ধ্বংসস্তূপের নিচে দিনের পর দিন মানুষ কীভাবে বেঁচে থাকে?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:০২ পিএম, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
ছবি: সংগৃহীত

ভয়ংকর দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া এবং ভূমিকম্পের পর ধ্বংসস্তূপের নিচে দিনের পর দিন টিকে থাকতে হলে সন্দেহাতীতভাবে সবচেয়ে বড় যে জিনিসটি দরকার, তা হলো ভাগ্য। এরপর রয়েছে বাতাস ও পানির ব্যবস্থা। এমনটাই জানালেন যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দলের বিশেষজ্ঞ ড. ম্যালকম রাসেল।

ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্কের আন্তাকিয়া শহরে ধসে পড়া ভবনগুলোতে এখনো উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে বিভিন্ন দেশের উদ্ধারকারী দল। আটকেপড়া মানুষদের জীবিত উদ্ধারে প্রাণান্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা।

আন্তাকিয়ায় কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার সঙ্গে আলাপকালে ড. ম্যালকম বলেন, এই গল্পগুলো সত্যিই অবিশ্বাস্য। আমরা জানি, মানুষ একটি বিস্ময়কর সময় পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।

আরও পড়ুন>> ভূমিকম্পের ৭ দিন পর জীবিত উদ্ধার ছয় বছরের শিশু

তিনি বলেন, ভূমিকম্প পরিস্থিতিতে যা যা দরকার, বলতেই হবে, ভাগ্য এখানে বড় বিষয়। এরপর তাদের এমন একটি জায়গায় থাকতে হবে, আমরা যাকে ‘সারভাইভাল ভয়েড স্পেস’ (বেঁচে থাকার শূন্য স্থান) বলি। এটি বড় না-ও হতে পারে। তবে এমন কোথাও হবে, যেখানে তারা শারীরিকভাবে পিষ্ট হবে না।

ম্যালকমের মতে, এরপর আসবে শারীরিক বিষয়। এক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা পানির অভাব এবং ডিহাইড্রেশন।

ধ্বংসস্তূপের নিচে বেঁচে থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, সন্দেহ নেই যে, এর জন্য দরকার মানসিক স্থিতিস্থাপকতা, অবিশ্বাস্য সহনশীলতা এবং কিছু আশা বজায় রাখা।

আরও পড়ুন>> বেঁচে আছে ধ্বংসস্তূপের নিচে জন্মানো শিশুটি

এ বিশেষজ্ঞের মতে, অনেক ক্ষেত্রে, শব্দ করা চালিয়ে যাওয়ার অনুভূতিও থাকা দরকার। কারণ ওই শব্দ ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে যেতে পারে এবং উদ্ধারকারীরা সংবেদনশীল সরঞ্জাম ব্যবহার করে তা শুনতে পারেন।

তুরস্ক-সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানার পর এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে সাতদিন। ফলে আটকেপড়া লোকদের জীবিত উদ্ধারের সময় প্রায় ফুরিয়ে এসেছে। তবে সপ্তমদিনেও অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া বেশ কয়েকজনকে বের করে এনেছেন উদ্ধারকারীরা।

তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর আদিয়ামানে ভূমিকম্প আঘাত হানার ১৭৮ ঘণ্টা পর একটি ছোট্ট মেয়েকে উদ্ধার করা হয়েছে। ছয় বছর বয়সী মেয়েটির নাম মিরায়। উদ্ধারকারীরা তার বড় বোনের কাছেও পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন।

এছাড়া, দেশটির হাতায় প্রদেশ থেকে ভূমিকম্পের ১৭৫ ঘণ্টা পর জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে এক নারীকে। নাইদে উমায় নামে ওই নারীকে উদ্ধারের ভিডিও প্রকাশ করেছেন ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগ্লু।

তুরস্ক-সিরিয়ার সীমান্ত অঞ্চলে গত ৬ ফেব্রুয়ারির ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা এরই মধ্যে ৩৬ হাজার ছাড়িয়েছে। ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ওই কম্পনের আঘাতে কেবল তুরস্কেই মারা গেছেন ৩১ হাজারের বেশি।

আরও পড়ুন>> ১২৯ ঘণ্টা পর একই পরিবারের পাঁচজন জীবিত উদ্ধার

তুর্কি কর্তৃপক্ষের হিসাবে, দেশটিতে এ পর্যন্ত ৩১ হাজার ৬৪৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বিধ্বস্ত হয়েছে হাজার হাজার ঘরবাড়ি।

এছাড়া, সিরিয়ায় মারা গেছেন ৪ হাজার ৫৭৪ জন। এর মধ্যে দেশটির বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩ হাজার ১৬০ জন।

দুই দেশে এখনো বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। ফলে প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

কেএএ/

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।