিটি গঠন করে সব বরাদ্দের ফরেনসিক অডিট করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি কমাতে ডিজিটাল লটারি সিস্টেম চালু করার কথাও বলেছেন আদালত।
এমডিএএ/এমএমকে