একনজরে সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৫২ পিএম, ০৫ জুন ২০২২

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা অর্ধশত ছুঁই ছুঁই। আগুন নেভাতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের আট কর্মী। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ডিপোর শ্রমিক, স্থানীয় বাসিন্দা এবং পুলিশ সদস্যও। শনিবার রাত আনুমানিক পৌনে ১১টার দিকে লাগা আগুন রোববার (৫ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্তও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি কাজ করছে রোভার স্কাউট, রেড ক্রিসেন্ট, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

নেভেনি আগুন, দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি

অগ্নিকাণ্ডের পর প্রায় ১৯ ঘণ্টারও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বিপরীতে দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি। চট্টগ্রামের আকাশ-বাতাসে এখন শুধুই পোড়া গন্ধ। চারপাশ ভারী হয়ে উঠেছে দগ্ধ ও নিহতদের স্বজনদের কান্নায়।

সবশেষ রোববার সন্ধ্যার তথ্যানুযায়ী, ডিপোর বিস্ফোরণে ৪৯ জন নিহতের তথ্য জানিয়েছেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াছ চৌধুরী। এর মধ্যে আটজন ফায়ার সার্ভিসকর্মী। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডে আহত চার শতাধিক মানুষের মধ্যে ডিপোর শ্রমিক, স্থানীয় বাসিন্দা, ফায়ার সার্ভিসকর্মী ও পুলিশ সদস্য রয়েছেন।

একনজরে সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার মো. মাইন উদ্দিন বলেন, দীর্ঘক্ষণ ধরে আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসায় ঢাকা থেকে ফায়ার সার্ভিসের বিশেষায়িত ‘হাজমত টিম’ আনা হচ্ছে। এ টিম বিদেশে প্রশিক্ষিত এবং তারা আগুনের ভেতরে থেকেও কাজ করতে পারে। বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট কাজ করছে। এ ডিপোতে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড ছিল। এখানে ক্ষণে ক্ষণে বিস্ফোরণ হচ্ছে। কেমিক্যালের জন্য আগুন নেভানো যাচ্ছে না। আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে ছয়টি বিস্ফোরণ দেখেছি।

হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের ড্রাম বিস্ফোরণ

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিএম কনটেইনার ডিপোতে শত শত হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের ড্রাম ছিল। আগুন লাগার পর দ্রুতই একের পর এক ড্রাম বিস্ফোরিত হয়। রোববার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, বিস্ফোরিত নীল রঙের এসব ড্রামের বিচ্ছিন্ন অংশ বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। কেমিক্যালভর্তি এসব ড্রাম বিস্ফোরণের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়েছে। এতে হতাহতের সংখ্যা ধারণার চেয়েও বেশি হতে পারে, বলছেন সংশ্লিষ্টরা। ৩০ কেজি ওজনের এসব ড্রামে লেখা আছে, ৬০ শতাংশ হাইড্রোজেন পার অক্সাইড।

দায়িত্বরত ফায়ার সার্ভিসকর্মী আবুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, আগুন লাগার খবরে আতঙ্কগ্রস্ত মানুষ যখন ছোটাছুটি করছিল তখনই এসব কেমিক্যালভর্তি ড্রামগুলো একের পর এক বিস্ফোরিত হতে থাকে। এতে বহু মানুষ দগ্ধ হন।

একনজরে সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ

পুড়েছে পণ্যভর্তি কনটেইনার, হাজার কোটি টাকা ক্ষতি

ভয়াবহ এ বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় সব কনটেইনার ছিল পণ্যভর্তি। ফলে আমদানি ও রপ্তানির জন্য প্রস্তুত বহু পণ্য পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। অগ্নিকাণ্ডে ১০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের পণ্য পুড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে সব মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হাজার কোটি টাকা ছুঁতে পারে।

বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশনের (বিকডা) সচিব রুহুল আমিন সিকদার বিপ্লব জাগো নিউজকে বলেন, বিস্ফোরণের সময় বিএম কনটেইনার ডিপোতে সাড়ে চার হাজারেরও বেশি কনটেইনার ছিল। এরমধ্যে প্রায় এক হাজার ৩০০ কনটেইনারে ছিল আমদানি-রপ্তানি পণ্য। পণ্যভর্তি এসব কনটেইনারের অধিকাংশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুড়ে ছাই হয়েছে আমদানি করা বহু পণ্য।

তিনি বলেন, বেশি পুড়েছে রপ্তানির জন্য রাখা পণ্য। রপ্তানির জন্য কনটেইনার ভর্তি করে রাখা অনেক পোশাক ছিল। সেগুলো রপ্তানির নির্ধারিত সময় (লিড টাইম) ছিল। কিন্তু পোশাক পুড়ে যাওয়ায় রপ্তানি কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে। নির্ধারিত সময়ে রপ্তানি করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।

একনজরে সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ

গুরুতর আহতদের হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনছে সেনাবাহিনী

সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে গুরুতর আহতদের বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় আনা হচ্ছে। রোববার বিকেল নাগাদ তাদের বহনকারী হেলিকপ্টার আহত ৭ জনকে নিয়ে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ঘাঁটি ‘বাশারে’ পৌঁছেছে।

এর আগে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে জানানো হয়, বিস্ফোরণে দগ্ধ-আহতদের মধ্যে ১৫ জনকে চট্টগ্রামের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। উদ্ধার অভিযানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৫০ জন সদস্য কাজ করছেন। উদ্ধার অভিযান ও আগুন নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে সহায়তার জন্য সেনাবাহিনীর একটি বিশেষজ্ঞ দল কাজ করছে। এছাড়া সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার এবং নিরাপত্তা দলও নিয়োজিত রয়েছে। রাসায়নিক দ্রব্যাদি বিস্ফোরণের কারণে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত রাসায়নিক সামগ্রী সমুদ্রে ছড়িয়ে পড়া রোধে এ দলটি কাজ করছে।

একনজরে সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ

এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় এলেন ফায়ার সার্ভিসের আহত দুই কর্মী

অগ্নিকাণ্ডে আহত দুই ফায়ার সার্ভিসকর্মীকে চট্টগ্রামের সিএমএইচ থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় আনা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। রোববার দুপুরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন জাগো নিউজকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

গতকাল রাতে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরপরই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে যান ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা। রোববার দুপুরে ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো এক খুদে বার্তায় বলা হয়, সীতাকুণ্ডের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের নিহত কর্মীর সংখ্যা বেড়ে আটজন হয়েছে। এ ঘটনায় চট্টগ্রামে সিএমএইচে অসুস্থ অবস্থায় ১৫ জন চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে গুরুতর আহত দুজনকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশনস ও প্রশিক্ষণ) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রেজাউল করিম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, অগ্নিকাণ্ডে এ পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের চারজন কর্মী নিখোঁজ রয়েছেন।

তদন্ত কমিটি গঠন

বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে ৯ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। রোববার চট্টগ্রাম জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মুমিনুর রহমান স্বাক্ষর করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এদিকে ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি করেছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ কমিটিকে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার মো. মাইন উদ্দিন এ তথ্য জানিয়েছেন।

একনজরে সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ

মনিটরিং টিমের অবহেলায় ডিপোতে বিস্ফোরণ

চট্টগ্রামের কনটেইনার ডিপোতে মনিটরিং টিমের অবহেলায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, এ ঘটনায় মনিটরিং টিমের অবহেলা ছিল বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নেবে। কর্তৃপক্ষ সঠিক ব্যবস্থা নিলে এতবড় দুর্ঘটনা ঘটতো না।

তিনি বলেন, আইএমডিজি নীতিমালা এবং আইএসপিএস যে কোড আছে, সে অনুযায়ী কনটেইনার ডিপো পরিচালনা করার কথা। এ দুটি নীতিমালা ও কোড অনুসরণ করে কনটেইনার পরিচালনা করা হলে এ ধরনের দুর্ঘটনার সুযোগ বা কারণ নেই।

কেমিক্যাল সমুদ্রে ছড়ানো বন্ধে কাজ করছে সেনাবাহিনী

কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে ছড়িয়ে পড়া কেমিক্যাল ড্রেন হয়ে সমুদ্রের পানিতে ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। সমুদ্রে কেমিক্যাল ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ ইঞ্জিনিয়ারিং টিম। চট্টগ্রাম সেনাবাহিনীর ব্যাটালিয়ন-১-এর লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনিরা সুলতানা জাগো নিউজকে এ তথ্য জানান।

একনজরে সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনিরা সুলতানা বলেন, কনটেইনার ডিপোতে লাগা আগুনে কেমিক্যাল যেন ড্রেনের মাধ্যমে সমুদ্রে না ছড়াতে পারে, সেজন্য সেনাবাহিনীর বিশেষ ইঞ্জিনিয়ারিং টিম ড্রেনেজ ব্যবস্থা বন্ধ করতে যাচ্ছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা থাকলে কেমিক্যাল সমুদ্রে ছড়াতে পারে। এতে সমুদ্রের পানি এবং মৎস্য ও জলজ ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।

রক্তদানসহ দগ্ধদের পাশে চবি শিক্ষার্থীরা

স্মরণকালের ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধদের রক্তদানসহ নানা সহযোগিতা দিচ্ছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীরা। শনিবার দিনগত রাত দুইটার দিকে বিভিন্ন হল ও আশপাশের মেসগুলো থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট এলাকায় জড়ো হন কয়েকশ শিক্ষার্থী। তবে রাস্তায় কোনো গাড়ি না থাকায় ঘটনাস্থল বা হাসপাতালে পৌঁছাতে বিপাকে পড়েন তারা। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বাসের ব্যবস্থা করা হয়। রাতেই শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে চমেক হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন।

ডিপো মালিকের খোঁজ নেই

সীতাকুণ্ডের ওই বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগার পর ডিপোর মালিকপক্ষের কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার মো. মাইন উদ্দিন। তিনি বলেন, দুঃখজনক বিষয় হলো, এ কনটেইনার ডিপোর মালিককে আমরা পাচ্ছি না। তাদের পক্ষের কাউকেই আমরা দেখিনি। আগুন লাগা কনটেইনার ডিপোর কাউকে যদি আমরা পেতাম, তাহলে জানতে পারতাম এখানে কোন ধরনের কেমিক্যাল আছে বা কোন কনটেইনারে কী আছে।

রোববার সকাল ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি আরও বলেন, এ কনটেইনার ডিপোতে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড ছিল। ক্ষণে ক্ষণে এখনো বিস্ফোরণ হচ্ছে। আমি পরিদর্শনকালে ছয়টি বিস্ফোরণ দেখেছি। কেমিক্যালের জন্য আগুন নেভানোও যাচ্ছে না। এক এক ধরনের কেমিক্যালের নেচার এক এক রকম। এটা না জানার কারণে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে। মালিককে খুঁজে পেলে কেমিক্যাল অনুযায়ী আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে সুবিধা হতো।

একনজরে সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ

প্রধানমন্ত্রীর শোক

সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। এছাড়া তিনি আহতদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতের নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে এনে উদ্ধার তৎপরতা পরিচালনা এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সর্বাত্মক সহযোগিতা দিতে সরকারের পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

ডিপোতে বিস্ফোরণের সূত্রপাত

রাসায়নিক বা কেমিক্যালের কনটেইনার থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে ফায়ার সার্ভিস। সংস্থাটি জানিয়েছে, শনিবার রাত ৯টার দিকে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নে বিএম কনটেইনার ডিপোর লোডিং পয়েন্টের ভেতরে বিস্ফোরণ ঘটে। রাত পৌনে ১১টার দিকে এক কনটেইনার থেকে অন্য কনটেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। একটি কনটেইনারে রাসায়নিক থাকায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে।

ডিপো মালিকদের সংগঠন বিকডার প্রেসিডেন্ট নুরুল কাইয়ুম খান জাগো নিউজকে জানান, ওই ডিপোতে কম্বোডিয়া থেকে আসা হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের একটি চালান ছিল। সেখান থেকেই আগুন লেগে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

একনজরে সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ

বিস্ফোরণে বিকট শব্দ, ছাড়িয়ে গেছে ৪ কিলোমিটার দূরে

কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ ওই বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কেঁপে উঠে ঘটনাস্থল থেকে আশপাশের চার কিলোমিটার দূরের এলাকাও। এসময় এলাকার বাড়িঘরের জানালার কাচ ভেঙে পড়ে। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রাথমিকভাবে তারা মনে করেছিলেন ভূমিকম্প হয়েছে। বিস্ফোরণের সময় চার কিলোমিটার দূরের এলাকার এক বাসিন্দার ঘরের সিসি ক্যামেরায় দেখা যায়, হঠাৎ করে বিকট শব্দে বাসার বাইরে রাখা গাড়ি ও পুরো বাসা কেঁপে উঠে।

সীতাকুণ্ড এলাকার স্থানীয় দুই বাসিন্দা কাইয়ূম চৌধুরী ও আবুল বাশার জানিয়েছেন, বিস্ফোরণে কন্টেইনার ডিপোর আশপাশের অন্তত তিন-চার কিলোমিটার এলাকায় ব্যাপক কম্পনের সৃষ্টি হয়েছে। মসজিদ ও আশপাশের শতাধিক ঘরবাড়ির জানালার কাচ ভেঙে পড়েছে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

সীতাকুণ্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জাগো নিউজকে জানান, কনটেইনার ডিপোটিতে প্রচুর রপ্তানিপণ্য মজুত ছিল। আগুনের খবর পেয়ে মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এসময় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন।

এমএমএ/এমকেআর/জেআইএম

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।