ওসমান হাদিকে গুলি
কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ ইবি শিক্ষার্থীদের
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মহাসড়ক অবরোধ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এ বিক্ষোভ মিছিল হয়। পরে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, এদিন সন্ধ্যা ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়। মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন খুলনা-কুষ্টিয়া মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশ ও হাদির সুস্থতা কামনায় দোয়া-মোনাজাত করা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন ও ইসলামিক ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব এন এসের (আইইউসানস) নেতৃবৃন্দসহ দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘হাদির ওপর হামলা কেন, ইন্টেরিম জবাব চাই’, ‘সন্ত্রাসীদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘হাদি ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দিবো না’, ‘তুমি কে আমি কে, হাদি হাদি’, ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’, ‘একটা একটা লীগ ধর, ধরে ধরে জেলে ভর’, ‘জুলাই যোদ্ধা আহত কেন, ইন্টেরিম জবাব চাই’, ‘বিপ্লবীরা আহত কেন, ইন্টেরিম জবাব দে’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
সমাবেশে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ইসমাইল হোসেন রাহাত বলেন, আজ সারাদেশে জুলাই নেমে এসেছে। জুলাই যোদ্ধা হাদির ওপর হামলা হয়েছে। এটা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র। জুলাইয়ের পর দেশের সামগ্রিক পরিবর্তন চাওয়াতে এই হামলা। এই ষড়যন্ত্র মানুষ মেনে নেবে না। কখনো জুলাই বাঞ্চাল করার যাবে না। রাষ্ট্রের দায়িত্ব জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা দেওয়া ও অতিদ্রুত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করা।
আইইউসানসের সাবেক সভাপতি সাজ্জাতুল্লাহ শেখ বলেন, আওয়ামী সন্ত্রাসীরা এই হামলার হুমকি অনেকদিন দিচ্ছিলো। কিন্তু আজ সরকারের ব্যর্থতায় হামলা হয়েছে। হাদির রক্ত বারুদ হয়ে গোটা বাংলায় ছড়িয়ে যাবে। দেশ নিয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র হচ্ছে। গোটা দেশের ছাত্র জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করবে। আওয়ামী লীগ চায় না নির্বাচন হোক। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে ছাড়বো।

শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ বলেন, এই হামলা শুধু এক ব্যক্তির ওপর হামলা নয়। এটা সমগ্র জুলাই যোদ্ধাদের ওপর হামলা। সন্ত্রাসী হামলা করে আন্দোলন নিস্তব্ধ করা যায় না। ওসমান হাদী শুধু একজন ব্যক্তি নয়। তিনি সমাজের ন্যায়, অধিকার ও স্বাধীনতার কথা বলে। একটা মহল দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করা হবে।
শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ইউসুব আলী বলেন, একটি গ্রুপ জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশে জুলাই নিয়ে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। একদল সুশীল জুলাই ও একাত্তরকে মুখোমুখি করার চেষ্টা করছে। আজ জুলাইয়ের জনগণের জেগে উঠেছে। আমরা আর কোনো ছাড় দিতে রাজি নই। যেখানে জুলাইয়ের ওপর হামলা সেখানেই আমরা প্রতিবাদ করবো। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়েও কিছু লোক ষড়যন্ত্র করছে। তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিতাড়িত করা হবে। সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে জুলাইয়ে সকল ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করবো। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকবো, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করবো।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, আজ ইবিতে আরেকটি জুলাই নেমে এসেছে। সকল দল-মত জুলাইয়ের স্পিরিটকে ধরে রেখে নেমে এসেছে। হাদির ওপর হামলা বিচ্ছিন্নভাবে নিলে আমরা ভুল করবো। এই হামলা ইন্টেরিম দায়িত্ব নেওয়ার পরেই শুরু হয়েছে। গতকাল চট্রগ্রামে এক জুলাই যোদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছে৷ ব্যারিস্টার ফুয়াদের ওপর হামলা হয়েছে। এই ষড়যন্ত্র করছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। আপনারা আর কোনো ষড়যন্ত্রের সাহস দেখাবেন না। ছাত্র-জনতা রুখে দিবে। আজ হাদীকে হত্যার জন্য হামলা করা হয়েছে। এক হাদী মারা গেলে লক্ষ্য হাদি জন্ম নেবে।
ইরফান উল্লাহ/এমএন