প্রাইভেটকারে গার্ডার

আধাঘণ্টা বেঁচে ছিলেন রুবেল ও শিশু জাকারিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৩৬ পিএম, ১৬ আগস্ট ২০২২

রাজধানীর উত্তরায় নির্মাণাধীন বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ক্রেন থেকে গার্ডার ছিটকে প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে পাঁচজন নিহত হন। এ ঘটনায় বিআরটি কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করেছেন নিহতের স্বজনরা।

সোমবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে উত্তরার জসীম উদদীন মোড়ে প্যারাডাইস টাওয়ারের সামনের সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বৌভাতের অনুষ্ঠান শেষে তারা গাজীপুরে যাচ্ছিলেন। এ ঘটনায় নবদম্পতি হৃদয় ও রিয়ামনি প্রাণে বেঁচে গেলেও মারা গেছেন বরের বাবা, কনের মা, কনের খালা ও খালাতো ভাই এবং বোন।

মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গের সামনে বসে বিআরটি কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করেন হৃদয়ের খালাতো বোন তানিয়া আক্তার।

তিনি বলেন, বৌভাত শেষ করে তারা গাজীপুরের দিকে রওনা দেন আনুমানিক ৩টার দিকে। প্রায় ১০ মিনিট পরে আমার খালা মানে হৃদয়ের মায়ের কাছে ফোন আসে। হৃদয় ফোন করে জানান তাদের গাড়ি আটকা পড়েছে। তারা সেখান থেকে কোনো মতে প্রাণে বেঁচে গেছেন। সাড়ে ৩টায় ঘটনা এটা। ৪টায় দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পাই তখনও আমার খালু রুবেল ও শিশু জাকারিয়া হাত-পা নাড়াচ্ছে। স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করছেন। কিন্তু বিআরটি কর্তৃপক্ষের কেউ উদ্ধারে কোনো সহায়তা করেনি।

তিনি আরও বলেন, আধাঘণ্টা পরও আমার খালু ও জাকারিয়া বেঁচে ছিল। কিন্তু আমরা তাদের উদ্ধার করে বাঁচাতে পারলাম না। পরে চার ঘণ্টা পর আমার খালুসহ বাকিদের মৃত অবস্থায় উদ্ধার করি। চোখের সামনে তাদের মৃত্যু দেখলাম। পরে পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন আমাদের আর ভেতরের দিকে যেতে দেয়নি। আমরা আহতদের নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে হাসপাতালের দিকে রওনা হই।

তানিয়ার অভিযোগ, ঘটনার সময় গিয়ে দেখি খালু হাত-পা নাড়াচ্ছেন। আমার নতুন ভাবির স্বজনের ছোট বাচ্চাটি তখন বেঁচে ছিল। সবাই খুব চেষ্টা করছিল তাদের বের করার। কিন্তু কোনোভাবেই পারিনি। ওই সময় আমরা বিআরটি কর্তৃপক্ষের কোনো লোকজনকে খুঁজে পাইনি। তাদের কোনো শ্রমিক উদ্ধারকাজে এগিয়ে আসেনি।

দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরা হৃদয় বলেন, আমি আর আমার বাবা সামনে ছিলাম। আর পেছনে আমার স্ত্রীসহ বাকিরা ছিল। বিমানবন্দর রোডে ক্রেনে একটা বক্স গার্ডার ঝুলছিল। আমরা দূর থেকে এটা দেখেছি। একের পর এক গাড়ি এর নিচ দিয়ে চলে যাচ্ছিল। আমরা ভাবলাম, আমরাও যেতে পারবো। যখনই পার হতে গেলাম তখনই গার্ডারটা গাড়ির ওপরে পড়লো। আমি বাবার বাম পাশে ছিলাম, আমার স্ত্রী পেছনের সিটে ছিল। সেও বাম পাশে ছিল। ডান পাশে আমার বাবাসহ বাকিরা ছিল। ডান পাশে যারা ছিল। তারা সবাই মারা যায়।

তিনি বলেন, স্থানীয়দের সহায়তায় সহজেই আমাকে উদ্ধার করা হয়। আমার পা আটকে ছিল। গাড়ির গ্লাস ভেঙে আমাকে সহজেই উদ্ধার করা হয়। আমার স্ত্রী পুরোপুরি আটকে ছিল, ওকে বের করতে অনেক সময় লাগে। আমাকে ১০ মিনিটে বের করে ফেলে কিন্তু আমার স্ত্রীকে বের করতে আধঘণ্টার মতো সময় লাগে। এ ঘটনায় আমরা মামলা করেছি, এর বিচার চাই।

এসএম/এমএএইচ/কেএসআর/জেআইএম

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।