আন্দোলন প্রত্যাহার, বহিষ্কারের পর ক্লাসে ফেরার ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:০০ পিএম, ১৫ অক্টোবর ২০১৯

বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর শুরু হওয়া আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তবে এখনই তারা ক্লাসে ফিরছেন না বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শহীদ মিনার চত্বরে আন্দোলনকারীরা এ ঘোষণা দেন।

আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিয়ে শিক্ষার্থীরা বলছেন, বুধবার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মিলে নতুনভাবে চলার পথ শুরু করতে গণশপথ নেয়া হবে। তবে খুনিদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করার আগ পর্যন্ত ক্লাসে ফিরে যাবেন না বলেও ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের ১০ দাবির মধ্যে তিনটি দাবি ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর। আমরা দেখেছি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দ্রুততার সাথে আসামিদের গ্রেফতার ও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন। আমরা তাদের ওপর সন্তুষ্ট ও ধন্যবাদ প্রকাশ করছি। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীকেও ধন্যবাদ প্রকাশ করছি, তিনি এ বিষয়ে সজাগ না থাকলে এত দ্রুততার সাথে ব্যবস্থা নেয়া হতো না।

তারা বলেন, বুয়েট প্রশাসনের কাছে আমাদের পাঁচটি দাবি ছিল। সেসব দাবির অধিকাংশ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এ কারণে আমরা বুয়েট প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে আমাদের মাঠ পর্যায়ের আন্দোলন প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে আগামীকাল বুধবার থেকে আমাদের সব আন্দোলন প্রত্যাহার করা হবে। সেদিন সব শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা মিলে বুয়েট ক্যাম্পাসে উপস্থিত হয়ে শপথ পাঠ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আন্দোলনকারীরা বলেন, আবরার হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল এ ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

তারা বলেন, আন্দোলন প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেয়া হলেও আমাদের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। আবরার হত্যার চার্জশিট দেয়ার পর বুয়েট প্রশাসন অপরাধীদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করার পর তারা ক্লাসে ফিরবেন বলেও ঘোষণা দেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষার্থীরা বলেন, নতুনভাবে শিক্ষকদের সঙ্গে পথচলার পথ তৈরি করতে বুয়েট শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে গণশপথ পাঠ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে উভয়ের মধ্যে যদি অসন্তোষ তৈরি হয় তবে সেটির লাঘব হবে বলে আমরা মনে করি। তবে কাল কখন গণশপথ পাঠ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে সে বিষয়ে শিক্ষকদের সাথে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন তারা। এরপর তারা বুয়েট শহীদ মিনার চত্বর ছেড়ে ক্যাম্পাসের দিকে চলে যান।

উল্লেখ্য, ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়ার জেরে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে গত ৬ অক্টোবর রাতে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। এরপর রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের নিচতলা ও দোতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পরদিন সোমবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে আবরারের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। নিহত আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন।

এ ঘটনায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগ।

এমএইচএম/এনএফ/পিআর

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।