মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি
দোলনায় দোল খেতে খেতে হারিয়ে গেলো আয়মান
দোলনায় দোল খেতে খেতে হারিয়ে গেলো ছোট্ট আয়মান আয়মান (১০)। উত্তরায় বিমান বিধ্বংসে দগ্ধ হবার চারদিন পর সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমায় সে। তার এ অকাল মৃত্যুতে কেঁদেছে গোটা দেশ।
আয়মান শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার নারায়ণপুর এলাকায় বাপ্পি হাওলাদার ও আয়েশা খানম দম্পতির মেয়ে। বাপ্পি হাওলাদার ব্যবসার সুবাদে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার উত্তরা দিয়াবাড়ি এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। আয়মান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়াশোনা করে।
আয়মানের ছোট মামা মোহাম্মদ শামীম জাগো নিউজকে বলেন, ‘সেদিন ক্লাস শেষ হওয়ার পর ক্যাম্পাসের দোলনায় দোল খাচ্ছিলো আয়মান। এর মধ্যে বিকট শব্দে বিধ্বস্ত হয় একটি বিমান। আয়মান দ্রুত সেই জায়গা থেকে সরে আসার চেষ্টা করলেও বিমানের ফুয়েল এসে তার শরীরে পড়ে। এতে তার পিঠ ও হাত-পা ঝলসে যায়। ওই অবস্থায় আয়মান তার এক শিক্ষিকার কাছে গিয়ে মোবাইলে পরিবারকে জানায়।’

তিনি বলেন, ‘পরে তার বাবা বাপ্পি হাওলাদার তাকে উদ্ধার করে প্রথমে একটি বেসরকারি হাসপাতাল ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করেন। সেখানে চারদিন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখার পর শুক্রবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।’
মোহাম্মদ শামীম বলেন, ‘আয়মানের মৃত্যুর খবর গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। পরে মরদেহ শুক্রবার ঢাকা থেকে নিয়ে ফেরার পর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।’

প্রতিবেশী সিনহা জুয়ালিদ রাফি বলেন, ‘আয়মান যখন বাড়িতে আসতো আমাকে জরিয়ে ধরতো। খুব মিষ্টি করে কথা বলতো। এজন্য সবার আদরের ছিল সে। আজ ওর এভাবে চলে যাওয়া আমরা কেউ মেনে নিতে পারছি না। এভাবে আর কারো মৃত্যু না হয় এটাই আমাদের কামনা।’
এ বিষয়ে ভেদরগঞ্জ সহকারী কমিশনার ভূমি ও ভারপ্রাপ্ত ইউএনও মোহাম্মদ মোজাহেরুল হক বলেন, ‘উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনার বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ঘটনা। আমরা জানতে পেরেছি চিকিৎসাধীন অবস্থায় আয়মান মারা গেছে। উপজেলা প্রশাসন নিহত পরিবারের পাশে থাকবে।’
বিধান মজুমদার অনি/আরএইচ/এএসএম