প্রাইভেটকারে গার্ডার

এবার ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে আসক-ব্ল্যাস্টের রিট

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:১০ পিএম, ১৭ আগস্ট ২০২২

রাজধানীর উত্তরায় নির্মাণাধীন বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ক্রেন থেকে গার্ডার ছিটকে পড়ে প্রাইভেটকারের দুই শিশুসহ নিহত পাঁচ যাত্রীর প্রত্যেকের পরিবারকে এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে আরেকটি রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে।

বুধবার (১৭ আগস্ট) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আইন সালিশ কেন্দ্র (আসক) ও আইন সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) পক্ষে অ্যাডভোকেট সৈয়দা নাসরিন রিটটি করেন বলে জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. শাহিনুজ্জামান শাহীন।

রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), রোড অ্যান্ড হাইওয়ে ডিপার্টমেন্টের চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।

এর আগে প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে একই পরিবারের পাঁচজন নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রত্যেকের পরিবারের জন্য এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে। আর বিআরটির উন্নয়ন প্রকল্পে কী ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন তলবেরও নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

বুধবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জাকারিয়া খানের পক্ষে অপর আইনজীবী অ্যাডভোকেট এবিএম শাহজাহান আকন্দ মাসুম এ রিট দায়ের করেন।

রিটকারীর আইনজীবী এবিএম শাহজাহান আকন্দ মাসুম জানান, রিটের বিষয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানি হতে পারে বলেও আইনজীবীরা জানান।

এর আগে মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) একটি রিট দায়ের করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সাগুফতা তাবাসসুম আহমেদ এ রিটটি দায়ের করেন। রিটে আইনজীবী সেগুপ্তা তাবাসসুম আহমেদ ঢাকার সড়কে জনগণের চলাচলের নিরাপত্তা নিশ্চিতের নির্দেশ চেয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে দুর্ঘটনায় নিহত ৫ জনের বিষয়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং জনগণের প্রত্যাশিত নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিআরটিএর চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), পুলিশ কমিশনার, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার ও উত্তরা থানার ওসি, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ, রোড অ্যান্ড হাইওয়ে ডিপার্টমেন্টের চিফ ইঞ্জিনিয়ার, ঢাকা বাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানিকে বিবাদী করা হয়েছে।

রিটের ওপর হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হকের বেঞ্চে শুনানি হতে পারে বলে জানান সেগুফতা তাবাসসুম আহমেদ।

এর আগে এ ঘটনায় সোমবার (১৫ আগস্ট) দিনগত রাতে নিহত ফাহিমা আক্তার ও ঝর্ণা আক্তারের ভাই মো. আফরান মণ্ডল বাবু বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা (নম্বর-৪২) দায়ের করেন।

মামলায় অবহেলাজনিতভাবে ক্রেন পরিচালনাকারী চালক, প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোহসীন জানান, উত্তরার দুর্ঘটনায় দায়ের করা মামলায় অবহেলাজনিতভাবে ক্রেন পরিচালনাকারী চালক, সিজিজিসি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে দায়িত্বপ্রাপ্ত অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এ দুর্ঘটনার তদন্ত ও জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

সোমবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে উত্তরা তিন নম্বর সেক্টরের প্যারাডাইস টাওয়ারের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। হতাহতরা ঢাকায় একটি বৌ-ভাতের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ফিরছিলেন।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, গাড়িটিতে মোট সাতজন যাত্রী ছিলেন। এরমধ্যে দুই শিশু, দুই নারী ও একজন পুরুষ মারা গেছেন। নিহতরা হলেন— রুবেল (৫০), ঝর্ণা (২৮), ফাহিমা, জান্নাত (৬) ও জাকারিয়া (২)। আহত নবদম্পতি হৃদয় (২৬) ও রিয়ামনি (২১) উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় গেছেন।

এর আগে মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) সকালে দুর্ঘটনা নিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন আসকের পক্ষে অ্যাডভোকেট মো. শাহিদুজ্জামান শাহীন এবং ব্লাস্টের পক্ষে অ্যাডভোকেট এ এম জামিউল হক ফয়সাল। তারা আদালতের কাছে এ বিষয়ের সুষ্ঠু-তদন্ত ও ক্ষতিপূরণের জন্য প্রার্থনা করেন। পরে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের বেঞ্চ বিষয়টি রিট আকারে নিয়ে আসার পরামর্শ দেন।

এফএইচ/এমএএইচ/এমএস

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।