বিশ্বকাপে সেই আচরণের জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেন মেসি

কাতার বিশ্বকাপ জয়ের প্রায় দেড় মাস পর এসে কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচের পর করা আপত্তিজনক আচরণের জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেন লিওনেল মেসি।
বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হয়েছিল আর্জেন্টিনা। ওই ম্যাচটি ছিল বেশ বিতর্কিত। বিশেষ করে রেফারির মাত্রাতিরিক্ত হলুদ কার্ড প্রদর্শনের কারণে। তার ওপর ম্যাচে দুই দলের ফুটবলাররা বেশ কয়েকবার মুখোমুখি অবস্থানে চলে যায়।
২-২ গোলে ড্রয়ের পর ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে ম্যাচ জিতে নেয় আর্জেন্টিনা। ম্যাচ শেষে আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা একপ্রকার অসভ্য আচরণ প্রদর্শন করেন। মেসির মতো ফুটবলারও ডাচ কোচ লুইস ফন গালের মতো সম্মানিত ব্যক্তির সামনে গিয়ে আঙুল তুলে কথা বলেন।
শুধু তাই নয়, ৭৩তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে মেসি গোল করেন, তখন তিনি লুইস ফন গালের সামনে গিয়ে তাকে ইঙ্গিত করে, দুই হাত কানের কাছে তুলে নিয়ে বাজে উদযাপন করেন।
এমন আচরণের জন্য তখন থেকেই সমালোচিত হতে থাকেন আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা। উল্টো মেসি অভিযোগ করেন, ম্যাচ শুরুর আগে কথা বলতে গিয়ে আর্জেন্টিনাকে নাকি অসম্মান করেছিলেন ফন গাল।
প্যারিসে অ্যান্ডি কুজনেটজফকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লিওনেল মেসি বলেন, ‘আমি জানি ফন গাল কী বলেছিলেন। তবে, সেই ঘটনাটি (গোল উদযাপন) ওই মুহূর্তে ঘটে গিয়েছিল, যা আমি করেছি, তা কোনোভাবেই নিজে থেকে পছন্দ করি না। এমনকি যা ঘটেছে তার পরও পছন্দ করছি না। ওটা ছিল ওই মুহূর্তের নার্ভাসনেসের ফসল এবং দ্রুতই তা ঘটে গিয়েছিল।’
ম্যাচের পর দেখা গিয়েছিল, লুইস ফন গালের সঙ্গে কোনো একটি বিষয় নিয়ে আক্রমণাত্মক কথা বলছেন। সঙ্গে ছিল আর্জেন্টিনার সহকারী কোচ এডগার ডেভিডস।
ম্যাচের পর আরও রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছিল যে, নেদারল্যান্ডসের গোলদাতা ওয়াট ওয়েগহোর্স্টের সঙ্গে খুবই বাজে ব্যবহার করেছিলেন মেসি। ম্যাচের পর এক সংবাদ সম্মেলনে ওয়েগহোর্স্ট দাবি করেন, ম্যাচের পর তিনি মেসির সঙ্গে কথা বলতে যান। কিন্তু মেসি তখন তাকে এড়িয়ে যান। বিষয়টা দাঁড়িয়ে যখন তিনি দেখছিলেন, তখন মেসি তাকে বলেছিলেন, ‘বোকা, তুমি কী দেখছো এভাবে, যাও এখান থেকে।’
দীর্ঘ অপেক্ষার পর বিশ্বকাপ জিতেছেন মেসি। বিশ্বকাপ জয়ের পর মেসি বলেছিলেন, লম্বা সময় অপেক্ষা করা ছাড়া তার কোনো উপায় ছিল না। ফাইনালে টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে হারিয়ে ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জয় করে আর্জেন্টিনা। এ নিয়ে মেসি বলেন, ‘আমি মনে করি, যদি আমাকে কোনো সেরা মুহূর্তের কথা জিজ্ঞাসা করা হয়, তাহলে আমি বলবো যে বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে তুলে নেওয়ার মুহূর্তটাই আমার জীবনের সেরা। এটা আমার ক্যারিয়ারের শেষ পর্যন্ত থাকবে। এখানেই বৃত্তের শেষ হয়ে গেছে।’
‘জাতীয় দলের হয়ে এখন আমি সব পেয়েছি, যা পেতে আমি সব সময় স্বপ্ন দেখতাম। ব্যক্তিগতভাবেও আমি আমার ক্যারিয়ারে সব জয় করেছি। এ বিষয়টাই আমার ক্যারিয়ারকে সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং অনন্য উপায়ে শেষ করবে।’
আইএইচএস/