‘চীনের অনুরোধে ইউক্রেন হামলা পিছিয়ে দেয় রাশিয়া’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:২৯ এএম, ০৪ মার্চ ২০২২

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার বিষয়ে আগে থেকেই জানতেন চীনের শীর্ষ কর্মকর্তারা,পশ্চিমা গোয়েন্দা রিপোর্টে এমনটাই আভাস পাওয়া যায় বলে নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদেনে উঠে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা ও ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস জানালো এ তথ্য।

পশ্চিমা গোয়েন্দাদের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের শীর্ষ কর্মকর্তারা ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুর দিকে, বেইজিং উইন্টার অলিম্পিকস শেষ না হওয়া পর্যন্ত রাশিয়ার শীর্ষ কর্মকর্তাদের অনুরোধ করেছিলেন, ইউক্রেনে হামলা না চালাতে। এর অর্থ দ্বারাই চীন সরকার ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিষয়টি সম্পর্কে আগে থেকেই অবহিত ছিল।

বেইজিং উইন্টার অলিম্পিকস উদ্বোধনের আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে বৈঠক হয়। সে সময় বেইজিং ও মস্কো পাঁচ হাজার শব্দের এক বিবৃতিতে দেশ দুটির অংশীদারিত্বের ‘কোনো সীমারেখা নেই’ বলে উল্লেখ করে। একই সঙ্গে ন্যাটোর সম্প্রসারণের নিন্দা জানিয়ে সত্যিকারের ‘গণতন্ত্রের’ ওপর ভিত্তি করে নতুন বিশ্ব ব্যবস্থায় জোর দেওয়া হয়েছিল।

চীন ও রাশিয়ার কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনার বিষয়টি গোপন ছিল। পশ্চিমা এক গোয়েন্দা সংস্থা এ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করার পর কর্মকর্তারা তা যাচাই করে বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করছেন। পুতিন কখন ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারেন, তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদেশগুলোর সরকারের আলোচনার সময় সে তথ্য সবাইকে পাঠানো হয়। যদিও তথ্য কতটা এবং কিভাবে শেয়ার করা হয়েছিল সেটি স্পষ্ট করে বলা হয়নি।

এই গোয়েন্দা তথ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চীন ও রাশিয়ার মধ্যে ইউক্রেনে হামলার ব্যাপারে যে কথোপকথন হয়, তা যে শি জিনপিং ও পুতিনের মধ্যে হয়েছে তাতে তার স্পষ্ট ইঙ্গিত নেই।

এ গোয়েন্দা তথ্য সস্পর্কে অবগত অন্য কর্মকর্তারাও বিস্তারিত বলতে রাজি নন। সংবেদনশীলতার বিষয়টি বিবেচনায় গোয়েন্দা প্রতিবেদন নিয়ে কথা বলা কর্মকর্তারা তাদের নাম প্রকাশ না করার শর্তও দিয়েছেন।

স্থানীয় সময় বুধবার (২ মার্চ) ইমেইলের মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ওয়াশিংটনে চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র লিউ পেঙ্গিন বলেন, এসব দাবি অনুমান নির্ভর এবং ভিত্তিহীন। তিনি বলেন এটির উদ্দেশ্য হচ্ছে চীনের দিকে দোষ চাপানো।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি বেইজিং অলিম্পিকসের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। পরের সপ্তাহে রাশিয়ার পুতিন সরকার পূর্ব ইউক্রেনকে নিজেদের অংশ বলে সেখানকার দুটি অঞ্চলকে স্বাধীন ঘোষণা করে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া।

আমেরিকান এবং ইউরোপীয়ান কর্মকর্তারা বলছেন যে অলিম্পিক শেষ হওয়ার আগে ইউক্রেনে হামলা শুরু হয়নি। ২০০৮ সালের আগস্টে রাশিয়া যখন জর্জিয়া আক্রমণ করেছিল তখন বেইজিংয়ে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক চলছিল। ওই ঘটনায় মর্মাহত হন চীনা কর্মকর্তারা।

চলতি বছর শীতকালে, রাশিয়া আগ্রাসনের প্রস্তুতির জন্য চীন এবং পূর্বের অন্যান্য সীমান্ত থেকে সামরিক ইউনিট সরিয়ে নেয়। এটিই স্পষ্ট করে যে তাদের মধ্যে আস্থার সম্পর্ক গভীর। চীন ও রাশিয়া বছরের পর বছর ধরে তাদের অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ক জোরদার করে আসছে। শি জিনপিং ও পুতিন বেইজিংয়ে তাদের সর্বশেষ সম্মেলনের আগে জাতীয় নেতা হিসাবে ৩৭ বার দেখাও করেছেন বলে জানা গেছে।

সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস

এসএনআর/এমএস

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।