কোরআন অবমাননার ঘটনায় জামায়াতের নিন্দা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:০৩ পিএম, ০৬ অক্টোবর ২০২৫

পবিত্র কোরআন মাজিদ অবমাননার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সোমবার (৬ অক্টোবর) জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এক বিবৃতিতে এই প্রতিবাদ জানান।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, গত ৪ আগস্ট নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অপূর্ব পালের ধৃষ্টতাপূর্ণ আচরণের মাধ্যমে পবিত্র কোরআনুল কারিম অবমাননার জঘন্য ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এ ঘটনায় বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানসহ শান্তিকামী সব নাগরিক গভীরভাবে ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ।

তিনি আরও বলেন, কোরআন মাজিদ হচ্ছে আল্লাহ তাআলার কালাম। মানবজাতির জন্য সর্বশেষ ও পরিপূর্ণ জীবনবিধান। এ মহাগ্রন্থের প্রতি অবমাননাকর আচরণ কেবল ধর্মীয় অনুভূতির অবমাননা নয় বরং এটি আল্লাহ তাআলার প্রতি চরম বিদ্রোহ ও ইসলাম ধর্মের ওপর সরাসরি আঘাত। মুসলমানরা পবিত্র কোরআনকে নিজেদের প্রাণের চেয়েও অধিক ভালোবাসে এবং এর অবমাননা কোনো অবস্থাতেই সহ্য করতে পারে না। কেবল ইসলাম নয়- প্রত্যেক ধর্মের অনুসারী তাদের নিজ নিজ ধর্মগ্রন্থকে পরম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় ধারণ করে। অতএব ধর্মগ্রন্থ অবমাননা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন এবং সামাজিক সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও সহাবস্থানের প্রতি ভয়াবহ হুমকি। এমন কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা’ বা ‘অসাবধানতা’ বলে আড়াল করা যায় না।

বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘকাল ধরে আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি, সহনশীলতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের সুন্দর ঐতিহ্য বহন করে আসছে। সম্প্রতি শারদীয় দুর্গোৎসবও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে, যা বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জীবন্ত প্রমাণ। অথচ এ সময় পবিত্র কোরআন অবমাননার মতো ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড দেশের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্টের এক নেপথ্য ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত বহন করছে কিনা- তা রাষ্ট্রীয়ভাবে গভীরভাবে তদন্ত করা প্রয়োজন।

আরও পড়ুন
কোরআন অবমাননা দাঙ্গা বাঁধানোর উসকানি: শায়খ আহমাদুল্লাহ 
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোরআন অবমাননায় শিবিরের তীব্র ক্ষোভ 
কোরআন অবমাননা দাঙ্গা বাঁধানোর উসকানি: শায়খ আহমাদুল্লাহ 

তিনি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকাকেও প্রশ্নবিদ্ধ বলে মন্তব্য করেন এবং বলেন, তাদের উচিত ছিল ঘটনাটির প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা, যেন ভবিষ্যতে কেউ এমন দুঃসাহস দেখাতে না পারে।

তিনি সতর্ক করে বলেন, কেউ যদি অপরাধীকে রক্ষার জন্য বা ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে কৃত্রিমভাবে ‘মানসিক রোগী’ প্রমাণের চেষ্টা করেন, তবে তা হবে ন্যায়বিচারের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন ও অপরাধের প্রশ্রয় দেওয়া। এর পরিণতি দেশ ও জাতির জন্য ভয়াবহ হতে পারে।

তিনি বলেন, পবিত্র কোরআন অবমাননার এই জঘন্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত অপূর্ব পালকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য আমি সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি, যেন ভবিষ্যতে কেউ এমন ধৃষ্টতা করার সাহস না পায়।

একইসাথে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, আইনের প্রতি আস্থা রাখুন, কেউ যেন উসকানিতে পা দিয়ে আইন নিজের হাতে তুলে না নেন। শান্তিপূর্ণ ও আইনানুগ উপায়ে প্রতিবাদ জানান, যেন বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতির ঐতিহ্য অটুট থাকে এবং আল্লাহর বিধানের প্রতি শ্রদ্ধা অক্ষুণ্ন থাকে।

আরএএস/এমআরএম/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।