জবি ছাত্রদল নেতা খুন, ১৬ ঘণ্টা পরও মামলা নেয়নি পুলিশ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৯:০৬ এএম, ২০ অক্টোবর ২০২৫

পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল নেতা মো. জোবায়েদ হোসেনের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনার ১৬ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত থানায় মামলা হয়নি, গ্রেফতার হয়নি কেউ।

রোববার (১৯ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১টা থেকে নিহতের পরিবার মামলা করার চেষ্টা করলেও সোমবার (২০ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্তও বংশাল থানায় মামলা দায়ের হয়নি।

নিহত জোবায়েদের পরিবার জানায়, তারা জোবায়েদের ছাত্রী, তার বাবা-মা, এবং তাদের পরিচিত মাহির রহমান ও মো. নাফিস নামের একজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করতে চাইলে, বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম তা নিতে অস্বীকৃতি জানান।

আরও পড়ুন:

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ ছুরিকাঘাতে নিহত
জুবায়েদ হত্যায় জড়িত দুজন প্রাথমিকভাবে শনাক্ত, চলছে অভিযান
জুবায়েদ হত্যার বিচার দাবিতে রাবিতে বিক্ষোভ মিছিল

নিহতের বড় ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত অভিযোগ করে বলেন, আমরা ওই ছাত্রী, তার বাবা-মাসহ পাঁচজনের নামে মামলা দিতে চেয়েছি। কিন্তু ওসি সাহেব বলেন, এতজনের নামে মামলা না দিতে। তিনি বলেন, মেয়ের বাবা-মায়ের নাম দিলে মামলা নাকি হালকা হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা চাই তাদের নাম থাকুক। আমার ভাই হত্যার বিচার চাই।

পরিবারের অন্য সদস্যরা জানান, রাত ১টা থেকে সকাল পর্যন্ত থানায় অবস্থান করেও তারা মামলা করতে পারেননি। রাত ১টা থেকে ৩টার মধ্যে মামলার খসড়া তৈরি করা হলেও, ওসি উপস্থিত না থাকায় বিলম্ব হয়। পরে ওসি এসে আসামির সংখ্যা কমানোর পরামর্শ দেন।

এ বিষয়ে ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, যাদের নামে মামলা দিতে চায়, দিতে পারবে। তবে বলেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে।

এদিকে, হত্যার দ্রুত বিচার ও আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা বংশাল থানার সামনে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন এবং তাঁতীবাজার মোড় অবরোধ করে রাখেন।

রোববার রাত ১১টার দিকে ওই ছাত্রীকে পুলিশ হেফাজতে নেয় এবং দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে থানায় আনা হয়। তবে এখন পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি পাওয়া যায়নি।

এর আগে রাত ১০টা ৫০ মিনিটে জোবায়েদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মিডফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়।

জানা গেছে, জোবায়েদ হোসেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। পাশাপাশি তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির সভাপতি এবং শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য ছিলেন।

গত এক বছর ধরে তিনি পুরান ঢাকার আরমানিটোলার ১৫, নূরবক্স লেনের ‘রৌশান ভিলা’ নামের বাসায় একজনকে প্রাইভেট পড়াতেন।

রোববার বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে ওই বাসার তৃতীয় তলায় ছুরিকাঘাতে নিহত হন জোবায়েদ। বাসার নিচতলা থেকে তিন তলা পর্যন্ত রক্তের দাগ পাওয়া যায় এবং তিন তলার সিঁড়িতে পড়ে থাকতে দেখা যায় জোবায়েদের মরদেহ।

টিএইচকিউ/এসএনআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।