মুকুলে চোখ জুড়ালেও গুটিতে হতাশ

সোহান মাহমুদ সোহান মাহমুদ , চাঁপাইনবাবগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৮:১৮ পিএম, ৩১ মার্চ ২০২৩

চলছে চৈত্র মাস। এরইমধ্যে গাছে গাছে আসতে শুরু করেছে আমের গুটি। তবে গত বছরের তুলনায় ফজলি ও আশ্বিনা আমের গাছে মুকুল বেশি এলেও তেমন গুটি নেই। এতে আমের ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা।

কৃষি বিভাগ বলছে, বৃষ্টি কম হওয়ায় আম ঝরে যাচ্ছে। তবে আমরা এখনো আশাবাদী প্রয়োজনের উপযুক্ত আম উৎপাদন হবে।

সরেজমিনে ইসলামপুর, রানিহাটি, কানসাট, শিবগঞ্জ, মনকষা, ভাঙ্গাব্রিজ, শ্যামপুর, খাষেরহাট, চামাবাজার, মুসলিমপুরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফজলি, আশ্বিনা, খিরসাপাত, লক্ষণভোগ, আম্রপালি, বারি-৪, গোপালভোগসহ সব গাছেই প্রচুর মুকুল আসে এবার। সেই খুশিতে পরিচর্যাও করেন চাষিরা। তবে গত ২০ মার্চ হঠাৎ রাতে বৃষ্টি হয়। এতে আমের জন্য ভালো হবে আশা করে দু্শ্চিন্তামুক্ত ছিলেন চাষিরা। কিন্তু বৃষ্টির পর থেকেই আমের গুটি ঝরতে থাকে। এখন দেখা যাচ্ছে ফজলি, আশ্বিনাসহ কয়েক জাতের আমের গাছে পর্যাপ্ত গুটি নেই। এতে আমের ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে চাষিদের।

শ্যামপুর ইউনিয়নের আমচাষি এনামুল হক বলেন, আমার এবছর কয়েক জাতের আম বাগান রয়েছে। এর মধ্যে লক্ষণভোগ ও খিরসাপাত আমে অনেক গুটি রয়েছে। কিন্তু আশ্বিনা ও ফজলি আমের মুকুলে গুটি খুবই কম। একেবারে নেই বললেই চলে। এখনো মুকুল ঝরে পড়ে যাচ্ছে। এতে ফজলি ও আশ্বিনা আমের ফলন নিয়ে শঙ্কায় রয়েছি।

রানিহাটি এলাকার কাউসার আলী নামে এক আমচাষি বলেন, আমার প্রতিটি গাছে প্রচুর মুকুল হয়েছিল। তাই দেখে পরিচর্যাও শুরু করেছিলাম। এতে আমার অনেক টাকা খচর হয়ে গেছে। কিন্তু এখন দেখছি আমের গুটি নেই।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ম্যাংগো ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব আহসান হাবিব বলেন, আমার এ বছর ব্যানানা ম্যাংগো, আম্রপালিসহ কয়েক জাতের আম গাছ রয়েছে। সব গাছে মুকুলও ভালো হয়েছিল। কিন্তু কয়েকদিন আগে থেকে আমের গুটি ঝরে যাচ্ছে। বিশেষ করে আশ্বিনা ও ফজলি আমের গাছে যথেষ্ট গুটি নেই। এছাড়াও আম্রপালি গাছেও গুটি কম। এতে আমের ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি।

শিবগঞ্জ ম্যাংগো প্রডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খান শামীম বলেন, কয়েক বছর থেকেই আমচাষিরা বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এবারও প্রায় সব গাছের আমের গুটি ঝরে যাচ্ছে। তবে বেশি গুটি ঝরে গেছে আশ্বিনা ও ফজলি আমের।



তিনি বলেন, সরকারিভাবে সব কৃষি ফসলেই ক্ষুদ্র ও মাঝারি চাষিদের জন্য প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আমচাষিদের জন্য কোনো প্রণোদনা নেই। তাই আমাদের আমচাষিদের দাবি আমাদের জন্যেও প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হোক।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক পলাশ সরকার বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে বেশ কিছু আম বাগান রয়েছে যেগুলোতে সেচ দেওয়ার সুযোগ নেই। এতে কিছু আম ঝরে যাচ্ছে। তবে এখনো আমাদের আশা আছে যে এবছর আম উৎপাদন অনেক বেশি হবে। কারণ মুকুল এবার অনেক বেশি এসেছিল।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৩৭ হাজার ৮৫৫ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। এবছর যার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন।

এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।