খুলনায় বাড়ছে বাতাস বাড়ছে আতঙ্ক
![খুলনায় বাড়ছে বাতাস বাড়ছে আতঙ্ক](https://cdn.jagonews24.com/media/imgAllNew/BG/2019April/khulna-pic-20190503130358.jpg)
ভয়াল রূপ নিয়ে ক্রমশ এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ফণী। শুক্রবার মধ্যরাতে ঝড়টির বাংলাদেশে হানা দেয়ার কথা রয়েছে। সাগর থেকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে দেশের উপকূলীয় নিচু এলাকাগুলোতে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা রয়েছে।
শুক্রবার সকাল থেকে খুলনায় রোদ ঝলমলে একটি দিনের সূচনা হলেও দুপুরের দিকে আকাশ মেঘে ছেয়ে যায়। তবে ভ্যাপসা গরম থাকলেও বাতাসের তীব্রতার কারণে স্বস্তি মিলছে। দিনের পরিবেশ দেখে বোঝার উপায় নেই ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ফণী।
খুলনার উপকূলজুড়ে ঘূর্ণিঝড়ের আতঙ্ক থাকলেও স্বাভাবিক জীবনযাত্রা থেমে নেই। তবে খুলনাঞ্চলের নদ-নদীতে বাড়ছে পানির উচ্চতা। সঙ্গে বাড়ছে বতাসের তীব্রতা। এতে অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে গোটা উপকূলজুড়ে।
মোংলা বন্দরের জেটিতে অবস্থানরত বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (নৌ) মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পশুর নদীর পানি প্রায় দুই ফুট বেড়েছে। সমুদ্রের ঢেউয়ের উচ্চতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে নদীতে।
তবে ঘূর্ণিঝড়ে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে খুলনার কয়রা উপজেলার বাগালী ইউনিয়নের হোগলা, কয়রা ইউনিয়নের গোবরা, ঘাটাখালী, হরিণখোলা, উত্তর বেদকাশীর গাজীপাড়া, বিনাপানি, গাব্বুনিয়া, দক্ষিণ বেদকাশির জোড়শিং, চোরামুখা, আংটিহারা, গোলখালী, খাশিটানা, মহেশ্বরীপুরের সরদারঘাট, পাইকগাছা উপজেলার শিবসা পাড়ের গড়ইখালী ইউনিয়নটি গড়ইখালী, দাকোপের বাণিশান্তা, বাজুয়া, কামারখোলা, সুতারখালী, কালাবগী, নলিয়ান, জেলেখালী, জয়নগর, গুনারী, বটিয়াঘাটা উপজেলার শিয়ালীডাঙ্গা এলাকা।
বাগেরহাটের শরণখোলা, মোংলা ও মোড়েলগঞ্জের কয়েকটি স্থানের বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। একইভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) আওতাধীন সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার জেলেখালী, দয়ারঘাট, কেয়ারগাতি, চাকলা, বিছট, কাকবসিয়া, কোলা, হাজারাখালী, ঘোলা ত্রিমোহনী, হিজলিয়া, চন্ডিতলা ও বুধহাটার তেঁতুলতলা, দেবহাটা উপজেলার সুশীলগাতী, চরকোমরপুর, খারাট, টাউনশ্রীপুর ও ভাতশালা এবং শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর, গাবুরা, কাশিমাড়ি, বুড়িগোয়ালিনী, মুন্সিগঞ্জ ও রমজাননগর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি পয়েন্টে বেড়িবাঁধে মারাত্মক ভাঙন দেখা দিয়েছে।
আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকলেও সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে উপকূলের মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়ার প্রস্তুতি চলছে। তবে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত খুলনার কোনো আশ্রয় কেন্দ্রে কেউ যাননি।
নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বে থাকা কয়রা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) জাফর রানা জানান, ঘূর্ণিঝড় ফণীর আতঙ্ক থাকলেও এখনও কেউ আশ্রয় কেন্দ্রে যায়নি। সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিতে ১২৬ সদস্যের ৭টি টিম সক্রিয় রয়েছে।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বলেন, শুক্রবার খুলনার আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকলেও বাতাসের তীব্রতা কিছুটা বেড়েছে। মধ্যরাতে ফণী আঘাত হানবে খুলনায়।
আলমগীর হান্নান/এফএ/এমকেএইচ