এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসেনি, এভারকেয়ারেই চলবে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন নিতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসেনি। ফলে আপাতত রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালেই চিকিৎসা চলবে বিএনপি চেয়ারপারসনের।
হৃদরোগ, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে টানা ১৭ দিন ধরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন খালেদা জিয়া। কিন্তু এখনো তার শারীরিক অবস্থার তেমন উন্নতি হয়নি। ফলে তাকে লন্ডনে চিকিৎসা নিতে বারবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা আর হয়নি।
সবশেষ মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসার কথা ছিল। কিন্তু সেটি আজও আসেনি। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতি ছাড়া আকাশপথে ফ্লাইটে ওঠানোর সুযোগ নেই। তাই আপাতত তিনি ওই হাসপাতালেই চিকিৎসা নেবেন।
এদিকে খালেদা জিয়া হাসপাতালটিতে ভর্তি হওয়ার পর শুরুতে প্রতিদিন শতশত দলীয় নেতাকর্মী সেখানে ভিড় জমিয়েছেন। এখন দিন যত যাচ্ছে, সেখানে দলীয় লোকজনের উপস্থিত ক্রমেই কমছে।
এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে দলীয় নেতাকর্মীদের ভিড় কমায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন বসুন্ধরার বাসিন্দারা। তারা জানান, এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়া ছাড়াও শতশত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতালের সামনে ভিড় না করাই ভালো। বেশ কিছুদিন ধরে সেখানে লোকজন কমেছে, এটি যেন বহাল থাকে।
তবে খালেদা জিয়াকে দেখতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমান প্রতিদিনই রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে যাওয়া-আসা করছেন। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তিনি হাসপাতালে যান এবং চিকিৎসার তদারকি করেন।
মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের সামনে পুলিশ সদস্যরা দাঁড়িয়ে আছেন। সেখানে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপস্থিত নেই। বেশকিছু পথচারী চলার পথে সেখানে দাঁড়াচ্ছেন, আবার চলেও যাচ্ছেন। তবে আজ খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা কেমন, তা জানা যায়নি। বিএনপির পক্ষ থেকে তা আজ জানানো হবে কি না, তাও বলা হয়নি।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ১৪ নম্বর রোডের বাসিন্দা সেলিম রেজা বলেন, কোনো মানুষ অসুস্থ হলে হাসপাতালের সামনে ভিড় না করে আল্লাহর কাছে দোয়া করা উচিত। অযথা হাসপাতালের সামনে ভিড় করলে অন্য রোগী এবং তাদের স্বজনের সমস্যা হয়। এছাড়া আবাসিক এলাকার বৈশিষ্ট্য নষ্ট হয়। এখন যেমন হাসপাতালের সামনে দলীয় নেতাকর্মীদের ভিড় নেই, তা যেন সবসময় বজায় থাকে।
এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসছে না
৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার জন্য কাতার আমিরের পক্ষ থেকে জার্মানভিত্তিক এয়ারলাইনস এফএআই অ্যাভিয়েশন গ্রুপ একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করা হয়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী এফএআই অ্যাভিয়েশন গত শনিবার ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ ও উড্ডয়নের জন্য কর্তৃপক্ষের অনুমতির জন্য আবেদন করে। সে অনুযায়ী, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টায় বিমানবন্দরে নামার অনুমতি পেয়েছিল। কিন্তু গতকাল সে অনুমতি বাতিলের আবেদন করেছে এয়ারলাইন্সটি।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্র জানায়, গত শনিবার এফএআই অ্যাভিয়েশন গ্রুপ যে আবেদন করেছিল, তাতে মঙ্গলবার ঢাকায় অবতরণ এবং পরদিন বুধবার লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ার সূচি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসকরা এখনো খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থাকে ‘গুরুতর’ হিসেবে বিবেচনা করছেন। তাদের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, আগামী কয়েকটি দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিডনি কার্যক্ষমতায় স্থিতিশীলতা ছাড়া তার সামগ্রিক শারীরিক অবস্থায় স্থায়ী উন্নতি আসা কঠিন। এ কারণে আপাতত বিদেশে চিকিৎসার জন্য নেওয়া যাচ্ছে না।
এমএমএ/ইএ