ফণীকে ঘিরে দেয়া নিষেধাজ্ঞা অমান্য, যাত্রী নিহত, শিশু নিখোঁজ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মাদারীপুর
প্রকাশিত: ০৮:৩৮ পিএম, ০৩ মে ২০১৯

ঘূর্ণিঝড় ফণীকে ঘিরে দেয়া নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি রুটে স্পিডবোট ও ট্রলার চলাচলের সময় এক যাত্রী নিহত ও ১০ যাত্রী আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আমির হামজা নামে ৬ বছর বয়সী এক শিশু নিখোঁজ রয়েছে। শিশুটি উদ্ধার করতে ঢাকা থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল পদ্মা নদীতে কাজ শুরু করলেও বৈরী আবহাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে। এ দুর্ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে ৯ স্পিডবোট চালককে আটক করেছে পুলিশ।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শিমুলিয়া ঘাট থেকে ২০ জন যাত্রী নিয়ে স্পিডবোটচালক আল আমিন কাঁঠালবাড়ি ঘাটের উদ্দেশে রওনা করে। স্পিডবোটটি কাঁঠালবাড়ি ৪নং ফেরিঘাট এলাকায় পৌঁছামাত্রই বিপরীতমুখী একটি ট্রলারের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে স্পিডবোটটি ডুবে অন্তত ১০ যাত্রী আহত হয়। আহতদের মধ্যে ৩ জনকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে মো. মুরাদ (২৫) নামে একযাত্রী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় আমির হামজা নামে এক শিশু নিখোঁজ হয়। শিশুটির মা, বাবা ও ভাই ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।

নিহত মুরাদ ঢাকার বাড্ডার খিলবাড়ির টেক এলাকার মো. ইসমাইল হোসেনের ছেলে। তার শ্বশুর বাড়ি শিবচরের নিলখী এলকায়।

Madaripur

এদিকে কাঁঠালবাড়ি ঘাট থেকে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচলে কঠোর থাকায় ফেরিগুলোতে ছিল যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। সুযোগ বুঝে ফেরি ভাড়াও বাড়িয়ে নেয়। নিষেধাজ্ঞার মাঝে সারাদিন ও রাতে স্পিডবোট ও ট্রলার চললেও শিমুলিয়ায় বিআইডব্লিউটিএ ও নৌপুলিশের তেমন কোনো ভূমিকা চোখে পড়েনি। তবে শিবচর উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো।

সরেজমিনে বিআইডব্লিউটিএ ও বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে বারটা থেকে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি রুটে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে বিআইডব্লিউটিএ। লঞ্চ চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকলেও শিমুলিয়া পার থেকে গভীর রাত পর্যন্ত স্পিডবোট ও ট্রলার চলাচল করতে দেখা যায়। শুক্রবারও এ ধারা অব্যাহত ছিল।

কাঁঠালবাড়ি ঘাট থেকে স্পিডবোট চলাচল বন্ধ থাকলেও অতিরিক্ত ভাড়ার বিনিময়ে শিমুলিয়া ঘাট থেকে অহরহ চলেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে সকল ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে যাত্রী চাপ আরও বেড়ে যাওয়ার সুযোগ নেয় স্পিডবোট চালকরা। গভীর রাতেও চলছিল স্পিডবোট।

কবির হোসেন নামের এক ট্রলার যাত্রী বলেন, শিমুলিয়া ঘাটে সব অরাজকতা চলছে। আমার কাছ থেকে স্পিডবোটের ভাড়া ২শ টাকা নিয়ে ট্রলারে পদ্মা নদী পার করালো। বিআইডব্লিউটিএ বা নৌপুলিশের কোনো তৎপরতা নেই।

Madaripur

নিহত মুরাদের বাবা ইসমাইল হোসেন মন্ডল জানান, শিমুলিয়া ঘাটে নৌপুলিশ ও বিআইডব্লিউটিএ থাকলেও তাদের কোনো তৎপরতা নেই। তাদের গাফিলতির কারণে আমার ছেলেকে জীবন দিতে হলো।

নিখোঁজ আমির হামজার মামা কামরুল হোসেন বলেন, আমার বোন-জামাই ২ ভাগিনা নিয়ে আমাদের বাড়ি আসছিল। স্পিডবোট ডুবিতে বোন জামাই ও বড় ভাগিনা গুরুতর আহত ছোট ভাগিনা নিখোঁজ রয়েছে।

এ ঘটনায় বিআইডব্লিউটিসির কাঁঠালবাড়ি ঘাটের ম্যানেজার আ. সালাম বলেন, সীমিত আকারে ফেরি চলছে। ফেরিগুলোতে যাত্রীদের প্রাধান্যই বেশি।

শিবচর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ম্যানেজার মো. মর্তুজা ফকির বলেন, নিখোঁজ শিশুটিকে উদ্ধারে ঢাকার ডুবুরি দল চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এ কে এম নাসিরুল হক/এমএএস/এমএস

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।