জেন জির অভিনব কৌশল

গেমিং অ্যাপ ব্যবহার করে যেভাবে প্রধানমন্ত্রী বেছে নিলো নেপালের তরুণরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:৩৯ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নেপালে জেন জি আন্দোলন/ ফাইল ছবি: কাঠমান্ডু পোস্ট

গেমিং অ্যাপ ব্যবহার করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী বেছে নিলো নেপালের তরুণরা। প্রচলিত রাজনৈতিক পদ্ধতির বাইরে গিয়ে তাদের এই অভিনব কৌশল বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, প্রাণঘাতী সহিংসতায় ওলি সরকারের পতনের পর জেন জি আন্দোলনকারীরা এক ভার্চুয়াল ভোটের আয়োজন করে। এর জন্য ব্যবহার করা হয় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গেমিং ও মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম ‘ডিসকর্ড’।

আন্দোলন সংগঠক ‘হামি নেপাল’র উদ্যোগে আয়োজিত এ ভার্চুয়াল আলোচনায় দেশ-বিদেশের ১ লাখ ৬০ হাজারের বেশি সদস্য অংশ নেন। শেষ পর্যন্ত আলোচনায় উপস্থিত ১০ হাজার তরুণ ও প্রবাসী নেপালির ভোটাভুটির মাধ্যমে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে দেশের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়া হয়।

আরও পড়ুন>>

ডিসকর্ড ব্যবহারকারীরা টেক্সট, ভয়েস কল, ভিডিও কল এবং মিডিয়া শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন। এটি সরাসরি বার্তার মাধ্যমে বা সার্ভার নামে পরিচিত কমিউনিটি স্পেসের মধ্যেও যোগাযোগের সুযোগ করে দেয়। চলতি মাসের শুরুতে নেপাল সরকারের নিষিদ্ধ করা প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যে ডিসকর্ডও ছিল।

ডিসকর্ডে হামি নেপালের ‘ইয়ুথ অ্যাগেইনস্ট করাপশন’ নামে একটি চ্যানেল রয়েছে। সেখানে টানা কয়েক ঘণ্টার উত্তপ্ত বিতর্কে সরকারের দুর্নীতি, বেকারত্ব, পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারসহ নানা ইস্যুতে আলোচনা হয়। সেই আলোচনা সরাসরি সম্প্রচার করা হয় ইউটিউবেও।

discordনেপালের পরবর্তী নেতা নির্বাচন নিয়ে ডিসকর্ডে আলোচনার স্ক্রিনশট/ ছবি: আল-জাজিরা

চূড়ান্ত তালিকায় ছিলেন ৫ জন

চূড়ান্ত ভোটের জন্য পাঁচজনের নাম সংক্ষিপ্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল: পূর্বাঞ্চলীয় শহর ধারানের মেয়র ও সমাজকর্মী হারকা সাম্পাং; জাতীয় উদ্ভাবন কেন্দ্র পরিচালনাকারী ও জনপ্রিয় সমাজকর্মী মহাবীর পুন; ২০২২ সালে নেপালি কংগ্রেস নেতা শের বাহাদুর দেউবার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী স্বতন্ত্র রাজনীতিবিদ সাগর ধাকাল; অ্যাডভোকেট রাষ্ট্র বিমোচন টিমালসিনা (তিনি তার ইউটিউব চ্যানেলে র‍্যান্ডম নেপালি নামেও পরিচিত) এবং সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি।

তবে দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতার পক্ষে দৃঢ় ভূমিকার কারণে ভোটাররা কার্কির ওপর আস্থা রাখেন।

প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর কার্কি বলেন, ‘আমরা ছয় মাসের বেশি এখানে থাকবো না। দায়িত্ব শেষ করেই ক্ষমতা হস্তান্তর করবো।’ আগামী ৫ মার্চ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

প্রতিবাদকারীরা জানান, এ ভোট ছিল মূলত প্রচলিত গোপন দরকষাকষি ও দলীয় সমঝোতার বিকল্প এক স্বচ্ছ ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। তাদের মতে, এটি ডিজিটাল গণতন্ত্রের এক অভূতপূর্ব পরীক্ষা, যেখানে ঝুঁকি যেমন আছে, তেমনি নতুন সম্ভাবনাও উন্মুক্ত হয়েছে।

কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।