মিরপুরে অগ্নিকাণ্ড: এখনো উড়ছে ধোঁয়া, ভিড় শ্রমিকদের
রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে পোশাক কারখানা ও রাসায়নিকের গুদামের আগুন পুরোপুরি নির্বাপণ হয়নি। ঘটনাস্থল থেকে এখনো ধোঁয়া উড়ছে।
ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগুন নিয়ন্ত্রণে আছে, তবে এখনো পুরোপুরি নির্বাপণ হয়নি। কেমিক্যালের আগুন কিছুটা জটিল। এ কারণে সময় নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে।
এদিকে পুরে যাওয়া রাইজিং ফ্যাশন কারখানার শ্রমিকরা ঘটনাস্থলে ভিড় করছেন। অনেকেই এসেছেন কারখানা দেখতে, আবার কেউ কেউ এসেছেন কারখানা খুলেছে কি না তা দেখতে।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. শাহজাহান সিরাজ বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আছে, তবে এখনো নির্বাপণ হয়নি। কারণ কেমিক্যালের আগুন অন্যান্য আগুন থেকে জটিল। কেমিক্যালের আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।
উপস্থিত শ্রমিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, কারখানার দ্বিতীয় ও তৃতীয়তলা থেকে ১৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই ভবনের ছাদে ওঠার দরজা দুটি তালা দিয়ে বন্ধ থাকায় অনেকেই বের হতে পারেননি। এ কারণে আগুনে পুড়ে মারা যান তারা। যদি তালা খোলা থাকতো তাহলে এই ১৬ জনের মৃত্যু হতো না।
আরও পড়ুন
এক আগুনেই গেলো ১৬ প্রাণ, কবে টনক নড়বে কর্তৃপক্ষের?
নিচতলায় তীব্র আগুন-ছাদের গেটে তালা, ভবনে আটকে মারা যান ১৬ শ্রমিক
কারখানাটির শ্রমিক তরিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘যদি দুই তলায় থাকতাম তাহলে আমিও মারা যাওয়া ১৬ জনের মধ্যেই থাকতাম। আমার ভাগ্য ভালো। কিন্তু আমার সঙ্গে যারা কাজ করতো, তারা আগুনে পুড়ে মারা গেলো। কারখানার মালিক এক্ষেত্রে দায়ী।’
মঙ্গলবার মধ্যরাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল সাংবাদিকদের বলেন, কোনো এলাকায় অনুমোদনহীন গোডাউন গড়ে উঠলে সেটির বিষয়ে প্রশাসন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সচেতনতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যথাযথ নিয়ম মেনে যেন সবাই কেমিক্যাল গোডাউন স্থাপন করেন।

এর আগে এদিন বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে শিয়ালবাড়িতে পোশাককারখানা ও কসমিক ফার্মা নামের রাসায়নিক গুদামে আগুনের খবর আসে ফায়ার সার্ভিসের কাছে।
পরে বেলা ১১টা ৫৬ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। প্রথমে পাঁচটি ইউনিট পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। পরে আরও সাত ইউনিট যোগ দেয় আগুন নিয়ন্ত্রণে।
এরপর পোশাক কারখানার দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা থেকে ১৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই ভবনের নিচতলায় আগুনের তীব্রতা থাকায় এবং ছাদে ওঠার দরজা দুটি তালা দিয়ে বন্ধ থাকায় অনেকেই ভবন থেকে বের হতে পারেননি। ফলে ওই ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় আটকে আগুনে পুড়ে নিহত হয়েছেন তারা।
টিটি/ইএ/এএসএম