রাজ মাল্টিমিডিয়ার অফিসটি অনৈতিক কাজে ব্যবহার হতো : র‌্যাব

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:১৭ পিএম, ০৫ আগস্ট ২০২১

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেছেন, “আলোচিত প্রযোজক ও অভিনেতা নজরুল ইসলাম রাজের বনানীর বাসায় ‘রাজ মাল্টিমিডিয়া’ কার্যালয়টি অনৈতিক কাজে ব্যবহার হতো”

বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) বিকেলে র‌্যাব সদর দফতরে আয়োজিত পরীমনি ও রাজসহ চারজনকে গ্রেফতার-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘নজরুল ইসলাম রাজের শরফুল হাসান ওরফে মিশু হাসান এবং মো. মাসুদুল ইসলাম ওরফে জিসানের সহযোগিতায় ১০-১২ জনের একটি সিন্ডিকেট ছিল। ওই সিন্ডিকেট রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত এলাকায়, বিশেষ করে গুলশান, বারিধারা ও বনানীসহ বিভিন্ন এলাকায় পার্টি বা ডিজে পার্টির নামে মাদক সেবনসহ নানাবিধ অনৈতিক কর্মকাণ্ড করত। সিন্ডিকেটের সদস্যরা বিপুল পরিমাণ অর্থ পেত।’

“এছাড়া সিন্ডিকেটটি বিদেশে প্লেজার ট্রিপের আয়োজন করত। একইভাবে উচ্চবিত্ত প্রবাসীদের জন্যও দুবাই, ইউরোপ, আমেরিকায় এ ধরনের পার্টির আয়োজন করা হতো। পার্টি আয়োজনের ক্ষেত্রে আগত ব্যক্তিদের চাহিদা/পছন্দকে গুরুত্ব দিয়ে পার্টিগুলো চলত। গ্রেফতার রাজের ‘রাজ মাল্টিমিডিয়া’ কার্যালয়টি অনৈতিক কাজে ব্যবহার হতো।”

jagonews24

তিনি আরও বলেন, এসব অবৈধ আয় থেকে অর্থ নামে-বেনামে আমদানি, বালু ভরাট, ঠিকাদারি ও শোবিজ জগতে বিনিয়োগ করতেন। এছাড়াও তার ব্যবসায়িক কাঠামোতে অসচ্ছতা রয়েছে।’

‘রাজের শোবিজে ক্যারিয়ার শুরু হয় ২০১৪ সালে। এর আগে তার কোনো মাল্টিমিডিয়া ছিল না। ২০১৪ সালের পর নাটক ও সিনেমা প্রযোজনা শুরু করেন। তার রাজ মাল্টিমিডিয়ার অফিসকে তিনি অনৈতিক কার্যক্রমে ব্যবহার করতেন। আমাদের অভিযানে আমরা সেরকম অনেকগুলো পর্নোগ্রাফির কনটেন্ট জব্দ করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘১৯৮৯ সালে খুলনার একটি মাদরাসা থেকে দাখিল পাসের পর ঢাকায় গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। তিনি বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্য ও ঠিকাদারি শুরু করেন। পাশাপাশি শোবিজ জগতে সিনেমা ও নাটকে নানান চরিত্রে অভিনয়ের সাথে সাথে নামে-বেনামে প্রযোজনায় যুক্ত হন।’

‘রাজ মাল্টিমিডিয়া নামেও তার একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার পর ব্যবসায় ও চিত্র জগতের দুই ক্ষেত্রেই তার সংযোগ থাকায় অতিরিক্ত অর্থ লাভের আশায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নিজ অবস্থানের অপব্যবহার করেন।’

jagonews24

রাজের বিরুদ্ধে হচ্ছে দুই মামলা

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘রাজের বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক জব্দের ঘটনায় মাদক আইনে মামলা হবে। এছাড়া কিছু ডিজিটাল কনটেন্ট পেয়েছি রাজের বাসা ও মোবাইল থেকে, যা অন্যদের বিরুদ্ধে ও নিজের স্বার্থে ব্যবহার করা হতো। এজন্য তিনিসহ তার সহযোগী মো. সবুজ আলীর বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা হবে।’

গতকাল (বুধবার) বিকেলে পরীমনির বনানীর বাসায় র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে অভিযানে যায় র‌্যাবের গোয়েন্দা দলের সদস্যরা। তাদের দেখে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লাইভ শুরু করেন পরীমনি। তিনি সেখানে অভিযোগ করেন, তার বাসায় ‘বিভিন্ন পোশাকে’ লোকজন এসে ফ্ল্যাটের দরজা খুলতে বলছেন। কিন্তু তিনি দরজা খুলতে ভয় পাচ্ছেন। এজন্য সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

প্রায় ৪ ঘণ্টার অভিযান শেষে রাত ৮টার দিকে তাকে আটক করে র‌্যাব সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় তার বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক জব্দ করার কথা জানায় র‌্যাব।

এরপর রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রযোজক ও অভিনেতা নজরুল ইসলাম রাজের বাসায় অভিযান শুরু করে র‌্যাব। পরীমনিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে পাওয়া তথ্যে র‌্যাব ওই অভিযানে যায় বলে জানায়।

প্রায় দুই ঘণ্টার অভিযান শেষে তাকে বনানীর বাসা থেকে আটক করে রাত ১০টা ১৫ মিনিটের দিকে নিয়ে যান র‌্যাব সদস্যরা। রাজের বাসা থেকেও মাদক এবং পর্নোগ্রাফি তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধারের কথা জানায় র‌্যাব।

টিটি/এমএইচআর/এএসএম

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।