অসুস্থ অর্থমন্ত্রী, বাজেট উপস্থাপনে প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:২১ পিএম, ১৩ জুন ২০১৯

শুরু হয়েছে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন। এটি দেশের ৪৮তম এবং বর্তমান সরকারের তৃতীয় মেয়াদের প্রথম বাজেট। ‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ : সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের’ শিরোনামে প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। দেশের ৪৮ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট এটি।

বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয়। বরাবরের মতো বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। নতুন অর্থমন্ত্রী হিসেবে এটি তার প্রথম বাজেট। যদিও গত সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী হিসেবে অনেক বাজেট প্রণয়নে পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন তিনি।

শুরুতে দাঁড়িয়ে বাজেট বক্তৃতা শুরু করলেও পরে স্পিকারের অনুমতি নিয়ে অর্থমন্ত্রী নিজ আসনে বসে প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করেন। কিন্তু বিকেল ৪টার পর অসুস্থ অর্থমন্ত্রীর পক্ষে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনে অসুবিধা বোধ করলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রস্তাবিত বাজেটের বাকি অংশ নিজে সংসদে উপস্থাপনের জন্য স্পিকারের অনুমতি চান।

এর আগে বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আমি যতটুকু পড়তে পেরেছি বাকিটুকু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি। উনি পড়ে দেবেন।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাননীয় স্পিকার আমারও অপারেশন, আমার মন্ত্রীরও অপারেশন। তার উপরে ঠান্ডা লেগে কিছুটা গলা সমস্যা। তারপরও পড়ি।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীকে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনের অনুমতি দেন। প্রধানমন্ত্রী দাঁড়িয়ে না বসে বাজেট বক্তৃতা উপস্থাপন করবেন- এমন প্রস্তাব জানালে স্পিকার বসে উপস্থাপনের অনুমতি দেন এবং প্রথমবারের মতো একজন প্রধানমন্ত্রীকে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনের জন্য ধন্যবাদ জানান।

বিকেল ৪টা ১৩ মিনিটের দিকে প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতার একপর্যায়ে ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি’- এমন একটি অংশ এলে প্রধানমন্ত্রী সেটা পড়েন এবং হেসে ফেটে পড়েন। এ সময় উপস্থিত সংসদ সদস্যরাও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে হাস্যরসে মেতে ওঠেন।

স্পিকার এ সময় প্রস্তাবিত বাজেটের যেসব অংশে ‘প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি’ অংশ উল্লেখ আছে তা পাঠ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অসুস্থ অর্থমন্ত্রীর স্থলে প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট সংসদে পেশ করছিলেন।

প্রস্তাবিত বাজেট পাস হবে ৩০ জুন। ১ জুলাই থেকে শুরু হবে নতুন অর্থবছর।

এর আগে মন্ত্রিসভা ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের অনুমোদন দেয়। বাজেট ঘোষণার আগে দুপুর ১টার একটু পর জাতীয় সংসদ ভবনে বিশেষ বৈঠকে মন্ত্রিসভা এ অনুমোদন দেয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ ভবনে মন্ত্রিসভার এ বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

অসুস্থ থাকার কারণে আসতে দেরি হওয়ায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে ছাড়াই মন্ত্রিসভার বৈঠক শুরু হয়। পরে অর্থমন্ত্রী অ্যাপোলো হাসপাতাল থেকে সরাসরি বৈঠকে যোগ দেন।

চলতি অর্থবছর মূল বাজেটের আকার দাঁড়ায় চার লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। তবে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, রাজস্ব আদায় করতে না পারা এবং উন্নয়ন প্রকল্পে পরিকল্পনা অনুযায়ী অর্থ খরচ করতে না পারায় চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের আকার নির্ধারণ করা হয় চার লাখ ৪২ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগামী বাজেটের আকার সংশোধিত বাজেট থেকে ৮০ হাজার ৬৪৯ কোটি টাকা বেশি।

এইউএ/জেএইচ/পিআর

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।