বাইডেনের ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বক্তব্যে বিব্রত হোয়াইট হাউজ
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়িয়েছে, যাদের মধ্যে বড় একটি অংশই শিশু। জাতিসংঘসহ বিশ্বের মানবতাবাদী মহলগুলো ইসরায়েলের এই শিশু হত্যাকে ‘নির্মম বর্বরতা’ বলছে। কিন্তু গোটা পৃথিবী একদিকে, আর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আরেক দিকে।
সম্প্রতি ইসরায়েলের বর্বরতা আড়াল করতে বাইডেন তার একাধিক বক্তব্যে বলেছেন, হামাস ইসরায়েলি শিশুদের শিরশ্ছেদ করেছে। অথচ তার নিজ কার্যালয় হোয়াইট হাউজের কর্মকর্তারা বলছেন, এ বিষয়ে তাদের কাছে সুস্পষ্ট কোনো প্রমাণ নেই। একটি ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলেও, নিরপেক্ষভাবে এর সত্যতা যাচাই করা হয়নি।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, যাচাইহীন তথ্যের ভিত্তিতে ‘শিশু হত্যার’ মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছিল। কিন্তু বাইডেন সে কথা শোনেননি। এতে বিব্রত হোয়াইট হাউজের হোয়াইট হাউজের কর্মকর্তারা।
মার্কিন সংবাদমাধ্যশ ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, বাইডেন তার বক্তব্যে বলেই যাচ্ছেন যে, হামাস শিশুদের শিরশ্ছেদ করেছে। অথচ তথ্যটি যাচাইহীন হওয়ায় তাকে এই মন্তব্য করার আগে সীমাজ্ঞানের বিষয়টি মনে রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন হোয়াইট হাউজের উপদেষ্টারা। তবুও মার্কিন প্রেসিডেন্ট একই কথা বলে যাচ্ছেন।
এমন পরিস্থিতিতে বিবৃতি দিয়ে হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে শিশুদের শিরশ্ছেদের যে তথ্য উঠে এসেছে, তা তাদের পক্ষে বা অন্য কোনো নিরপেক্ষ উৎস থেকে যাচাই করা হয়নি। সুতরাং এটা সত্য বলে ধরে নেওয়ার কোনো কারণ নেই।
এদিকে, বাইডেনের বিতর্কিত বক্তব্য ও তার বিপরীতে হোয়াইট হাউজের বিবৃতিকে নজিরবিহীন বৈপরীত্য হিসেবে দেখছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো। আল জাজিরা বলছে, শিশু হত্যা ইস্যুতে বাইডেন দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন বলে মনে হচ্ছে। এমনকি, তিনি গাজায় আসলেই এত শিশু নিহত হয়েছে কি না, তা নিয়েও সন্দেহ করেন। তার মতে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গাজায় নিহত শিশুদের সংখ্যা বাড়িয়ে বলছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। এরপর থেকে গাজায় প্রতিশোধমূলক হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে এ পর্যন্ত ১৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে প্রায় অর্ধেকই শিশু। এই সংঘাতে শুরু থেকেই ইসরায়েলকে অস্ত্র-গোলাবারুদ ও অর্থ দিয়ে সহায়তা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
সূত্র: আল জাজিরা
এসএএইচ