বিধ্বংসী রূপে ফণী : ভারতে বিমান চলাচল বন্ধের হিড়িক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:৫৮ পিএম, ০২ মে ২০১৯

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী বিধ্বংসী রূপে অগ্রসর হওয়ার কারণে ভারতের অন্তত তিনটি প্রদেশের বিমান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা ও অন্ধ্রপ্রদেশের সব বিমানবন্দর থেকে বিমানের উড্ডয়ন-অবতরণ বাতিল করা হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কলকাতার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোষ বিমানবন্দর থেকে কোনো ধরনের বিমান উড্ডয়ন-অবতরণ করবে না। শুক্রবার সকালের দিকে কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় ফণীর কারণে প্রবল বর্ষণের পাশাপাশি তীব্র বাতাসের সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে, ওড়িশার উপকূলীয় এলাকার কাছাকাছি অবস্থানে ঘূর্ণিঝড় ফণী চলে আসায় প্রদেশের রাজধানী ভূবনেশ্বরের বিমানবন্দর থেকে বিমানের চলাচল ইতোমধ্যে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে প্রবল এই ঘূর্ণিঝড় ওড়িশার পুরী উপকূলের দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমের ৩২০ কিলোমিটার ও অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম থেকে ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম ও পশ্চিমবঙ্গের দীঘার ৬১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে।

আরও পড়ুন : ৪৩ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’

অন্ধ্রপ্রদেশের কাছাকাছি অবস্থানে চলে যাওয়া এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ইতোমধ্যে রাজ্যের বিশাখাপত্তনমে ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে তীব্র বৃষ্টি শুরু হয়েছে। প্রবল বর্ষণের সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া শুরু হয়েছে ওড়িশা প্রদেশেও।

রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার ধারে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও গাছ-পালা উপড়ে পড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে স্থানীয় প্রশাসন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। ফণীর সম্ভাব্য তাণ্ডব মোকাবেলায় দেশটির জাতীয় বিপর্যয় মোকাবেলা বাহিনী (এনডিআরএফ), সেনাবাহিনী, ভারতীয় বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীর সদস্যদের প্রস্তত রাখা হয়েছে।

ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এক সতর্ক বার্তায় বলেছে, যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ফণীর আঘাতের ঘুঁকিতে থাকা অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে বিমানের চলাচল বাতিল করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমগুলো থেকে ইতিবাচক বার্তা পাওয়ার পর আবারো বিমানের চলাচল শুরু হবে।

আরও পড়ুন : তিনগুণ গতি বাড়িয়ে অগ্রসর হচ্ছে ফণী

আবহাওয়া দফতর বলছে, শুক্রবার ওড়িশায় ২০৫ কিলোমিটার গতিতে আঘাত হানতে পারে ফণী। পরে সেখান থেকে গতিপথ বদলে পশ্চিমবঙ্গ হয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ভারতের বেসামিরক বিমান পরিবহন মন্ত্রী সুরেশ প্রভু বলেছেন, সব কর্তৃপক্ষকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে; যাতে তারা ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে সৃষ্ট যেকোনো ধরনের বিপর্যয় মোকাবেলা করতে পারে। সব বিমানসংস্থাকে উদ্দার এবং ত্রাণ তৎপরতায় সহায়তা করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। ভারতে শতাধিক বিমানবন্দর নিয়ন্ত্রণ করে দেশটির বেসামিরক বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষ।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাতে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় সাতটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে ভারতীয় নৌবাহিনী। ফণীর গতিবিধি নজরে রাখতে ও তাণ্ডব পরবর্তী উদ্ধারকাজ চালাতে এসব যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন : ফণীর সম্ভাব্য তাণ্ডব মোকাবেলায় ভারতে যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন

মোতায়েনকৃত সাতটি যুদ্ধজাহাজের মধ্যে ৪টি তামিলনাড়ু উপকূলে রাখা হয়েছে। বাকি তিন যুদ্ধজাহাজ ঝড়ের গতিবেগ নজরে রাখবে।

যুদ্ধজাহাজ আইএনএস দেগায় রয়েছে ৭টি হেলিকপ্টার। যেকোনো পরিস্থিতিতে উড়ে যাবে এই হেলিকপ্টার। এছাড়া আইএনএস দেগায় ডুবুরি, রাবারের নৌকা, মেডিক্যাল টিম রয়েছে। যুদ্ধজাহাজে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ত্রাণ সামগ্রীও।

এসআইএস/পিআর

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।