দক্ষিণাঞ্চলের তরমুজে জমজমাট মুক্তারপুর আড়ত

জমে উঠেছে ধলেশ্বরীর তীরে মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর এলাকার তরমুজের বিশাল বাজার। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার তরমুজের পসরা বসে এখানকার আড়তগুলোতে। নদী ও সড়কপথে তরমুজ আসে এই বাজারে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ বাজার থেকে প্রতিদিন বেচাকেনা হচ্ছে ৩০-৩৫ হাজার তরমুজ, লেনদেন হচ্ছে অর্ধকোটি টাকার বেশি।
সরেজমিনে দেখা যায়, ট্রলার ও ট্রাকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের পটুয়াখালী, বরিশালসহ বিভিন্ন জেলা থেকে তরমুজ আসছে মুক্তারপুরের আড়তে। তরমুজে সয়লাব ধলেশ্বরীর তীরের এই পাইকারি বাজার। ক্রেতাদের হাঁকডাকে ভোর থেকে জমে উঠছে বেচাকেনা। গরম ও রমজান কেন্দ্র করে বেড়েছে মৌসুমি এই ফলের চাহিদা। বিভিন্ন আকার অনুযায়ী প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪শ’ টাকা পর্যন্ত।
আড়ত সংশ্লিষ্টরা জানান, মুক্তারপুরের ১০টি আড়তে বর্তমানে প্রতিদিন ৩০-৩৫ হাজার তরমুজ কেনাবেচা হচ্ছে। পাইকারি কিনে স্থানীয় বাজারসহ নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা, নরসিংদী ও বিভিন্ন জেলার বাজারে বিক্রি করেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।
আড়তদার মো. ইব্রাহিম বলেন, ১০টি আড়তে দৈনিক ৩০-৩৫ হাজার তরমুজ বেচাকেনা হচ্ছে। ভরপুর সিজনে ৫০-৬০ হাজার পিস বিক্রি হবে। তখন কোটি টাকার বেচাকেনা হবে। সকাল ৬-৭টা থেকে বেচা-কেনা শুরু হয়ে চলে বেলা ১১-১২টা পর্যন্ত। আবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত বেচাকেনা হয়।
মায়ের দোয়া ফল ভান্ডারের মালিক মো. আরিফ হোসেন জানান, আমার আড়ত থেকে প্রতিদিন এখন ৩-৪ ট্রাক তরমুজ বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি পিস তরমুজে বেড়েছে ২০-১০০ টাকা পর্যন্ত। পাইকারি বাজার থেকে কেনা তরমুজ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে দ্বিগুণ দামে। পাইকারিতে কৃষকরা কিছুটা লাভবান হলেও বেশি লাভবান হচ্ছেন মধ্যস্বত্বভোগীরা। তবে তাদেরও রয়েছে নানা অজুহাত।
পটুয়াখালী থেকে তরমুজ নিয়ে আসা কৃষক মো. সোহরাব হাওলাদার বলেন, প্রথমে ১৫শ তরমুজ আনছিলাম, পৌনে দুই লাখ টাকায় বিক্রি করছি। এখন মালের চাহিদা বেশি, তাই রেটও বেশি। কৃষকরা লাভবান হচ্ছে কিছুটা।
এদিকে পাইকার মো. মিলন মিয়া বলেন, শুক্রবার যেটা কিনেছি ৩২০ টাকা সেই তরমুজ আজ কিনলাম ৪শ’ টাকা। কাজেই আমাগো খুচরা বাজারে খরচসহ আরও বেশি দামে বিক্রি করতে হইবো। আমাগোতো লাভ কইরা খাইতে হবে।
আরেক পাইকার ইমদাদ মিয়া বলেন, গরমের সঙ্গে খুচরা-পাইকারি সব বাজারে তরমুজের চাহিদা বেশি। তাই দামও বেশি পড়ছে।
মুন্সিগঞ্জ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুস সালাম বলেন, তরমুজের বাজার মনিটরিং চলছে, মধ্যস্বত্ত্বভোগী আছে কিনা সেটি দেখা হচ্ছে। এরপরও কোথাও যদি কোনো অনিয়ম হয় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া তরমুজের দাম নির্ধারণ করা নেই, সেক্ষেত্রে ক্রেতা-বিক্রেতারাই দাম নির্ধারণ করেন। ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য মনিটরিং চলবে।
এফএ/জেআইএম