প্রবাসী লাউঞ্জ
দেশের ভাগ্য বদলালেও প্রবাসীদের ভাগ্য বদলায় না

বেশ কিছুদিন আগের কথা। দেশে ফিরছিলাম প্রবাসী লাউঞ্জের সেবা নেব। কিন্তু বিমানবন্দরে যেতেই তার উল্টো চিত্র দেখলাম। সরকার পতনের পর বিমানবন্দরে প্রবাসীদের জন্য প্রবাসী লাউঞ্জ চালু করলো অন্তবর্তী সরকার। সেটা মিডিয়ায় খুব গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করলো। প্রবাসীরা লাউঞ্জ থেকে সেবা পাচ্ছে। বিমানবন্দরে প্রবাসীদের স্যার ডাকছে। আসলেই কি তাই? কিন্তু বাস্তবতা তো ভিন্ন! আসেন এবার শুনি তাহলে।
ছবির ইনি দীর্ঘদিন পর মালয়েশিয়া থেকে এসেছেন দেশের মাটিতে। রাত ১২টায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসলেও অপেক্ষা যশোরে যাওয়ার আরেকটি ফ্লাইটের। যেহেতু মালয়েশিয়ার সঙ্গে যশোরের সরাসরি কোনো ফ্লাইট নেই সেহেতু সকাল ৯টা পর্যন্ত তাকে অপেক্ষা করতে হবে। রাতে নেই বাংলাদেশের কোনো বিমানের ডমেস্টিক ফ্লাইটও। সাথে নিয়ে আসা ব্যাগেজসহ রাত কাটাতে হবে বিমানবন্দরে। রাতের সময়টা পার করতে প্রবাসী লাউঞ্জে যেতে চাইলেও সেখানে জায়গা হয়নি এই প্রবাসীর। বিমানবন্দরে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও জানে না প্রবাসী লাউঞ্জ কাদের জন্য! কেন করা হয়েছে। এরমধ্যে দুই-একজন বলছেন এটা যারা দেশ থেকে বাইরে যাবেন শুধু তাদের জন্য। যারা আসবেন তাদের এখানে যাওয়ার সুযোগ নেই!
আরও পড়ুন
এটা আবার কেমন কথা? এখানেও বৈষম্য! শুধু ইনি নন, ইনি ছাড়াও বিমানবন্দরে রাত পার করা লাগছে আরও অনেক প্রবাসীর। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা কারো ৮ ঘণ্টা কারো ১০ ঘণ্টা ট্রানজিট। কারো আবার তার চেয়ে বেশি। রাত ১২টার পর নেই কোনো ডমিস্টিক ফ্লাইট। এরমধ্যে আবার বাংলাদেশ বিমানের শিডিউল পরিবর্তনের কারণও যুক্ত হয়েছে। দীর্ঘ সময় বিমানে জার্নি করে এসে আবার সারারাত বিমানবন্দরে নিজের ব্যাগেজ পাহারা দেওয়া। এটা যে কতটা বিরক্তিকর সেটা শুধু প্রবাসীরাই বুঝে।
এই যে সরকার প্রবাসীদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখাচ্ছে, তাদের জন্য এটা করছে ওটা করছে। তারা কি আসলেই এগুলো চায়? মোটেও না। তারা চায় তাদের প্রাপ্য সম্মানটুকু। যতটুকু সেবা দিলে একজন প্রবাসী তার অধিকারটুকু বুঝে পাবে। বিমানবন্দরে তারা কোনো হয়রানির শিকার হতে চায় না। তারা চায় যাত্রীসেবা নিশ্চিত হোক। মিথ্যা আশ্বাস যেন তাদের না দেওয়া হয়।
এই যে সরকার প্রবাসীদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখাচ্ছে, তাদের জন্য এটা করছে ওটা করছে। তারা কি আসলেই এগুলো চায়? মোটেও না। তারা চায় তাদের প্রাপ্য সম্মানটুকু। যতটুকু সেবা দিলে একজন প্রবাসী তার অধিকারটুকু বুঝে পাবে। বিমানবন্দরে তারা কোনো হয়রানির শিকার হতে চায় না। তারা চায় যাত্রীসেবা নিশ্চিত হোক। মিথ্যা আশ্বাস যেন তাদের না দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন
- প্রবাসীরা শুধু দিয়েই যাবে বিনিময়ে তাদের পাওয়ার কিছু নেই
- সংগঠন না থাকায় শ্রমিক বলেও গণ্য হন না কৃষকরা
সরকার পরিবর্তন হলেও দূতাবাসগুলোতে এখনো স্বৈরাচারের দোসররা বসে আছে। দালাল ছাড়া কোনো সেবা প্রবাসীরা দূতাবাস থেকে পায় না। সে জন্য তাদের ব্যয় হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। অথচ দূতাবাস হওয়ার কথা ছিল প্রবাসীদের আস্থা ও ভরসার জায়গা। এখনো পাসপোর্ট নিতে গেলে পদে পদে ভোগান্তি ছাড়া পাসপোর্ট পাচ্ছেন না প্রবাসীরা। শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসছে না দূতাবাসগুলো।
সরকার পরিবর্তন হলেও দূতাবাসগুলোতে এখনো স্বৈরাচারের দোসররা বসে আছে। দালাল ছাড়া কোনো সেবা প্রবাসীরা দূতাবাস থেকে পায় না। সে জন্য তাদের ব্যয় হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। অথচ দূতাবাস হওয়ার কথা ছিল প্রবাসীদের আস্থা ও ভরসার জায়গা। এখনো পাসপোর্ট নিতে গেলে পদে পদে ভোগান্তি ছাড়া পাসপোর্ট পাচ্ছেন না প্রবাসীরা। শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসছে না দূতাবাসগুলো। তাহলে পরিবর্তন হলোটা কই? সরকার তো ঠিকই পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু প্রবাসীদের ভাগ্য তো বদলায়নি।
এসএইচএস/জেআইএম