টঙ্গীতে গুদামে আগুন

মৃত্যুর কাছে হার মেনে চলে গেলেন ফায়ার ফাইটার শামীম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:১৪ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ফায়ার ফাইটার শামীম আহমেদ/ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার টঙ্গীতে একটি রাসায়নিকের গুদামে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের চার কর্মী দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে শতভাগ দগ্ধ ফায়ার ফাইটার শামীম আহমেদ মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুন

দগ্ধ ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সহযোগিতার আশ্বাস স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
টঙ্গীর রাসায়নিক গুদামে অগ্নিকাণ্ডে উদ্ধার অভিযানে সেনাবাহিনী

বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম।

তিনি জানান, সোমবার বিকেলে টঙ্গীতে রাসায়নিকের একটি গুদামের আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের চার কর্মী দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে দুজন ফায়ার ফাইটার শামীম আহমেদ ও নুরুল হুদার শরীরের ১০০ শতাংশ দগ্ধ হয়। তাদের উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফায়ার ফাইটার শামীম আহমেদের মৃত্যু হয়।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম আরও জানান, নিহত শামীম আহমেদ টঙ্গী ফায়ার স্টেশনে কর্মরত ছিলেন। ২০০৪ সালের ১৬ আগস্ট তিনি ফায়ার সার্ভিসে ফায়ার ফাইটার পদে যোগ দেন। তার বাড়ি নেত্রকোনায়। তিনি বিবাহিত এবং তার তিন সন্তান রয়েছে।

জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা যায়, দগ্ধ চার ফায়ার ফাইটারের মধ্যে এখন তিনজন চিকিৎসাধীন। তারা হলেন- ১০০ শতাংশ দগ্ধ ফায়ার ফাইটার নুরুল হুদা, ৪২ শতাংশ দগ্ধ অফিসার খন্দকার জান্নাতুল নাঈম ও ৫ শতাংশ দগ্ধ ফায়ার ফাইটার জয় হাসান।

মঙ্গলবার সকালে দগ্ধদের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাসির উদ্দিন বলেন, দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে দুজন ফায়ার ফাইটার শতভাগ দগ্ধ হয়েছেন। আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে।

চল্লিশ ভাগের বেশি পুড়ে যাওয়া আশঙ্কাজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব রোগী আমাদের দেশেই যেমন বাঁচে, বিদেশেও বাঁচে। মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির সময় এ বিষয়টি আসছিল যে রোগীদের দেশে চিকিৎসা হবে নাকি দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া হবে। দেশে থেকেই চিকিৎসা করলে রোগী ভালো হতে পারেন।

ডা. মো. নাসির উদ্দিন আরও বলেন, আবেগের চেয়ে আমরা সায়েন্সকে বেশি প্রাধান্য দেবো। চিকিৎসক হিসেবে আমাদের পক্ষ থেকে যা যা করণীয় সব করা হবে।

একই সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা হাসপাতালে দেওয়া হচ্ছে। দগ্ধদের সর্বোচ্চ সেবা ও চিকিৎসাসেবা চলছে। আপনারা আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায়।

গতকাল সোমবার রাতে বার্ন ইনস্টিটিউটে আহত ফায়ার ফাইটারদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নিতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল বলেন, ফায়ার ফাইটারদের মূল উদ্দেশ্য ছিল আগুন নেভানো। কিন্তু দুঃখজনকভাবে বিস্ফোরণ হওয়ায় তারা দগ্ধ হন। তারা সবাই পিপি পরেন। একটি ভিডিও ক্লিপ দেখেছেন সবাই- যেখানে দেখা যাচ্ছে ফায়ার ফাইটাররা বেরিয়ে আসছেন। আমাদের কাছে মনে হয়েছে আগুনের তাপমাত্রা অনেক বেশি ছিল। কারণ একটি পিপির তাপমাত্রা থাকে ৩০০ থেকে ৩২০। যে কারণে পিপিসহ পুড়ে গেছে।

টিটি/এএমএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।