পূজার চাল নিয়ে চালবাজি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কিশোরগঞ্জ
প্রকাশিত: ১০:৫৩ এএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
কটিয়াদি স্থানীয় সরকারি খাদ্য গুদাম/ছবি: জাগো নিউজ

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে পূজামণ্ডপগুলোতে এ বছর সরকারি বরাদ্দের চালের পরিবর্তে টাকা দেওয়া হয়েছে। সেটিও চালের বাজার মূল্যের অর্ধেক। বাকি টাকা একটি প্রভাবশালী চক্র ভাগাভাগি করে নিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় পূজা উদ্যোক্তারা।

জানা যায়, গত ১৪ সেপ্টেম্বর উপজেলার প্রতিটি পূজামণ্ডপে ৫০০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেয় প্রশাসন। বাজারমূল্য অনুযায়ী এর মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু পূজামণ্ডপগুলোকে ১৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ৪২টি পূজামণ্ডপ থেকে প্রায় ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় সূত্র বলছে, প্রশাসন বরাদ্দ দিলেও খাদ্য কর্মকর্তারা কালোবাজারিদের সঙ্গে যোগসাজশ করে চাল বিতরণে বিলম্ব করেন। পরে তড়িঘড়ি করে মণ্ডপের সভাপতি ও সম্পাদকদের গুদামে ডেকে এনে ফাঁকা রেজিস্ট্রারে সাক্ষর করিয়ে প্রতি ডিওর বিপরীতে ১৫ হাজার টাকা ধরিয়ে দেন। এ কাজে পূজা উদযাপন কমিটির কয়েকজন প্রভাবশালী সদস্য খাদ্য কর্মকর্তাদের সহায়তা করেছেন।

jagonews24

  • ভুক্তভোগীদের অভিযোগ

বর্মনপাড়া পূজা মণ্ডপের সভাপতি শীতল চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘গুদামে নিয়ে কর্মকর্তা বলেন, সাক্ষর করে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে যান। বরাদ্দের চাল দেখতেও দেওয়া হয়নি।’

আনন্দময়ী যুব সংঘের সভাপতি উষা রঞ্জন সরকার জানান, ‘পূজার ব্যস্ততার মধ্যে চাল বুঝে নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই বাধ্য হয়েই টাকা নিতে হয়েছে।’

ফুটন্ত কলি যুব সংঘের সভাপতি লিটন রবি দাসের অভিযোগ, ‘পাশের জেলায় একই চাল ২২-২৫ হাজার টাকায় বিক্রি হলেও আমরা ১৫ হাজারই নিতে বাধ্য হয়েছি।’

আরও পড়ুন
ট্রেন ছাড়তে দেরি, ক্ষুব্ধ যাত্রীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ
পুলিশ হেফাজতে যুবকের মৃত্যু, ক্যাম্প ইনচার্জ গ্রেফতার

  • প্রশাসনের বক্তব্য

কটিয়াদী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিটি পূজামণ্ডপে খাবারের জন্য ৫০০ কেজি চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সভাপতি ও সম্পাদক ডিও সংগ্রহের পর বাকি কাজ খাদ্য বিভাগের।’

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কনক কান্তি দেবনাথ বলেন, ‘চালের পরিবর্তে টাকা লেনদেনের বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাইদুল ইসলাম বলেন, ‘চালের পরিবর্তে টাকা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বছর কিশোরগঞ্জ জেলার ৩৯৪টি পূজামণ্ডপে ১৯৭ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয় সরকার। এর মধ্যে কটিয়াদী উপজেলার ৪২টি পূজামণ্ডপে বরাদ্দ ছিল সাড়ে ২১ মেট্রিক টন চাল। ধর্মীয় উৎসবের পবিত্রতায় সিন্ডিকেটের এই হস্তক্ষেপ রোধে প্রশাসনের আরও কঠোর পদক্ষেপ চান এলাকাবাসী।

এসকে রাসেল/এমএন/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।