অশ্রুসিক্ত নয়নে শিশু সাজিদকে বিদায়, জানাজায় হাজারো মানুষ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি রাজশাহী
প্রকাশিত: ১১:৩১ এএম, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫

রাজশাহীর তানোরে গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে মর্মান্তিকভাবে নিহত দুই বছরের শিশু সাজিদকে অশ্রুসিক্ত নয়নে শেষ বিদায় জানিয়েছে এলাকার হাজারো মানুষ।

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে দশটার দিকে উপজেলার কোয়েলহাট মধ্যপাড়া এলাকার শিশু সাজিদের বাড়ির পাশের একটি মাঠে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বাড়ির পাশের নেককিরি কবরস্থানে তাকে দাফন সম্পন্ন হয়।

এর আগে শুক্রবার সকাল থেকেই গ্রামের বাতাস নামতে শুরু করে শোকের ছায়া। মসজিদের মাইকে বারবার ভেসে আসছিল সাজিদের মৃত্যুর ঘোষণা। শব্দগুলো শুনেই থেমে গ্রামের কাজকর্ম থেমে গিয়েছিল, কেউ দোকান খোলেননি, সবাই ভিড় করেন জানাজার মাঠে।

জানাজার মাঠে মানুষের ঢল নামে সকালেই। বৃদ্ধ থেকে স্কুলপড়ুয়া ছেলে—সবার চোখ ছিল ভেজা। সাজিদের ছোট্ট দেহটি যখন সাদা কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় আনা হয়, তখন কান্নার রোল পড়ে যায়। তার মা বারবার ছুটে আসতে চাইছিলেন আহাজারি করতে করতে।

জানাজার নামাজের ইমাতি করেন কাজী মাওলানা মিজানুর রহমান। ইমাম সাহেব জানাজা শেষে যখন তাকবির দিলেন, মানুষ হাত তুললো দোয়ার ভঙ্গিতে। হাজারো কণ্ঠ দোয়া অনুষ্ঠিত হলো। সবাই তার মাগফিরাতের জন্য দোয়া করেন সাজিদের জন্য। একই সঙ্গে তার পরিবারকে আল্লাহ ধৈর্য ধরার তৌফিক দান করেন এমন দোয়াও সবাই করেছেন। জানাজায় স্থানীয় প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সহ-সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

জানাজা শেষে সাজিদের ছোট্ট কফিনটা যখন কবরের দিকে নেওয়া হলো, তখন বাতাস যেন থেমে গেল, শুধু শোনা যাচ্ছিল কান্নার শব্দ। কান্না করছেন স্বজনরা। একটি শিশুর জানাজা—যেখানে অংশ নিয়েছে পুরো গ্রাম, এমন দৃশ্য কেউ কখনও দেখেনি গ্রামবাসী।

এর আগে, বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার পাচন্দর ইউনিয়নের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে সাজিদ গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে নিখোঁজ হয়। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ৪০ ফুট মাটি খনন করে ৩২ ঘণ্টা পর শিশুটিকে উদ্ধার করে। এরপর তাকে উদ্ধার করে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সাখাওয়াত হোসেন/কেএইচকে/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।