‘মার্কিন সেনা ও কর্মকর্তারা দেশে ফিরবে কফিনে’
ইরানের ক্ষমতাধর জেনারেল কাসেম সোলেইমানি ও তার সহযোগী ইরাকের সশস্ত্র গোষ্ঠী হাশদ আল-শাবির কমান্ডার আবু মাহদি আল-মুহান্দিস হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে লেবাননের প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর মহাসচিব হাসান নাসরাল্লাহ যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে বলেছেন, মার্কিন সেনা ও কর্মকর্তারা দেশে ফিরবে কফিনবন্দি হয়ে।
রোববার (৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানী বৈরুতে হিজবুল্লাহ আয়োজিত এক সমাবেশে নাসরাল্লাহ এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তার বক্তব্য রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচার হয়।
তিনি বলেন, ‘যখন আমেরিকান সেনা ও কর্মকর্তাদের কফিন যুক্তরাষ্ট্রে যেতে শুরু করবে, তখন (প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড) ট্রাম্প ও তার প্রশাসন বুঝতে শুরু করবে যে তারা সত্যিই এ অঞ্চলে হেরে গেছে এবং তারা নির্বাচনেও (আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন) হারবে।’
গত শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) ভোরে বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর হামলায় নিহত হন ইরানের বিপ্লবী গার্ডের কুদস্ বাহিনীর প্রধান ও সবচেয়ে ক্ষমতাধর জেনারেল কাসেম সোলেইমানি এবং ইরাকে ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হাশদ আল-শাবির কমান্ডার আল-মুহান্দিস।
শিয়াপন্থি রাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে লেবাননের হিজবুল্লাহরও সখ্য রয়েছে। ইরানের সীমানার বাইরে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে তেহরানের যে সামরিক পরিসর বেড়েছে, তার পেছনের কারিগর ছিলেন জেনারেল সোলেইমানি। নেতৃস্থানীয় ভূমিকার কারণেই সোলেইমানির সঙ্গে দারুণ সম্পর্ক ছিল শিয়া সংগঠন হিজবুল্লাহ প্রধান নাসরাল্লাহর।
সোলেইমানি ও মুহান্দিস ‘শাহাদাত’ বরণের মধ্য দিয়ে নিজেদের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে গেছেন উল্লেখ করে হাসান নাসরাল্লাহ বলেন, জেনারেল সোলেইমানি হত্যাকাণ্ডের জবাব দেয়া কেবল ইরানের দায়িত্ব নয়, এটা গোটা প্রতিরোধ শক্তির দায়িত্ব।
হিজবুল্লাহ প্রধান বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটি, নৌজাহাজ, সামরিক কর্মকর্তাদের তালিকা ধরে দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর ওপর হামলা করাই তাদের ‘উপযুক্ত শাস্তি’ হবে।
এই হত্যাকাণ্ড গোটা মধ্যপ্রাচ্যকে একটি নতুন পরিস্থিতিতে ফেলেছে উল্লেখ করে নাসরাল্লাহ বলেন, জেনারেল সোলেইমানি ও মুহান্দিসকে টার্গেট করে হত্যার মধ্য দিয়ে কেবল ইরাক-ইরানকে নয়, গোটা অঞ্চলকে নতুন অস্থিতিশীলতায় ফেলে দেয়া হয়েছে।
নাসরাল্লাহর আগে এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিও।
অন্যদিকে ইরাকের মাটিতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানোয় ক্ষুব্ধ দেশটির সরকার সেখান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারে একটি প্রস্তাব পাস করেছে সংসদে।
যদিও এর জবাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরাক যদি জোরপূর্বক আমাদের সৈন্যদের সেদেশ ত্যাগে বাধ্য করে, তাহলে ইরাকের ওপর আমরা এত কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে যে, যা আগে তারা কখনো দেখিনি।
এইচএ/পিআর