সোলেইমানির পদে নিয়োগ পেলেন ইসমাইল কানি
ইরানের বিপ্লবী গার্ডের (আইআরজিসি) অভিজাত শাখা কুদস্ বাহিনীর নতুন প্রধান পদে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইসমাইল কানিকে নিয়োগ দিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনী। মার্কিন বিমান হামলায় নিহত মেজর জেনারেল কাসেম সোলেইমানির স্থলাভিষিক্ত হলেন কানি।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) খামেনীর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক আদেশে এ নিয়োগের কথা জানানো হয়। এতে ইসমাইল কানিকে ‘সবচেয়ে চৌকস বিপ্লবী গার্ড কমান্ডারদের একজন’ উল্লেখ করে বলা হয়, ‘বীর জেনারেল হাজি কাসেম সোলেইমানির শাহাদাতের পর আমি কুদস্ বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইসমাইল কানিকে নিযুক্ত করলাম।’
ইসমাইল কানি ইরান-ইরাক যুদ্ধে (১৯৮০-৮৮) বীরোচিত ভূমিকার জন্য খ্যাতি লাভ করেন। তিনি নিহত সোলেইমানির ঘনিষ্ঠজন বলে পরিচিত। বিপ্লবী গার্ডের গোয়েন্দা বিভাগেও দায়িত্ব পালন করেন কানি।
সোলেইমানির মতোই ইসমাইল কানিও কট্টর ইসরায়েলবিরোধী বলে পরিচিতি সশস্ত্র বাহিনীতে। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে ইরানের জড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে সোলেইমানির মতোই ভূমিকা ছিল কানিরও।
তবে দেশের রাজনৈতিক বিষয়াদিতে সোলেইমানি কোনো ধরনের মন্তব্য বা পর্যবেক্ষণ না দিলেও কানি এ বিষয়ে রাখঢাক রাখেন না।
শুক্রবার ভোরে বাগদাদ বিমানবন্দরে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলায় জেনারেল সোলেইমানি নিহত হন। তিনি খামেনীর সবচেয়ে আস্থাভাজন জেনারেলদের একজন ছিলেন। ১৯৯৮ সালে বিপ্লবী গার্ডের প্রধানের দায়িত্ব পাওয়ার পর অনেকটা নিভৃতে তিনি কাজ করতে থাকেন। তার কৌশলের কারণে লেবাননের হেজবুল্লাহ, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুগত বাহিনী এবং ইরাকের শিয়াপন্থি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে জোরদার সম্পর্ক গড়ে ওঠে ইরানের। এর ফলে সীমানার বাইরে মধ্যপ্রাচ্যের বিস্তৃত অঞ্চলে ইরানের প্রভাব-বলয় গড়ে ওঠে। যা মাথাব্যথার কারণ হয়ে ওঠে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলসহ তেহরানের বিরুদ্ধ-শক্তির।
এরমধ্যে ইরাকের সরকারবিরোধী ও সরকার-সমর্থকদের বিক্ষোভ শুরু হলে যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করে, ইরানের বিভিন্ন গোষ্ঠী ফায়দা লুটতে চাইছে। সম্প্রতি মার্কিন দূতাবাসে হামলার পেছনে ইরানের ওই গোষ্ঠীগুলোই জড়িত বলে দাবি করে তারা। সেই গোষ্ঠীগুলোর প্রধান হিসেবে সোলেইমানিকে ‘নির্মূল’ করার পরিকল্পনার কথা বলছিল শত্রুপক্ষ। শেষতক শুক্রবার সোলেইমানিকে প্রাণ দিতেই হলো।
তবে এই ঘটনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ‘চরম প্রতিশোধের মুখে পড়তে হবে’ বলে হুংকার ছেড়েছেন খামেনী। তিনি বলেছেন, ‘বিশ্বের কুচক্রি ও শয়তান রাষ্ট্রগুলোর বিরুদ্ধে অনেক বছর ধরে একনিষ্ঠ ও বীরোচিত জিহাদ চালিয়ে গেছেন জেনারেল সোলেইমানি। শাহাদাতের যে আকাঙ্ক্ষা তিনি পোষণ করতেন শেষ পর্যন্ত সেই মর্যাদায় তিনি অধিষ্ঠিত হলেন। তার রক্ত ঝরেছে মানবতার সবচেয়ে বড় শত্রু যুক্তরাষ্ট্রের হাতে। যেসব অপরাধী তাদের নোংরা হাত দিয়ে গতরাতে জেনারেল সোলেইমানির রক্ত ঝরিয়েছে তাদের জন্য ভয়ঙ্কর প্রতিশোধ অপেক্ষা করছে।’
এইচএ/এমকেএইচ