আইএইএ-কে সহযোগিতা স্থগিত করলো ইরান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:০৫ পিএম, ০২ জুলাই ২০২৫
আইএইএ’র সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত সংক্রান্ত আইনে স্বাক্ষর করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান/ ফাইল ছবি: এএফপি

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান একটি নতুন আইনে স্বাক্ষর করেছেন, যার ফলে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সঙ্গে দেশটির সব ধরনের সহযোগিতা আনুষ্ঠানিকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত এসেছে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বিমান হামলার প্রেক্ষাপটে, যা ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোর ওপর চালানো হয়েছিল।

বুধবার (২ জুলাই) ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ঘোষণা দেয়, মাসুদ পেজেশকিয়ান আইএইএ’র সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত সংক্রান্ত আইনে স্বাক্ষর করেছেন। এক সপ্তাহ আগে ইরানের পার্লামেন্টে আইনটি পাশ হয় ও এতে বলা হয়, ইরানের শীর্ষ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন ছাড়া আইএইএ’র কোনো পরিদর্শক এখন থেকে ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোতে প্রবেশ করতে পারবেন না।

ইরানের এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় আইএইএ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আমরা বিষয়টি জানতে পেরেছি। ইরানের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক তথ্যের জন্য অপেক্ষা করছি।

আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রোসির প্রতি ইরানের ক্ষোভ বহুদিনের। ইরানি কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, গত ১৩ জুন ইসরায়েল যে আকস্মিকভাবে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালায় ও এরপর যুক্তরাষ্ট্র যে একাধিক স্থানে বোমাবর্ষণ করে, তার কোনো নিন্দা জানাননি গ্রোসি।

এই প্রেক্ষাপটে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি এক্সে (পূর্বে টুইটার) লিখেছেন, গ্রোসি যে বোমাবিদ্ধস্ত স্থাপনাগুলো পরিদর্শনের জন্য এতটা আগ্রহ দেখাচ্ছেন, তা নিছক নিরাপত্তার প্রশ্ন নয় বরং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতও হতে পারে। ইরান তার জনগণ, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় যে কোনো পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।

এদিকে, ইরানের রক্ষণশীল দৈনিক ‘কায়হান’ দাবি করেছে, গ্রোসি ইসরায়েলের গুপ্তচর ও তার বিচার হওয়া উচিত। যদিও ইরান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে আইএইএ প্রধান বা সংস্থার পরিদর্শকদের বিরুদ্ধে এমন দাবি ও হুমকির কথা অস্বীকার করেছে।

ইসরায়েল ও কিছু পশ্চিমা দেশ বহুদিন ধরেই দাবি করে আসছে, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে। তবে তেহরান এই অভিযোগ বারবার অস্বীকার করেছে ও বলে আসছে, তাদের কর্মসূচি শুধুমাত্র শান্তিপূর্ণ বেসামরিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত।

নতুন আইন অনুযায়ী আইএইএ’র কার্যক্রম সীমিত করে দিয়ে ইরান মূলত তার পরমাণু সক্ষমতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার কৌশল হিসেবে এই পথ বেছে নিয়েছে। তবে বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, এই পদক্ষেপে আন্তর্জাতিক পরমাণু পর্যবেক্ষণ ও বিশ্বাসযোগ্যতা আরও দুর্বল হয়ে পড়তে পারে।

সূত্র: আল জাজিরা

এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।