গাজী আশরাফ লিপুর স্মৃতিতে আইসিসি ট্রফি জয়ের টুকরো টুকরো ছবি

আরিফুর রহমান বাবু
আরিফুর রহমান বাবু আরিফুর রহমান বাবু , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১০:৪৬ পিএম, ১৩ এপ্রিল ২০২০

এখন টিম বাংলাদেশ ওয়ানডেতে প্রতিষ্ঠিত শক্তি । বিশ্বকাপের মত আসরে সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন নিয়ে অংশ নেয়। স্বপ্ন পূরণ না হলেও একাধিক বড় দলকে হারায়। টেস্ট আর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও দিনকে দিন উন্নতি ঘটছে। বাংলাদেশের যুবারা এখন অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটের বিশ্ব সেরা।

বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই অবস্থানটা রাতারাতি হয়নি। একটা দীর্ঘ লড়াই, সংগ্রাম, লক্ষ্য এবং পরিকল্পনার ফসল। যার বীজ অঙ্কুরিত হয়েছিল ১৯৭৯ সালে। এরপর ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি বিজয় দিয়ে শুরু হয় নতুন পথের যাত্রা। সেই আইসিসি ট্রফির মিশনটা আসলে কেমন ছিল?

স্বল্প অর্থ, ছোট্ট বাজেট আর সীমিত অবকাঠামো এবং নেহায়েত অপ্রতুল আনুসাঙ্গিক সুযোগ সুবিধা নিয়েই শুরু হয়েছিল আইসিসি ট্রফির প্রস্তুতি।

সেই প্রস্তুতি পর্বের পরতে পরতে যিনি লতাপাতার মত জড়িয়ে ছিলেন, তিনি গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। জাতীয় দলের এই সাবেক অধিনায়ক ছিলেন ৯৭’র আইসিসি ট্রফিতে টিম বাংলাদেশের ম্যানেজার। এখনকার মত ৮-৯ জান ভিনদেশি কোচিং স্টাফ তখন ছিল না। হেড কোচ গর্ডন গ্রিনিজ একাই ছিলেন। আর ম্যানেজার গাজী আশরাফ হোসেন লিপু ছিলেন তার সহকারীর ভূমিকায়।

ওই সময়ের প্রেক্ষাপট, প্রস্তুতি আর বাস্তবায়ন- সব কিছুর সাথেই লিপু ছিলেন অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। কেমন ছিল ওই সময়ের পথচলা? কিভাবে কোচ হয়ে এলেন গর্ডন গ্রিনিজ? কোথায় হয়েছে টিম বাংলাদেশের প্রস্তুতি? প্রস্ততির ধরণই বা কেমন ছিল? এখনকার মত কম্পিউটার ও ভিডিও অ্যানালিস্ট কিছুই ছিল না তখন।

মালয়েশিয়ায় গিয়ে গেম প্ল্যান কিভাবে করা হতো? প্রতিপক্ষ দলের শক্তি-সামর্থ্য আর উইকেট সম্পর্কে কিভাবে পূর্ব ধারণা জন্মাতো? এসব বিষয় সম্পর্কে ধারণা দিয়েছেন গাজী আশরাফ হোসেন লিপু।

জাগো নিউজের পাঠকদের সামনে তা তুলে ধরা হলো। লিপুর মুখেই শোনা যাক, সেই সময়ের গল্প, ইতিহাস-

gordon

গর্ডন গ্রিনিজের কোচ হওয়ার ঘটনা

এটা ১৯৯৬ সালে ঘটনা। আমরা এসিসি ট্রফি খেলতে গেছি মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে। সেখানেই একদিন সম্ভবত কেলাব আমান (আসলে ক্লাব আমান, মালয়েশিয়ায় এভাবেই উচ্চারণ করে) হঠাৎ দেখি আশরাফুল ভাই (সৈয়দ আশরাফুল হক, সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার, বিসিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও এসিসির প্রধান নির্বাহী) একজন সুঠামদেহী কোকড়ানো চুলের সুঠাম দেহী ভদ্রলোকের সাথে গল্প করছেন। আমি একটু দুরে ছিলাম। হঠাৎ আমাকে ডাক দিলেন আশরাফুল ভাই।

বলে উঠলেন, দেখো তো এ ভদ্রলোককে চেনো কি না? আমি বললাম হ্যাঁ চিনি। গর্ডন গ্রিনিজ। গর্ডন তখন একটি ব্যক্তিগত কাজে মালয়েশিয়ায় এসেছিলেন। শর্টস পরা। সুঠাম শরীর। সত্যি বলতে কি, তার আগে আমি গর্ডন গ্রিনিজকে সামনে থেকে দেখিনি। টিভিতে দেখেছি শুধু। আশরাফুল ভাই খুব জলদি বলে উঠলেন, তিনি যদি তোমাদের জাতীয় দলের কোচ হয়, তাহলে কেমন হবে? আমি তো আকাশ থেকে পড়লাম। বললাম দারুণ।’

আশরাফুল ভাই আমাকে বললেন, এতবড় ক্রিকেট পার্সোনালিটি। পারবো না কিনা সিওর না। আগাম বলা ঠিক হবে না। তোমাকে বললাম। আর কাউকে বলো না। পরে দেখি সেই গর্ডন গ্রিনিজই হলেন আমাদের কোচ এবং সেটা যে আশরাফুল ভাইয়ের মাধ্যমে তা বোধকরি আর বলার দরকার নেই। আমি ভাবলাম বাহ! খুব ভাল হবে। আমি যদি তখন ম্যানেজমেন্টের পার্টে থাকি, তাহলে তো একসাথে কাজ করার সুযোগ হবে।

Team

এসিসি ট্রফি খেলে মালয়েশিয়ার আবহাওয়া আর উইকেট সম্পর্কে পূর্ব ধারণা

আইসিসি ট্রফি খেলতে যাওয়ার ছয়-সাত মাস আগে বাংলাদেশ জাতীয় দল এসিসি ট্রফি খেলতে গিয়েছিল মালয়েশিয়ায়। তখনই মালয়েশিয়ার আবহাওয়া, মাঠ ও উইকেট সম্পর্কে পূর্ব ধারণা পাই। প্রায় প্রতিদিন দুপুরের দিকে বৃষ্টি আসে। আবার থেমে যায়। কিন্তু ভারি বৃষ্টিতে সব ভিজে একাকার হয়ে যায়। স্পিনারদের বল গ্রিপ করায় সমস্যা হতে পারে। কোন মাঠের আকার কেমন? কোনটা ওভাল শেপের, কোনটা সামনে ও দুদিকে প্রায় সমান সমান- এসব ধারণা আগেই জন্মেছিল। সেগুলো মূল আইসিসি ট্রফির সময় যথেষ্ঠ কাজে দিয়েছে।

বিকেএসপিতে দৈনিক খাবারের জন্য মাত্র ১৭০ টাকা!

গর্ডন গ্রিনিজ কোচ হয়ে আসার পর আমাদের প্রথম সেশনটি হলো প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে। আমরা গর্ডনের সাথে স্থানীয়ভাবে কোচিং করানোর জন্য শ্রদ্ধেয় জালাল ভাই (জালাল আহমেদ চৌধুরী) আর ওসমান ভাইকে (ওসমান খান) যুক্ত করলাম। তখন কোন জিমনেশিয়াম ছিল না। এখন যেটা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে, সেখানে গিয়ে ফিজিক্যাল ট্রেনিং করতাম।

এর অল্প ক’দিন পরই চলে গেলাম বিকেএসপিতে আবাসিক ক্যাম্পে। বিকেএসপি এখনকার মত এত আধুনিক সুযোগ সুবিধা ছিল না। এখনতো আন্তর্জাতিক মানের আবাসন ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে। তখন যে খুব খারাপ ছিল, তা বলবো না। তবে এখনকার মত বিকেএসপির আকার অত বড় ছিল না। আবাসন ও খাবারের সুযোগ সুবিধাও তত ভাল ছিল না। তারপরও দেশের ভিতরে সেটাই ছিল বেস্ট পসিবল অপশন।

Lipu

সাফল্যর আগে প্রস্তুতিটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয়, বিকেএসপির ওই আবাসন ট্রেনিং ক্যাম্পের দিনগুলো আমাদের দলের বন্ধনকে অনেক দৃঢ় করেছিল। সবার মাঝে একটা আন্তরিক, হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। একটা সম্প্রীতি ও সংহতি জন্মেছিল।

আমাদের বাজেট করা হয়েছিল ১৭০ টাকা। আমরা ঠিক কতটুক কার্বোহাইড্রেড খাচ্ছি। খাবারের স্বাস্থ্য গুণ কি? তা যাচাইয়েরও কোন মানদন্ড ছিল না। আমরা আমাদের মত ভাত, মাছ, মাংস, শাক-সব্জী, ফলমুল, মিষ্টি এসবই খেতাম।

খাবার দাবারের ব্যপারে ওসমান ভাই সব সময় নজর রাখতেন। সব সময় যাতে ভাল মানের পাওয়া যায়। বোর্ডের স্টাফ খোকন ছিল আমাদের সাথে। প্লেয়াররা প্রতিদিন প্র্যাকটিসের পর টেলিফোন বুথে কয়েন ভরে যার যার বাসায় পরিবারের মানুষদের সাথে। বুলবুল তখন তার গার্ল ফ্রেন্ডের সাথে আলাপ করতো। এগুলো নিয়ে মজা হতো। তখন কোন ল্যাপটপ ছিল না। আমি গর্ডনের সাথে কথা বলে নোটিশ বোর্ডে টানিয়ে দিতাম।

কে কোন নেটে কতক্ষণ ব্যাট করবে? কে বা কতজন নতুন বলে বোলিং করবে। স্পিনাররা কখন আসবে- এসব লিখে দিতাম বোর্ডে। ক্রিকেটাররা গিয়ে তা পড়ে জানতো, কার কি দায়িত্ব ও কর্তব্য। আমার মনে হয় প্র্যাকটিস সেশনে সুযোগ সুবিধা হয়তো কম ছিল। তবে ট্রেনিং সিডিউলটা ছিল সাজানো গোছানো। আর আমরা প্রতিদিন প্র্যাকটিসের পর নিজেরা সবাই বসতাম। বসে আলাপ আলোচনা করতাম।

সাইফুলের রুমে সাপ!

বিকেএসপিতে আবাসিক ট্রেনিং ক্যাম্প হয়েছে, তাতে সাপের দেখা মেলেনি, তা হতেই পারে না। বিশেষ করে ২০০০ সালের আগে সাপ-খোপের উপদ্রব ছিল বেশ। ট্রেনিং শেষে নিজ নিজ রুমে ফেরার পথে হঠাৎ ফনা তোলা সাপ চোখে পড়েছে কয়েকবারই। তবে রুমে সাপ, এমন ঘটনা ঘটেছে একবারই। সেটা পেসার সাইফুলের রুমে। তবে ময়মনসিংহের ছেলে সাইফুল অবশ্য সাপ দেখে ভড়কে যায়নি।

win win

এনামুল হক মনির গাড়ির নিচে পড়তে বসেছিল রফিক!

বিকেএসপিতে দীর্ঘ আবাসিক ট্রেনিং সেশনের দিনগুলো কেটেছে মোটামুটি ভালই। তবে একদিনের ঘটনা বিশেষ দাগ কেটে আছে মনে। শুধু দাগ কেটে আছে বললে কম বলা হবে। মনে হলো, এখনো শরীরে কাটা দিয়ে ওঠে। শিউরে উঠি। এনামুল হক মনির গাড়ির নিচে পিষ্ট হতে যাচ্ছিল বাঁ-হাতি স্পিনার মোহাম্মদ রফিক।

আমরা বিকেএসপিতে একটি জায়গায় বসে গল্প গুজব করছিলাম। সামনেই এনামুল হক মনি আর আতহার আলির গাড়ি পার্ক করা ছিল। মনি এসে গাড়ির স্টার্ট দিল। নতুন অটো গিয়ারের গাড়ি। বলা নেই কওয়া নেই। ধেই ধেই করে পিছনে চলে আসলো। ঠিক গাড়ি যেই লাইনে পিছনে বুলেটের গতিতে আসছিল, ঠিক সেই জায়গায় বসা ছিল রফিক। গর্ডন গ্রিনিজ তাকে এক ঝটকায় সরিয়ে নিল। না হয় রফিকের শরীর থেতলে যেত ওইদিন মনির গাড়ির নিচে পড়ে।

নাদির শাহ যখন অ্যানালিস্ট

আমদের এখন কত সুবিধা। আট-নয়জন কোচিং স্টাফ। কম্পিউটার অ্যানালিস্ট। ভিডিও অ্যানালিস্ট। তখন তো কিছুই ছিল না। আমার শুধু কেনিয়া সম্পর্কে মোটামুটি স্বচ্ছ ধারনা ছিল। আর নেদারল্যান্ডস, স্কটল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড সম্পর্কে তেমন ধারণা ছিল না।

তাই আমাদের ম্যাচ যেদিন থাকতো না, সেদিন প্র্যাকটিসের আগে বা পরে সময় বের করে আমি আর গর্ডন দু’জন মিলে অন্য দলের খেলা দেখতে যেতাম। তাতে করে পূর্ব ধারণা মিলতো। কোন দলের গঠন শৈলি কেমন? কোন দেশের ব্যাটিং শক্তিশালী আর কোন দলের বোলিংয়ের ধার বেশি বোঝা যেত।

team

এক সময় সেই কাজে লাগানো হলো নাদির শাহকেও (আম্পায়ার)। আয়ারল্যান্ড আর স্কটল্যান্ড সম্পর্কে ধারণা পেতে তাকে দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হলো। তার ক্রিকেট বোধ বেশ। তাই নাদিরকে বলা হলো, ওই দুই দল সম্পর্কে খুঁটিনাটি তথ্য নিয়ে আসবা। নাদির ঠিক এনেছিল। আমরা জেনেছিলাম কোন ব্যাটসম্যান বাঁ-হাতি? কে কে ডানহাতি? কার শক্তির জায়গা কোনটা? কার দূর্বলতা কোথায়?

ক্যাচ মিস আর সেট হয়ে আউট হয়ে ফিরলে জরিমানা!

এখন তো পুরস্কার, বোনাসের ছড়াছড়ি। তখন ক্রিকেট বোর্ড অত সমৃদ্ধ-ধনী ছিল না। টাকা-পয়সা কম ছিল। সীমিত পরিসরের সব কিছু। বাজেটও ছিল কম। এর মধ্যেও ক্রিকেটারদের উজ্জীবিত করতে কিছু বাড়তি বোনাস দেয়া হতো।

কিন্তু তারচেয়ে বড় কথা কোচ গর্ডন গ্রিনিজ বোনাসের পাশাপাশি জরিমানা প্রথাও চালু করেছিলেন। ক্রিকেটারদের পরিস্কার বলা ছিল, লোপ্পা ক্যাচ বা দু’হাতে নিয়ে ক্যাচ ফেলে দিলে জরিমানা দিতে হবে। অবশ্য সেটা সহনীয় ছিল। দৈনিক ভাতার একটা ছোট্ট অংশ। পাশাপাশি ম্যাচে সেট হয়ে কেউ আউট হলেও তাকে জরিমানা গুনতে হতো। আর এর বাইরে কোচ গর্ডন গ্রিনিজ নিজ পকেট থেকেও ভাল খেলার জন্য পুরস্কার দিতেন।

আয়ারল্যান্ড আর হল্যান্ড ম্যাচে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফোন

একটা কথা না বললেই নয়, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিন্তু বরাবরই ক্রীড়া অনুরাগি। ক্রিকেট ভালবাসেন। জাতীয় দলের খোঁজ খবর রাখেন। সেটা যে শুধু এখন, তা নয়। আমরা যখন ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি খেলেছি দুদিন দুটি ভাইটাল ম্যাচে তিনি ঢাকা থেকে টেলিফোনে অধিনায়ক আকরাম, কোচ গর্ডন গ্রিনিজ আর আমার সাথে কথা বলেন। জানতে চান, ম্যাচের কি অবস্থা? বৃষ্টিতে খেলা না হলে কি হবে? আমাদের অনুপ্রাণিত করে, সাহস জুগিয়ে এবং উদ্দীপক কথা বলে রেখে দেন।

আকরাম-নান্নু যে ম্যাচে পরে নামতে চেয়েছিল!

ঢাকা থেকে মালয়েশিয়া যাত্রার আগে সভাপতি সাবের ভাই (তখনকার বিসিবি সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী) আমাদের বলে দিয়েছেন দলের যে কোন সিদ্ধান্ত অধিনায়ক আকরাম, সহ-অধিনায়ক বুলবুল (আমিনুল ইসলাম), কোচ গর্ডন গ্রিনিজ আর আপনি মিলে নিবেন। বলেছিলাম, যদি কোন ইস্যুতে পক্ষ-বিপক্ষ সমান হয়ে যায় তাহলে? সাবের ভাই বলেছিলেন, তাহলে গর্ডনের সিদ্ধান্তই হবে চূড়ান্ত।

saber

কিন্তু আইসিসি ট্রফিতে একদিন আমি আমার একার সিদ্ধান্ত দিয়েছিলাম। সেটা হলো, নেদারল্যান্ডেসের সাথে মাত্র ১৫ রানে ৪ উইকেট পতনের পর অধিনায়ক আকরাম এসে বললো, লিপু ভাই ব্যাটিং অর্ডারটা বদলানো যায় না। আমি আর নান্নু ভাই এখন না গিয়ে পরে যাই। এ কঠিন বিপদে আমরা দু’জন আউট হয়ে গেলে আর সামাল দেয়ার কেউ থাকবে না।

তারচেয়ে বরং নীচ থেকে কাউকে আমাদের আগে ব্যাটিংয়ে পাঠালে হয় না? পরিষ্কার মনে আছে, আমি সোজা বলে দিলাম, নাহ। যা হবার হবে। এই ম্যাচ বাঁচাতে হলে তোমাকে আর নান্নুকেই দায়িত্ব নিতে হবে এবং সেটা এখন গিয়েই। পরে গেলে আর হবে না। আমি জানি তোমরা আমাদের দেশের প্রচলিত ধারা মেনেই বলেছো।

আমাদের দেশের ক্রিকেটে তখন একটা রীতি ছিল। শুরুতে মড়ক লাগলে। মিডল অর্ডারে অতি নির্ভরযোগ্য কাউকে না নামিয়ে নীচ থেকে কাউকে পাঠাতে। তবে কেন যেন মনে হচ্ছে এই ম্যাচে সে চিরায়ত ফর্মুলা খাটবে না। তাই মন স্থির করো। তোমাদেরই যেতে হবে। সৃষ্টি কর্তাকে অনেক ধন্যবাদ। আকরাম ম্যাচ শেষ করে বিজয়ীর বেশে ফিরেছিল। আর নান্নুও প্রাথমিক বিপর্যয় এড়াতে রেখেছিল দারুণ ভূমিকা। ওই জুটিতেই শুরুর ধাক্কা সামলে ওঠা সম্ভব হয়। আমরা ডাচদের কঠিন বাঁধা টপকে পৌঁছে যায় সেমিফাইনালে।

এআরবি/আইএইচএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।