মসজিদে হামলাকারী ‘একা’ ছিলেন বলে দাবি পুলিশের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৫৪ এএম, ১৭ মার্চ ২০১৯

নিউজিল্যান্ডের দুটি মসজিদে বন্দুক হামলা করে ৫০ জনের প্রাণ কেড়ে নেয়ার ঘটনাটি অভিযুক্ত হামলাকারী বেন্ট্রন ট্যারান্ট একাই ঘটিয়েছেন। নিউজিল্যান্ড পুলিশ হামলার দুদিন পর হামলাকারী সম্পর্কে এমন তথ্য দিল। রোববার বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে দেশটির পুলিশের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, মসজিদে হামলার অভিযোগে গ্রেফতার ২৮ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক বেন্টন ট্যারান্ট একাই দুটি মসজিদে হামলা করেন বলে পুলিশ ধারণা করছে। আর তাই আটক তিনজনের মধ্যে দুইজনকে ছেড়ে দিয়েছে তারা।

হামলার পর প্রথমে পুলিশ এক নারীসহ চারজনকে গ্রেফতার করে। পরে হামলায় জড়িত ছিলেন না বলে তাদের একজনকে ছেড়ে দেয়া হয়। এবার আরও দুইজনকেও ছেড়ে দেয়া হলো। হামলার একদিন পর শনিবার বেন্ট্রন ট্যারান্টকে আদালতে হাজির করা হয়।

আল নুর মসজিদে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল নিয়ে ভিডিও গেমের মতো করে হামলা চালান বেন্টন ট্যারান্ট। তিনি তার মাথায় থাকা ক্যামেরার মাধ্যমে সেই হতাযজ্ঞের ঘটনাটি ফেসবুকে লাইভ করেন। তবে সেই হামলা থেকে অল্পের জন্য বেঁচে গেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। নিউজিল্যান্ড সফররত বাংলাদেশ দলের খেলোয়ারেরা সেই মসজিদে নামাজ পড়তে যাচ্ছিলেন।

ক্রাইস্টচার্চের ওই দুটি মসজিদে হামলার ঘটনায় ঘাতক ব্রেন্টন ট্যারান্টের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়। হামলার একদিন পর শনিবার দেশটির পুলিশ তাকে আদালতে হাজির করলে আদালত তাকে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন মঞ্জুর করেন। নিউজিল্যান্ডের পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ বাকি অভিযুক্তদের ছেড়ে দেয়ার কথা নিশ্চিত করলেও এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি।

পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তারা মনে করছেন, ব্রেন্টন ট্যারান্ট একাই দুটি হামলা চালিয়েছেন। ব্রেন্টন ছাড়া আটক ব্যক্তিদের হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এটা পুলিশের চূড়ান্ত মতামত নয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন। আল নুর ও লিনউড মসজিদে হামলায় হতাহত হওয়া ব্যক্তিদের পরিচয় নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষ দ্রুত কাজ করছে বলে জানান তিনি।

পুলিশ কমিশনার জানান, ব্রেন্টনকে সরাসরি হুমকি মনে করে থামানো হয়েছিল। পুলিশ প্রকৃত সাহসিকতার সঙ্গে তাকে আটকের কাজটি করেছে। আরও হামলার ঘটনা যেন না ঘটতে পারে, সে জন্য তারা নিজের জীবন ঝুঁকিতে ফেলে হামলাকারীকে ঠেকিয়েছে। তিনি বিশ্বাস করে এর মাধ্যমে আরও হামলা প্রতিরোধ করা গেছে।

অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারান্ট নিজেকে স্বঘোষিত শ্বেত জাতীয়তাবাদী। হামলার আগে তিনি অনলাইনে ৭৩ পাতার একটি কথিত ইশতেহার প্রকাশ করেন। সেখানে তার মুসলিম বিদ্বেষী মনোভাবের জোড়ালো ঘোষণা আছে। তিনি মুসলিমদের পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন করার কথাও জানান সেই ইশতেহারে।

গত শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ শহরের দুটি মসজিদে জুমার নামাজ চলাকালীন হামলার ঘটনায় ৫০ জন নিহত হয়েছেন। শনিবার পর্যন্ত এই হামলায় ৪৯ জনের নিহতের কথা বললেও বিবিসি রোববার তাদের এক প্রতিবেদনে আরও একজনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে। তাছাড়া হামলার ঘটনায় আহত হন অর্ধশতাধিকের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর।

শুক্রবার স্থানীয় সময় আনুমানিক ১টা ৪০ মিনিটে ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে প্রথম হামলাটি চালানো হয়। হামলার সময় মসজিদে খুতবা পড়া হচ্ছিল। প্রথম হামলার কিছুক্ষণ পর লিনউডের ইসলামিক সেন্টারের মসজিদে দ্বিতীয় হামলাটি হয়। সেখানে সাতজন নিহত হন। তবে মসজিদের দেখভাল করা এক ব্যক্তি হামলাকারীর বন্দুক কেড়ে নেয়ায় সেখানে বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেনি।

এসএ/এমএস

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।