ওসমান হাদির জানাজা ও দাফন শেষে হেঁটে বাড়ি ফিরছেন লাখো মানুষ
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির জানাজা ও দাফন শেষে ঢাকার অধিকাংশ রাস্তায় ঘরে ফেরা মানুষের ঢল নেমেছে। গণপরিবহন সংকট ও অধিক মানুষের চাপে সবাই হেঁটে বাড়ি ফিরছেন। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টার পর থেকে ঢাকার প্রতিটি রাস্তার চিত্র ছিল এমন। সন্ধ্যার পরও মানুষ হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন। রাজধানীর আগারগাঁও, ফার্মগেট, কারওয়ানবাজার, বাংলামোটর, শাহবাগ ও মৎস্য ভবন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বিকেল ৪টায় আগারগাঁও এলাকায় দেখা গেছে, ওসমান হাদির জানাজা শেষে অসংখ্য মানুষ হেঁটে মিরপুরের দিকে গন্তব্যে ফিরছেন। বাস, রিকশাসহ কোনো গণপরিবহন না পেয়ে তারা হেঁটেই গন্তব্যে ফিরছেন। এতে বিজয় সরণি থেকে মিরপুর ১০ এর রাস্তার ডান পাশ পুরোটাই বন্ধ হয়ে পড়ে। রাস্তার পুরো এক পাশে শুধু মানুষের সারি। কোনো একটি বাস বা রিকশা আসলে গন্তব্যে ফেরা মানুষ এতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে অতিরিক্ত রিকশা ভাড়া দিয়েও গন্তব্যে ফিরছেন কেউ কেউ।
এদিকে বিকেলেও বিভিন্ন এলাকা থেকে শাহবাগের দিকে লোকজন আসছিলেন। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে জানাজা শেষে অনেকেই শাহবাগের দিকে আসেন। জানাজা ও দাফন শেষে শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা জনস্রোতে রূপ নেয়। সন্ধ্যার দিকে শাহবাগ থেকে গুলিস্তান, পুরান ঢাকা, মৎস ভবন, মতিঝিলের দিকে হাজারে মানুষ হেঁটে গন্তব্যে ফেরেন।
বিজয় সরণিতে কথা হয় শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা ইব্রাহিম মিয়ার সঙ্গে। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, এমন জানাজায় অংশ নিতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছে। মনে হয় দেশে এর চেয়ে বড় জানাজা আর কোনো দিন হয়নি। জানাজা শেষে বাসায় ফেরার জন্য গাড়ি বা রিকশা পাচ্ছি না। সবাই হেঁটে গন্তব্যে ফিরছেন। আমিও হাঁটছি।

আগারগাঁও এলাকায় কথা হলে মিরপুর-১১ এলাকার বাসিন্দা প্রিয়ন্তি নামের এক নারী বলেন, বাসা থেকে বের হয়ে আগে লাইভে জানাজা দেখেছি। এখন শাহবাগ এলাকায় যাচ্ছি। শহীদ ওসমান হাদির এই অন্তিম দিনে তার কবরের পাশে গিয়ে দূর থেকে দোয়া করে আসবো।
তিনি বলেন, আগারগাঁও পর্যন্ত আসতে কষ্ট হয়নি। এখন কোনো গণপরিবহন পাচ্ছি না। বাসে উঠেছিলাম, কিন্তু মনে হচ্ছে অনেক দেরি হবে। তাই নেমে বাইকের অপেক্ষায় আছি। একটি বাইক পেলেই শাহবাগ যাবো।
সন্ধ্যায় মৎস্য ভবন এলাকায় কথা হলে খিলগাঁও এলাকার বাসিন্দা ফাহিম মিয়া বলেন, শহীদ ওসমান হাদির জানাজা ও দাফনে অংশ নিলাম। এখন বাসায় ফিরছি। তিনি দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন। তিনি আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে জীবন দিয়েছেন। এমন মৃত্যু কয়জনের জীবনে ঘটে।
তিনি বলেন, হাদির হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্বের যে প্রান্তেই থাকুক তাদের দেশে এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে রাজধানীর কারওয়ানবাজার ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর অতিরিক্ত নিরাপত্তা। কারওয়ানবাজারে প্রথম আলোর কার্যালয়ের আশপাশের এলাকায় কয়েক প্ল্যাটুন সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। কারওয়ানবাজারে একটি নির্দিষ্ট এলাকায় সাধারণ মানুষকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। আর প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার নিরাপত্তায় ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল থেকে কাকরাইল মসজিদের সড়ক বন্ধ রয়েছে।
ইএইচটি/এমআইএইচএস/জেআইএম