যে কারণে ২ কোটি ডলার ফেরত দিতে চেয়েছিলেন জিম ক্যারি

বিনোদন ডেস্ক
বিনোদন ডেস্ক বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৫২ এএম, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
গ্রিঞ্চ চরিত্রে জিম ক্যারি

ডক্টর সিউসের শিশুতোষ ক্লাসিক গল্প অবলম্বনে নির্মিত রন হাওয়ার্ড পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘হাউ দ্য গ্রিঞ্চ স্টোল ক্রিসমাস’ মুক্তির পঁচিশ বছর পূর্তি উপলক্ষে মুখ খুললেন হলিউড অভিনেতা জিম ক্যারি। সম্প্রতি এক মৌখিক ইতিহাসভিত্তিক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, গ্রিঞ্চ চরিত্রে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা তার জীবনের সবচেয়ে কষ্টকর অধ্যায়গুলোর একটি ছিল।

২০০০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিটি বিশ্বজুড়ে বিপুল সাফল্য পায়। তবে এর পেছনের বাস্তবতা ছিল ভয়াবহ। গ্রিঞ্চ চরিত্রে রূপ নিতে প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা মেকআপ ও কৃত্রিম অঙ্গ পরতে হতো জিম ক্যারিকে। ভারী মুখোশ, কৃত্রিম নাক, সম্পূর্ণ চোখ ঢেকে দেওয়া লেন্স, লম্বা আঙুল আর তীব্র চুলকানিযুক্ত ইয়াকের লোমে তৈরি পোশাক; সব মিলিয়ে তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন।

জিম ক্যারি জানান, নাক দিয়ে শ্বাস নেওয়ার সুযোগ না থাকায় তাকে পুরো ছবিজুড়ে মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে হয়েছে। পোশাকের ভেতরে তিনি এতটাই অস্বস্তিতে থাকতেন যে মাঝে মাঝেই শুটিংয়ের ফাঁকে মেঝেতে শুয়ে পড়তেন।

আরও পড়ুন
রেড সি উৎসবে ইতিহাস গড়ল রোহিঙ্গা ভাষার সিনেমা ‘লস্ট ল্যান্ড’
শাহরুখ-মেসির ঐতিহাসিক সাক্ষাৎ হবে কলকাতায়

পরিচালক রন হাওয়ার্ড বলেন, শুটিংয়ের শুরুর দিকে জিম ক্যারির মধ্যে তীব্র আতঙ্ক দেখা দেয়। তিনি কাগজের ব্যাগ হাতে নিয়ে শ্বাস স্বাভাবিক করার চেষ্টা করতেন।

একদিন টানা আট ঘণ্টা মেকআপ নেওয়ার পর জিম ক্যারি এতটাই ভেঙে পড়েন যে ছবিটি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এমনকি তিনি নিজের পারিশ্রমিক হিসেবে পাওয়া ২ কোটি ডলার ফিরিয়ে দিতেও রাজি ছিলেন।

পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রযোজনা কর্তৃপক্ষ এক অভিনব সিদ্ধান্ত নেয়। সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের নির্যাতন সহ্য করার প্রশিক্ষণ দেওয়া এক বিশেষজ্ঞকে সেটে আনা হয়। তিনি জিম ক্যারিকে শেখান কীভাবে শারীরিক যন্ত্রণা ও মানসিক চাপ সহ্য করতে হয়। ওই প্রশিক্ষণে ছিল নিজেকে চিমটি কাটা, পরিবেশ বদলানো, গান শোনা, এমনকি অতিরিক্ত ধূমপান করার মতো অদ্ভুত কৌশলও।

জিম ক্যারি জানান, মেকআপ নেওয়ার সময় তিনি নিয়মিতভাবে বিখ্যাত ব্যান্ডের আনন্দময় গান শুনতেন। এটি তাকে মানসিকভাবে কিছুটা স্বস্তি দিত। ধীরে ধীরে মেকআপের সময় কমিয়ে আনা হয়। তবে যন্ত্রণা পুরোপুরি কমেনি।

পরবর্তীতে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে যদি কখনো গ্রিঞ্চ চরিত্রে ফিরতে হয় তবে কেবল আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর অভিনয়ের মাধ্যমেই করবেন যাতে মেকআপের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

সব কষ্টের পরও ‘গ্রিঞ্চ’ চরিত্রটি আজও দর্শকের কাছে স্মরণীয়। তবে এই চরিত্রের পেছনে যে কতটা শারীরিক যন্ত্রণা ও মানসিক লড়াই লুকিয়ে ছিল, তা এতদিন অজানাই ছিল।

 

এলআইএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।