রাজধানীতে নকল কসমেটিকস কারখানার সন্ধান, আটক ৭
রাজধানীর চকবাজারে নকল ব্র্যান্ডের কসমেটিকসের পাইকারী মার্কেট ও কারখানায় অভিযান চালিয়ে ২০ লক্ষ টাকা মূল্যের দুই ট্রাক নকল কসমেটিকস জব্দ করেছে র্যাব। এ সময় ৭ জনকে আটক করে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে র্যাবের ভ্রাম্যমান আদালত। রোববার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল পর্যন্ত চকবাজারের অবস্থিত খান মার্কেটে এ অভিযাগ চালায় র্যাবের একটি দল।
ভ্রাম্যমান আদালতে সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- মো. দ্বীন ইসলাম (৫৭), দেলোয়ার হোসেন (৪৮), মোঃ শামীম (৪২), হেমায়েত খাঁন (২০), মোঃ সাইদ হোসেন (৩২), ম্যানেজার মো. সামাদ (৪২) ও কর্মচারী ওমর ফারুক (২৭)।
ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ এম আনোয়ার পাশা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন র্যাব-১০ এর মেজর মো. সোহেল হাসান, বিএসটিআই প্রতিনিধি মনির হোসেন।
র্যাব হেডকোয়াটারের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উয়িং এর উপ-পরিচালক মাকসুদুল আলম জানান, রাজধানীর চকবাজারের খান মার্কেটের মালিক সমিতির সভাপতি দীর্ঘদিন থেকে নকল কসমেটিকস তৈরি করে আসছেন। এমন খবরে রোববার র্যাব-১০ এর নেতৃত্বে সেখানে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিত হয়।
এ সময় কারখানা ও মার্কেটের দোকানে অভিযান চালিয়ে নামীদামী ব্রান্ডের নকল শ্যাম্পু, বডি স্প্রে, লোশন, সাবান উদ্ধার করা হয়।
ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ এম আনোয়ার পাশা বলেন, অভিযানকালে দেখা যায় মার্কেটের দোতলায় পাঁচটি দোকানে স্তরে স্তরে সাজানো রয়েছে নামীদামী ব্রান্ডের শতাধিক ধরনের প্রশাধনী সমগ্রি। দেখে বুঝার উপায় নেই যে এগুলো আসল নকল। ৩য় তলার একটি কক্ষে গড়ে উঠেছে কারখানা। এখানে জনসন সাবান তৈরি করা হচ্ছিল।
কারখানার মালিক, মার্কেটের মালিক সমিতির সভাপতি হাজী মফিজ। তিনি অসুস্থ থাকায় প্রতিদিন অল্প সময়ের জন্য মার্কেটে আসেন। তার ছেলে সাইদ হোসেন (৩২) এবং ম্যানেজার সামাদ (৪২) নকল কারখানা দেখাশুনা করেন।
তিনি আরও জানান, মেরিল সাবান পাইকারী হিসেবে ২০ টাকা পিছ কিনে এনে এ কারখানায় ছাচে ফেলে জনসন সাবান তৈরী করা হয়। যার মূল্য ৮৫/-টাকা।
ম্যানেজার সামাদ জানান, মার্কেটের দোতলায় যে পাঁচটি নকল সামগ্রী বিক্রির শোরুম রয়েছে সেগুলোও সভাপতি মফিজের তত্বাবধানে চলে। শোরুম গুলোতে পেন্টিন, হেড এন্ড সোল্ডার, রিজয়েস, সানসিল্ক, ক্লিয়ার, ডাব, গার্ণিয়ার, ভেসলিন প্রভৃতি নামীদামী ব্যান্ডের নকল শ্যাম্পু পাওয়া যায়।
অভিযুক্ত দ্বীন ইসলাম জানান, ব্যবহার করার পর খালি কন্টেইনার সংগ্রহ করে তাতে গার্মেন্টসের লিকুইড সাবান এবং সেন্ট মিশিয়ে তাতে ভরে আসলের মত নকল ষ্টিকার লাগিয়ে পেকিং করা হয়। ৩১০ টাকার মূল্যের পেন্টিন তারা ১০০ টাকায় পাইকারী বিক্রি করে।
এগুলোর গায়ে ৩১০ টাকার নকল ষ্টিকার লাগানো থাকে। কিন্তু অসাধু দোকানদার সব জেনে বুঝে তাদের কাছ থেকে কম দামে এগুলো কিনে নিয়ে গিয়ে খুচরা দোকানে গায়ের মূল্যে অর্থাৎ ৩১০ টাকায় বিক্রি করেন।
মেজর মো. সোহেল হাসান বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীদের সহায়তায় নকল কসমেটিকস কারখানা ও মার্কেট গড়ে উঠেছে। সাধারণ মানুষের পক্ষে নকল কসমেটিকস বুঝা কঠিন।
২০ লক্ষ টাকা মূল্যের ২০ হাজার পিস নকল পন্য সিটি করপোরেশনের ডাম্পিং ষ্টেশনে নিরাপদে ধ্বংস করা হয়েছে। জড়িত অন্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।